পাখিরা মুক্ত আকাশে উড়ে বেড়াতে পছন্দ করে। পাখিদের বাসস্থান হিসেবে উপযুক্ত জায়গা হচ্ছে গাছ-পালা। যে কোন পাখি সবধরনের গাছে বসবাস করে না। পাখিদের মধ্যে সুন্দর পাখি আছে যা মানুষ পছন্দ করে এবং কিছু পাখি মানুষের অপছন্দনীয়। পাখিরা যেসব গাছে বাস করে সেসব জায়গায় পাখির ব্যবহার করার মত বস্তু থাকে। এখন পাখিদের বাসা তৈরি করার বিশেষ পদ্ধতি আছে। বাবুই পাখিকে এই কারনে শিল্পের কারিগর বলা হয়। বাবুই পাখি তাল গাছ এ বাসা বানায়।
প্রজাতি ভেদে পাখিদের বাসা তৈরির ভিন্নতা থাকে। তবে অন্য পাখিদের চেয়ে বাবুই পাখি যেমন নিখুতভাবে বাড়ী তৈরি করে তা সহজে অন্য পাখি তৈরি করতে পারে না। বাবুই পাখির বাসা ঝুলন্ত প্রকৃতির হয়ে থাকে এবং বাতাসে দুলতে থাকে। তবে কোকিল পাখি নিজের বাসা তৈরি করে না। বরং কোকিল কাকের বাসায় ডিম পাড়ে। কোকিল পাখি এর কন্ঠ অনেক সুমধুর হওয়ার কারনে এই পাখি সর্বদাই গান গায়।
আপনি জেনে অবাক হবেন যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বে পাখিরা বুঝতে পারে। এই কারনে খারাপ আবহওয়া কিংবা প্রতিকূল পরিবেশের পূর্বে পাখিদের ঘরে ফিরতে দেখা যায়। অন্য প্রানী রাতের বেলা চলাফেরা করে। রাতের বেলা চলাফেরা করা প্রানীদের নিশাচর প্রানী বলা হয়। নিশাচর প্রানী আছে কিন্তু নিশাচর পাখি খুব বেশী দেখতে পাওয়া যায় না। তবে প্যাঁচা কে নিশাচর পাখি হিসেবে ধরা যায়। কারন এরা রাতের বেলায় জেগে থাকে। কিন্তু বেশীভাগ পাখিই সকাল বেলা খাবারের সন্ধানে বাড়ি থেকে বের হয় এবং সন্ধ্যা বেলায় বাড়িতে ফিরে আসে।
পাখিরা কেন গাছের প্রতি আকৃষ্ট হয়ঃ
সুন্দর পাখি এর খাদ্যঃ
গাছ পাখিদের সর্বপ্রথম কাছে খাদ্যের প্রধান উৎস। পাখিরা গাছের ফল-মূল সহজেই পেয়ে থাকে। এই জন্য দেখা যায় ফল-মূলের গাছ গুলোতে পাখির বেশি আবির্ভাব দেখতে পাওয়া যায়। যে সমস্ত ফল সুমিষ্ট হয় সেসব গাছে পাখিরা বেশী আনাগোনা করে। ভিন্ন ধরনের পাখি ভিন্ন ভিন্ন ধরনের খাবার বা ফলমূল খেয়ে থাকে। পাখিরা ফুলের পরাগায়নে সাহায্য করে। পরাগায়নের মাধ্যমে ফুল ফলে পরিনত হয়। ফল গুলোতে প্রচুর পরিমানে সুগার পাওয়া যায় এবং খাদ্যের বিরাট উৎস হিসেবে কাজ করে। এই পাখির পাশাপাশি মানুষও ফলমুল খেয়ে থাকে। আপেল, কমলা, চেরি সহ বিভিন্ন সুমিষ্ট জাতীয় ফলে প্রচুর পরিমানে সুগার পাওয়া যায়।
আবাসস্থলঃ
গাছ পাখিদের জন্য একমাত্র আবাসস্থল। পাখিরা মানুষের বাসা বাড়ীতে বাস করতে পারে না। মানুষের বসত বাড়িতে বাস করতে গেলে বেশী ভাগ মানুষ তাড়িয়ে দেয়। এজন্য পাখিরা গাছের মগডালে অথবা পরিত্যাক্ত বাড়িতে বাসা বানায় যেখানে সাধারন মানুষ সহজে যাতায়াত করে না। তবে পাখির ধরনের এবং প্রজাতির উপর ভিত্তি করে এদের তৈরি বাড়ির ভিন্নতা তৈরি হয়। যেমন বাবুই পাখি ঝুলন্ত বাসা বানায় যা বাতাসে দুলতে থাকে। শকুনের বাসা অনেক বড় আকারের এবং গোল আকৃতির। পাখির সাইজের উপর ভিত্তি করে তারা তাদের দরকার অনুযায়ী পাখির বাসা বানায়ে থাকে। পাখিদের উড়ন্ত অবস্থায়ও যেমন সুন্দর দেখায় তেমনি গাছের ডালেও সুন্দর পাখি এর দেখা মিলে।
