আমরা অনেক পাখিই দেখে থাকি। মানুষ রাতের বেলায় ঘুমায় এবং দিনের বেলা কাজকর্ম করে। কিছু কিছু পাখি রাতের বেলায় উড়ে বেড়ায়। তবে বেশি ভাগ পাখিই দিনের বেলায় উড়ে বেড়ায়। তবে নিশাচর পাখিরা বেশিভাগ ছদ্মবেশে ঘুরাফেরা করে। এ কারনে এদের রাতের আঁধারে মানুষ সহজে দেখতে পায় না। কিছুকিছু নিশাচর পাখি রাতে গান গায়। এমনই সব পাখি নিয়ে নিচে বিস্তারিত দেওয়া হলঃ
নিশাচর পাখিঃ
এদের বার্ন আউল বলে ডাকা হয়। যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় সবচেয়ে বেশি দূরত্ব অতিক্রমকারী পেঁচা এটি। এদের কানে শোনার ক্ষমতা বেশি। এদের কানের মেকানিজম অনেকটা মানুষের মত।ঘ্রান শক্তিকে কাজে লাগিয়ে এরা উড়ে গিয়ে সেইদিকে আক্রমণ করে থাকে। এভাবে তারা শিকারের জন্য ফাঁদ তৈরি করে এবং শিকার করে থাকে।

ছোট পেঙ্গুইনঃ
এরা সবচেয়ে ছোট প্রজাতির পেঙ্গুইনদের মধ্যে। এরা আকৃতিতে ছোট এবং লম্বায় ৩৩ সে মি পর্যন্ত হয়ে থাকে।এদের অনেকে পেঙ্গুইনদের পরী বলে থাকে। এদের অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের এলাকায় পাওয়া যায়।
পেঙ্গুইন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন

নাইট হেরনঃ
এদের পা এবং ঘাড় আকারে ছোট এবং ধুসর রঙের পাখি। অনেকটা দিনের বেলা যেমন হেরন পাখি উড়ে রাতেও একই জাতের অন্য প্রজাতি উড়ে বেড়ায়। এদের “নাইট র্যাভেন” বলা হয়। নিজেদের শিকারকে ফাদে ফেলতে এরা দক্ষ। এরা ভোরের দিকে শিকার করে এবং সারাদিন আরাম করে। নিশাচর পাখির মধ্যে এরা সবচেয়ে সুন্দর।

নাইটজারঃ
এরা দিনে বেশিভাগ সময় বসে থাকে এবং রাতে ছদ্মবেশের জন্য সহজে এদের চোখে পড়ে না। সন্ধ্যের দিকে এরা নিজেদের ঘর থেকে বের হয়। এরা খাবার সংগ্রহ করার জন্য ম্থ এবং পোকামাকড় সন্ধান করে। এরা উড়তে পারে। তবে এরা ছাগলের দুধ চুরি করতে পারদর্শী।

স্টোন কার্লঃ
এদের শরীর অনেকটা মোটা আকৃতির এবং রাতের বেলা এরা খাবারের খোঁজে বের হয়। এদের চোখ অনেকটা সরিসৃপদের মত কাজ করে । তাই এদের রাতের বেলা খাবার খুঁজতে সমস্যা হয় না। এরা যুক্তরাজ্যের মার্চের দিকে আসে এবং অক্টোবরের দিকে চলে যায়। এরা অতিথি পাখি হিসাবে বেশি পরিচিত।

কাকাপোঃ
নিউজিল্যান্ডের শেষ প্রান্তের দিকে এদের পাওয়া যায়। তবে এদের পাখি হিসাবে চিনলেও এরা উড়তে পারেনা। বরং এরা ভুমিতে বাস করে এবং প্রজনন করে থাকে। এরা জঙ্গলে গাছের নিচে এদের ঘর বানায় এবং রাতে খাবারের খোঁজে বের হয়। এরা ফল,ফলের বীজ, চারা গাছ, গাছের নরম কাঠও খেয়ে থাকে। নিশাচর পাখিহিসাবে এরা পেঁচার মতই ভয়ংকর।

কাঠঠোকরাঃ
ঘন জঙ্গলে এদের গাছের পাতার মাঝে এদের খুঁজে পাওয়া যায়। এদের ঠোঁট অন্য পাখির চেয়ে শক্ত এবং অনেক লম্বা।এদের গায়ের রঙের জন্য এদের ছদ্মবেশ ধারন করতে সুবিধা হয়। বেশিভাগ ক্ষেত্রে এরা ভোরবেলা এবং সন্ধ্যাবেলায় খাবারের খোঁজে বের হয়। এরা পোকা, শামুক, ক্যাটারপিলার এবং মাকড়সা খেয়ে থাকে।

ফ্রগমাউথঃ
এদের অস্ট্রেলিয়ায় আশেপাশের অঞ্চলে এদের পাওয়া যায়। এদের দেখে অনেকটা পেঁচার মত মনে হয়। এমনকি পেঁচার মত বৈশিষ্ট্যা থাকায় মানুষ এদের চিনতে ভুল করে। এরা দিনের বেলায় খাবারের খোঁজে বের হয়। এরা দিনের বেলা মুখ হা করে গাছের ডালে বসে থাকে। ভুল করে পোকা মুখের ভিতর ঢুকে গেলে এরা সুন্দর করে মুখ বন্ধ করে খাবার খেয়ে নেয়। এরা শামুক, পোকামাকড় সহ অন্যান্য কিছুও খেয়ে থাকে।

নাইটেঙ্গেলঃ
এরা রাতে গান গাওয়ার জন্য বিখ্যাত। এরা সব জায়গায় দেখতে পাওয়া যায় রাতের বেলায়। মানুষ সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে। পুরুষ নাইটেঙ্গেল রাতের বেলা সিঙ্গেল থেকে মিঙ্গেল হওয়ার জন্য প্রতি রাতে জোরে জোরে গান গায়।এতে করে তারা তাদের জীবনসঙ্গী খুঁজে পায়।নিশাচর পাখিরা রাতকে উপভোগ্য করে তোলে।

কর্নক্রেকঃ
এরা শুষ্ক জায়গায় বাস করে এবং লুকিয়ে থাকতে পছন্দ করে। এজন্য এদের রহস্যময় পাখি বলা হয়ে থাকে। এরা বিভিন্ন শস্যক্ষেতের মাঝে বাস করে এবং রাতে খাবারের সন্ধানে বের হয়। রাতের বেলায় এরা খুব জোরে জোরে ডাকে। এতে করে আশেপাশে থাকা স্থানীয় লোকজন বিরক্ত হয় মাঝে মাঝে।

পরিশেষে, এমন অনেক প্রজাতির নিশাচর পাখি আছে যারা রাতে সক্রিয় হয়। অঞ্চলভেদে এরা বিভিন্ন প্রজাতির হয়। এমন সব পাখিদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের সাথেই থাকুন এবং আপনাদের মতামত সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আমাদের কাছে তুলে ধরুন।