লবনাক্ত পানিতে কুমির শক্তিশালী প্রানী হওয়ায় সহজেই এদের সাথে যে কেউ পারে না। বিশেষ করে পানিতে বেশি ভাগ সময় এরা বাস করে কিন্তু মাঝে মাঝে রোদ পোহানের জন্য এরা জলাশয়ের আশেপাশের ডাঙ্গায় থাকে এবং ঘুম পাড়ে। তবে কুমিরের দাঁত যেমন শক্ত তেমনি লেজও শক্তিশালী। লেজ শক্তিশালী হওয়ার কারনে এরা লেজ দিয়ে আঘাত করে থাকে। কুমিরের মাথা হতে লেজের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত মেরুদন্ড থাকে। লেজের আঘাতে যে কোন ব্যাক্তির মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তবে এদের এই বিশাল আকৃতির শরীরের জন্য অনেক বেশি পরিমানে খাবারের দরকার পড়ে। এই কারনে এরা যখন শিকার ধরে তখন বড় শিকারের পিছনেই ধাওয়া করে পানির মধ্যে। পানির মধ্যে শিকার ধাওয়া করা বলতে শিকারের নিকট সাঁতার কাটাকে বুঝায়। কিন্তু আপনি কি জানের কুমির মানুষের মত কাঁদতে পারে?
পৃথিবীর সব মহাদেশের সরিসৃপদের মধ্যে কুমির উল্লেখযোগ্যা প্রানী। তবে শুধুমাত্র ইউরোপ মহাদেশের এদের দেখা মিলবে না। পানির উপর ডিপেন্ড করে কুমিরও দুই ধরনের হয়ে থাকে।যথা লোনা পানির কুমির এবং মিঠা পানির কুমির। কুমিরদের সম্পর্কে নতুন কিছু ফ্যাক্ট আছে যা আমাদের জানার পরিধির বাহিরে ছিল। কিন্তু আজকে তা আমরা জানার চেষ্টা করব। তবে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আকৃতির কুমির ১০০০ থেকে ১২০০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।
অজানা কিছু ফ্যাক্টঃ
- কুমির এর শিকারের তালিকায় মাংশাসী প্রানী শীর্ষে থাকে। এবং এরা এদের প্রাথমিক খাদ্য তালিকার অন্তর্ভুক্ত। এরা পানির মধ্যে শিকার দেখলে নীরবে চলাচল করে থাকে করে যাতে শিকার বুঝতে না পারে। এভাবে শিকারের নিকট গিয়ে এরা শিকার ধরে থাকে।
- এরা নিজেদের ক্যানিবিলাইজ করে থাকে। অর্থাৎ এদের মধ্যে বড় প্রজাতিরা ছোট ছোট বাচ্চা কুমিরদের খেয়ে ফেলে। এই বিষয়টি অনেকের কাছে অদ্ভুত লাগলেও বিষয়টি সত্য।
- এদের ঘ্রান শক্তি অনেক বেশী এবং এই বিশেষ বৈশিষ্ট্য তাদের যে কোন ভাল প্রজাতির শিকার ধরতে পছন্দ করে থাকে।
- এরা পানির মধ্যে গুপ্ত ঘাতকের মত আক্রমন করে থাকে এবং পানিতে অবস্থিত বড় বড় প্রজাতির প্রানী যেমন বিগ ক্যাটস অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রানীদের শিকারের জন্য ফাঁদে ফেলে থাকে। এমনকি তারা হাঙ্গর শিকার করে থাকে এবং ইউটিউবে কুমির এবং হাঙ্গর এর লড়াই এর অনেক ভিডিও ও আছে।
- এরা নিজেদের এমন ভাবে শিকারের উপর আক্রমন করে থাকে যেন শিকার এর মৃত্যু অনেকটা নিশ্চিত করে থাকে। এই নিশ্চয়তা হয় শুধুমাত্র এদের দীর্ঘ আকারের চোয়ালের কারনে হয়ে থাকে। এদের দাঁত এত বেশি শক্তিশালী যে এরা সবকিছুই ভাঙতে পারে।
- পানির মধ্যেই ঘুমিয়ে থাকে এবং ঘুমানোর ক্ষেত্রে একটি মাত্র চোখ খুলে থাকে। তবে এরা প্রায়ই এমন করে না। বেশীভাগ সময়ই দুটি চোখ বন্ধ করে থাকে।
- বড় বড় প্রজাতির কুমির একবারে বেশি খাবার খেয়ে থাকে এবং একই সাথে এরা না খেয়ে এক বছর পর্যন্ত চলাফেরা করতে পারে। এতে করে এরা অনায়সে ভালভাবে চলতে পারে।
- এরা পানির মধ্যে যোগাযোগের জন্য ভোকাল কর্ড বা শব্দ তরঙ্গ ব্যাবহার করে থাকে। এতে করে এরা নিজেদের মধ্যে পানিতে শব্দ তরঙ্গের উৎপন্ন করার মাধ্যমে কমিউনিকেশন করে থাকে। এই কারনে ছোট প্রজাতির কুমির গ্রান্টিং এর মত শব্দ করে এবং বড় বড় প্রজাতির কুমির গর্জন করে থাকে।
মন্তব্যঃ
পরিশেষে, লোনা পানির কুমির কিংবা মিঠা পানির কুমির সম্পর্কে বাচ্চা থেকে শুরু করে বড়দেরও আগ্রহ বেশি। তবে কুমিরের বাচ্চা বড় কুমিরদের চেয়ে আকর্ষনীয় হয়ে থাকে অনেকের কাছে। আজকাল কুমির বানিজ্যিক ভাবে চাষ করা বা পালন করা হয় একই সাথে এদের প্রাকৃতিক পরিবেশে বড় করার সুযোগ দেওয়া হয়। তবে এটি সবচেয়ে বেশী সহজভাবে করা যায় আমেরিকাতে। ডিসকভারি চ্যানেল এবং animal planet এ এদের নিয়ে অনেক ডকুমেন্টরি দেখা যায়। লেখাটি পড়ে কেমন লাগল তা কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে জানিয়ে লেখাটি আপনি আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করবেন। ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।