পোকা-মাকড়ঃ
এমন অনেক ধরনের পাখি আছে যারা পাখিদের ফিডার দেখে আকৃষ্ট হয় না। তারা প্রাথমিক ভাবে পোকা-মাকড় খাওয়ার জন্য এসে থাকে। পোকা-মাকড় পছন্দ করে এমন সব পাখিরা আপনার বাড়ীর উঠানেও এসে থাকে। আপনি যদি পাখিকে আপনার উঠানে নিয়ে আসতে চান তাহলে উঠানে এমন কিছু গাছ লাগিয়ে দেন যেসব গাছে পোকা-মাকড় আকৃষ্ট হয়। পোকামাকড় পছন্দ করে এমন কিছু পাখিদে নাম হলঃ ভিরিওস, ফ্ল্যাইক্যাচার, কিংবার্ডস,ব্লুবার্ড সহ ইত্যাদি। পাখিদের গাছে আসতে পোকা মাকড় ও উপকৃত হয়ে থাকে। কিছু কিছু পাখি ফলের বীজ খেয়ে থাকে, সেই সাথে পোকা খেয়ে থাকে। শুয়োপোকা পাখির অন্যতম প্রধান খাবার। কাঠ ঠোকরা পাখি ও পোকা মাকড় খেয়ে থাকে।
ফলের বীজঃ
পাখি ফল-মূল কিংবা বীজ খাওয়ার জন্য সর্বদাই খাবারের খোঁজে বের হয়। একটু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে ফল দেওয়া গাছের নিচে অনেকগুলো বীজ দেখতে পাওয়া যায়। এগুলো বেশি ভাগ থাকে পাখির খাওয়া বীজ। বীজ থেকে পরবর্তীতে চারা গাছ বের হয়। এভাবে গাছের সংখ্যা যেমন বৃদ্ধি পায় তেমনিভাবে বনাঞ্চল বৃদ্ধি পায়। মানুষ যত্ন করে গাছ লাগায় এবং হওয়ার সম্ভবনা মধ্যে থাকতে হয়। কিন্তু যে সমস্ত গাছ এমনি এমনি হয় সেসব গাছের পাখিদের ফেলে দেওয়া বীয থেকে হয়। পাখিরা প্রায়ই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বীজ নিয়ে উড়ে যায়। মাঝে মধ্যে মুখ থেকে পড়ে যায়। এভাবে এক প্রজাতির গাছ অন্য জায়গায় দেখা যায়। যেসব পাখি দানাদার খাদ্য বা ফল সহ ফলের বীজ খায় সেগুলো হলঃ চড়ুই পাখি , ফিঞ্চ পাখি , সিস্কিন পাখি, ঘুঘু পাখি।
পরিশেষে, সুন্দর পাখি গুলোর গাছের প্রতি আকর্ষনের মূল কারন মূলত এগুলোই। এগুলো পাখির মৌলিক চাহিদার মধ্যে পড়ে। মানুষ এবং প্রানীদের মধ্যে একটি বিষয় কমন; তা হল যেখানে সুপেয় খাবার পানি এবং খাদ্যের উৎস পাওয়া যায় সেখানেই বসতি বা কলোনি গড়ে উঠে। পাখিদের ক্ষেত্রেও এমন দেখা যায়। বনে জঙ্গলে কিংবা আমাদের আশেপাশে যেসব গাছের পাশে পুকুর কিংবা জলাশয় আছে সেসব গাছে পাখি বাসা এবং পাখির আনাগোনা বৃদ্ধি পেতেই থাকে। সুমিষ্ট ফল দেয় যেসব গাছ সেখানে পাখিদের আনাগোনা বেশি দেখতে পাওয়া যায়। মাছরাঙা এমন এক ধরনের সুন্দর পাখি যেটি সর্বদাই পুকুরের উপর ঘুরে বেড়ায়। লেখাটি আপনি আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করবেন। ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন।