You are currently viewing খেচর প্রানী কি খচ্চরের মত আচরন করে থাকে

খেচর প্রানী কি খচ্চরের মত আচরন করে থাকে

খেচর প্রানী সাধারণত আকাশে ঊড়ে বেড়ায়। আমরা আকাশে ঊড়া প্রাণী বলতে সুধু পাখিকেই বুঝে  থাকি। মূলত খেচর হল আকাশে উড়তে পারে এমন সব প্রাণীর সাধারন নাম। এসব প্রানী যদি স্বাভাবিক ভাবে আকাশে উড়ে বেড়ায় তাহলে বিষয়টি স্বাভাবিক। কিন্তু প্রাণীগুলো  যদি অদ্ভুত ভাবে উড়ে থাকে তাহলে এমনই কিছু অদ্ভুত প্রানীর নাম নিচে দেওয়া হলঃ

প্রজাপতি মাছঃ

এদের ইংরেজিতে “ফ্রেশ ওয়াটার বাটারফ্লাই ফিশ” বলা হয়। এর আকৃতি এবং পাখনার কারনে এ রকম নামকরন করা হয়েছে। এদের আফ্রিকা অঞ্চলে পাওয়া যায়। এরা পুলে অনেকটা নিশ্চল হয়ে থাকা পছন্দ করে এবং অপেক্ষা করে কখন শিকার তার পাশ দিয়ে  অতিক্রম করবে। তাদের চামড়া সেন্সর হিসাবে কাজ করে। এজন্য তারা পানির নিচে খুব ছোট ছোট ঢেউ এবং ক্ষুদ্র পোকা-মাকড় এর চলাফেরা বুঝতে পারে। এভাবে তারা পিন পয়েন্ট অ্যাকুরেসি বা নিখুঁতভাবে শিকার করে থাকে।

Butterfly Fish
ছবিঃ উড়ন্ত প্রজাপতি মাছ

ড্রাকো লিজার্ডঃ

লিজার্ড বলতে আমরা টিকটিকিকে বুঝে থাকি। ড্রাকো  টিকটিকি শিকারীর হাত থেকে বাঁচতে, খাবার খুজতে গ্লাইডিং ক্ষমতার উপর নির্ভর করে। গ্লাইডিং ক্ষমতার উপর নির্ভর করে তারা তাদের জীবন সঙ্গী নির্বাচন করে থাকে। এরা দ ক্ষিন-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের জঙ্গলে বাস করে। বেশিভাগ সময় তার কীট-পতঙ্গ এবং পিঁপড়া খেয়ে থাকে। তারা তাদের কব্জি ৯০ ডিগ্রী পর্যন্ত প্রশস্ত করতে পারে যা ডানা হিসাবে ব্যবহার করে। পুরুষ টিকটিকিরা  নির্দিষ্ট অঞ্চলে উড়ে বেড়ায় এবং একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতা করতে পছন্দ করে । এভাবে তারা তাদের কৌশল দেখিয়ে থাকে।

ড্রাকো লিজার্ড
ছবিঃ ড্রাকো লিজার্ড

জাপানিজ স্কুইডঃ

জাপানে স্কুইড বলতে ফ্লাইং স্কুইডকে বুঝায়। এরা উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল বিশেষ করে কোরিয়ার চর্তুপাশ জাপান রাশিয়া এবং বেরিং প্রনালীতে বাস করে। স্ত্রী প্রজতি পুরুষ প্রজাতি এর চেয়ে লম্বা। অন্য সব ছদ্মবেশি প্রাণীদের মত এরা পরিবেশ অনুযায়ী নিজেদের শরীরের রং পরিবর্তন করতে পারে। এভাবে তারা শত্রুদের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করে। এরা পানির নিচে দ্রুতগতিতে ( জেট বিমানের মত ) ছুটতে পারে।সামুদ্রিক মাছ সম্পর্কে আরও জানতে ক্লিক করুন

খেচর প্রানী
ছবিঃ জাপানিজ স্কুইড

ওয়ালেস উড়ন্ত ব্যাঙঃ

এরা সাধারনত গাছে বাস করে। মালেশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার ঘন রেইনফরেষ্ট অঞ্চলে  বাস করে। তারা তাদের জীবনের অধিকাংশ সময় গাছে বাস করে। তারা তাদের সঙ্গীর সাথে মিলনের  এবং ডিম পাড়ার  জন্য শুধুমাত্র মাটিতে আসে। মানুষ একে প্যারাসুট ব্যাঙ বলে থাকে। তাদের পায়ের নখগুলো পরস্পরের সাথে জাল দ্বারা যুক্ত। এর সাহায্যে এরা গাছ এবং মাটির মধ্যে গ্লাইডিং করে ১৫ মিটার পর্যন্ত চলাচল করে। এরা বেশিভাগ ক্ষেত্রে পোকা-মাকড় খেয়ে থাকে। গ্লাইডিং করে এরা বেশিভাগ ক্ষেত্রে শিকার ধরে থাকে।

Flying Frog
ছবিঃ উড়ন্ত ব্যাঙ

অ্যাম্বোপটেরিক্স প্রাণীঃ

প্রায় ১৬০ বছর পূর্বে জুর‍্যাসিক পিরিয়ডের সময় অ্যাম্বোপটেরিক্স নামক এক ধরনের প্রাণী দেখা যায়। এরা এক গাছ হতে অন্য গাছে গ্লাইডিং করে  চলাফেরা করত। চায়নাতে সর্বভুক প্রজাতির বাদুড় এর ডানার মত এদের ডানা ছিল যা উড়ার জন্য ব্যবহৃত হয়।

খেচর প্রানী
ছবিঃ আম্বোটেরিক্স

উড়ন্ত কাঠবিড়ালীঃ

পাখি-বাদুড়ের মত প্রায় ৫০ প্রজাতির কাঠবিড়ালী রয়েছে যারা উড়তে পারে। কিন্তু এরা সম্পুর্ন উড়তে পারে না। এরা মূলত গ্লাইডিং করে এক গাছ হতে অন্য গাছে চলাচল করে। এ কাজে সামনের পা এবং পেছনের পায়ের মধ্যের চামড়া প্যারাসুটের মত ব্যবহার হয়। এক গাছ হতে অন্য গাছে লাফিয়ে চলার সময় এরা এদের হাত পা চতুর্দিকে ছড়িয়ে দিয়ে প্যারাসুটের মত আকৃতি লাভ করে।অনেক প্রজাতি গ্লাইড করে ৪৬ মিটার পর্যন্ত যেতে পারে। কাঠবিড়ালি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন

squirrel
ছবিঃ উড়ন্ত কাঠবিড়ালি

উড়ন্ত মাছঃ

পৃথিবীর চতুর্দিকে যে সমস্ত সাগর-মহাসাগর এর পানি উষ্ণ সে সমস্ত এলাকায় ফ্লাইং ফিস দেখা যায়। এ রকম ৭০ প্রজাতির উড়ন্ত মাছ দেখা যায়। এদের শরীর দেখতে টর্পেডোর মত। এমন আকৃতি পানির নিচে দ্রুতগতিতে চলতে সাহায্য করে যা তদের পানির নিচ হতে অতি সহজে পানির উপরে উড়তে সাহায্য করে।কিছু কিছু মাছের পাখনা একটু বড় হয়। এ মাছ উড়ার পূর্বে ৬০ কি.মি/ঘণ্টায় পানির নিচে উড়তে ছুটতে থাকে। এ গতি লেজ নাড়ানোর মাধ্যমে অর্জন করে।

Flying fish
ছবিঃ উড়ন্ত মাছ

কুহুল গেকোঃ

এটা মূলত উড়ন্ত টিকটিকি। এদের দক্ষিন থাইল্যান্ড, মায়ানমার, মালেশিয়া, সিঙ্গাপুর,ইন্দোনেশিয়া ইত্যাদি অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায়। এদের শরীরের উভয় পাশে ফ্ল্যাপস এর মত রয়েছে এবং হাত পায়ের নখ গুলো পরস্পরের সাথে জাল দ্বারা আবদ্ধ। এদের লেজ ফ্ল্যাট প্রকৃতির যা গ্লাইডিং করতে সাহায্য করে। এরা প্রয়োজনে ক্যামোফ্লাজ বা ছদ্মবেশ ধারন করে। যাতে সহজে এদের চেনা যায় না। এরা পাখি না হলেও খেচর প্রানী এর তালিকায় পড়ে।

খেচর প্রানী
ছবিঃ কুহুল গেকো

লেমুর / কলুগোসঃ

এরা ১০০ মিটার বা তার চেয়ে বেশি পরিমান দুরত্বে থাকা বিভিন্ন গাছে  গ্লাইড করতে পারে।এরা প্রাণীজগতের সবচেয়ে দক্ষ গ্লাইডিং স্তন্যপায়ী প্রাণী। এদের দক্ষিন-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায়। সাধারন মানুষ একে লেমুর নামে চিনে। এদের চোখ আকৃতিতে বড় হওয়ায় অনেক দূর পর্যন্ত এরা ষ্পষ্ট দেখতে পারে ; যা তাদের গ্লাইডিং করতে এবং ল্যান্ড করতে সাহায্য করে। যতক্ষণ পর্যন্ত বাচ্চারা গ্লাইডিং করতে না শিখে ততক্ষন পর্যন্ত এরা এদের বাচ্চাকে পেটের উপর থলিতে বহন করে।

খেচর প্রানী
ছবিঃ লেমুর

প্যারাডাইস ট্রি স্নেকঃ

এরাও কাছাকাছি অবস্থিত গাছে গ্লাইডিং করে চলাফেরা করে। গ্লাইডিং করার সময় এদের শরীর  S আকৃতির হয়। এরা এদের শরীর অল্পতেই বাতাসে ঘুরিয়ে নিতে পারে। আবার চাইলে পুর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আসতে পারে। এভাবে তারা তাদের শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখে। তারা তাদের শরীরকে বাতাসের গতির বিপরীতে ২৫ থেকে ৩০ ডিগ্রী পর্যন্ত ঘুরিয়ে নিয়ে এয়ারোডাইনামিক ভাবে ২০ মিটার এর বেশি ভ্রমন করতে পারে।এরা দক্ষিন-পূর্ব এশিয় অঞ্চলে বাস করে এবং লম্বায় ১.৫ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। এরা দিবাচর প্রাণী এবং উজ্জ্বল বর্নের হওয়ায় দিনের বেলা সহজে চিনতে পারা যায়। সাপ সম্পর্কে আরও জানতে ক্লিক করুন

উড়ন্ত সাপ প্রাণী
ছবিঃট্রি স্নেক

এসব ছাড়া আরও খেচর প্রানী সম্পর্কে অদ্ভুত তথ্য জানা থাকলে তা নিচের কমেন্ট বক্সে আমদের সাথে শেয়ার করুন এবং পশু-পাখির সাথেই থাকুন।

Facebook Comments

YappoBD

YappoBD-হলো poshupakhi.com এর একমাত্র স্বত্তাধীকারি। এই ওয়েবসাইটের সকল প্রকার কন্টেন্ট ইয়াপ্পোবিডি কর্তৃপক্ষ দ্বারা লিখিত, পরিমার্জিত এবং এটি ইয়াপ্পোবিডি এর অঙ্গসংস্থান।