কুকুরকে আমরা চিনি না অথবা পছন্দ করি না এমন লোক খুঁজে পাওয়া মুশকিল। কুকুর পোষা প্রানীদের তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করে। জেনে অবাক হবেন যে এরা নেকড়ে হতে এদের উৎপত্তি। প্রায় ১৫০০০ হাজার বছর পূর্বে শিকারীদের নিকট নেকড়ে পোষ মেনেছিল। লয়ালিটি ( Loyality ) এর দিক থেকে কুকুরের সঙ্গে অন্য প্রানীর কখনও তুলনা হয় না। তখন থেকে বর্তমান পর্যন্ত কুকুর পোষা প্রানী হিসাবে মানুষ পালন করে থাকে। সর্বাধিক জনপ্রিয় ১০ প্রজাতির কুকুরের তালিকা নিচে দেওয়া হলঃ
ল্যাব্রাডর কুকুরঃ
বিগত ৩০ বছর ধরে এ প্রজাতির কুকুর মানুষের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করছে। এ প্রজাতির কুকুর মানুষের কাছে সবচেয়ে পছন্দীয় থাকার জন্য এরা সবধরনের কাজ করে থাকে। এতে করে তারা তাদের মালিকের প্রতি সবচেয়ে অনুগত থাকে। এ ধরনের কুকুরকে অলরাউন্ডার বলা চলে। কেননা এরা একাধারে শিকার, অভিব্যাক্তি প্রকাশ, ট্রাকিং করে থাকে এবং অনুগত।
জার্মান শেপার্ডঃ
এ প্রজাতির কুকুর যে কারও পছন্দের। কারন এরা দুরে কোথাও ভ্রমণের সময় বিশ্বস্ত সঙ্গী হিসাবে নিজেদের অনেকবার প্রমান করেছে। এজন্য এরা পুলিশ এবং মিলিটারীর বিশ্বস্ত সঙ্গী হয়। এদের সার্ভিস কুকুরও বলা হয়। কারন এরা নির্দিষ্ট কাজের জন্য সঠিকভাবে সার্ভিস দেয়। তবে এরা তাদের আসল মালিকের প্রতি অনেক বিশ্বস্ত থাকে।
গোল্ডেন কুকুরঃ
এরা সবচেয়ে বুদ্ধিমান কুকুরদের মধ্যে একটি। অন্য প্রজাতির কুকুরের চেয়ে এরা মানুষের সাথে বেশি মিশুক প্রকৃতির। বিভিন্ন সিনেমাতে অনেক সময় কুকুর ব্যবহার করা হয়। স্টার গ্রুপ সহ অন্য প্রোডাকশনের ছবিতে এ প্রজাতির কুকুর ব্যবহার করা হয়। স্টার গ্রুপের “এয়ার বাড” “ফুল হাউস” “হোমওয়ার্ড বাউন্ড” ইত্যাদি সিনেমাতে অলরেডি এ প্রজাতির কুকুর অভিনয় করে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। গৃহপালিত প্রাণী গিনিপিগ সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন
ফ্রেঞ্চ বুলডগঃ
ফরাসিদের বড় ব্যাক্তিত্ব রয়েছে। এ প্রজাতির কুকুরের ক্ষেত্রে কথাটি অনেক গুরুত্বপূর্ন। তবে এরা একটু অলস প্রকৃতির এজন্য এদের সামান্য এক্সারসাইজের প্রায়োজন হয়। তবে পরিবারের সাথে পোষা প্রানী হিসাবে এদের দারুন মানায়। কারন এদের আকার-আকৃতি সহ আরও অনেক দিক থেকে মানুষের কাছে পোষা প্রাণী হিসাবে অনেক প্রাধান্য পায়। মানুষের নিকট জনপ্রিয়তার জন্য এদের দাম একটু বেশি।
বুলডগঃ
এ প্রজাতির কুকুর আমেরিকা, হাঙ্গেরি এবং যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। এদের দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি মানুষের পছন্দ তালিকায় অনেক উপরে রয়েছে। এদের উৎপত্তি ত্রয়োবিংশ শতাব্দীতে । এদের অনেক ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে ট্রেনিং দেওয়া হয়।
বীগলস কুকুরঃ
এ প্রজাতির কুকুর দেখতে অনেকটা মাঝারি আকৃতির। এদের ঘ্রানশক্তি অনেক বেশি। এরা দেখতে অনেকটা শিয়ালের শাবকের মত। এদের জীবনকাল ১২-১৫ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে। এ প্রজাতির কুকুরের উৎপত্তি ইংল্যান্ড, গ্রেট ব্রিটেন, যুক্তরাজ্য দেশগুলোতে।
পোডল কুকুরঃ
এ প্রজাতির কুকুরের যতগুলো জাত আছে সবগুলোই এই নামে পরিচিত। এটি একটি জনপ্রিয় জাতের কুকুর। এ জন্য এটি খেলনা অথবা টেডী হিসাবেও ব্যবহার করে থাকে। এদের শরীরের লোম সুন্দর ভাবে কাটা থাকে। এর লোমই এদের বাকি সব কুকুর থেকে আলাদা করে থাকে।
রটওয়েলার কুকুরঃ
এ কুকুরের উৎপত্তিস্থল জার্মানীতে। এদের জীবনকাল ৮-১০ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে। কিন্তু এরা এদের অভিভাবক বা মানুষকে বিশেষভাবে সুরক্ষা করে। তবে এরা তাদের মালিকের প্রতি সবচেয়ে বেশি অনুগত থাকে। যেহেতু এরা মালিকের প্রতি সবচেয়ে বেশি আনুগত্য থাকে সেহেতু এরা সহজেই ফ্যামিলিতে থাকতে পারে। বাহিরের দেশগুলোতে এসব কুকুরের সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের যথেষ্ট সখ্যতা থাকে। এদেরকে পারিবারিক সদস্যের মত আচরন করা হয়।
জার্মান পয়েন্টারঃ
এরা বাকিসব কুকুরের মত শিকার করতে পারে। তবে এদের বিশেষত্ব হল এরা বুদ্ধিমত্তার জন্য বিশেষ ভাবে পরিচিত। এদের ঘ্রানশক্তি প্রখর এবং এরা কোনকিছু অনুসন্ধান করতে পারদর্শী। এদের জীবনকাল ১২-১৪ বছর এবং এদের ট্রেনিং দিয়ে বিশেষ ভাবে উপযুক্ত করা যায়। কুকুরের সঙ্গে অন্য প্রানীর বিশ্বস্ততা তুলনা করা যায় না কারন এরা নিজেদের জীবন দেয় কিন্তু এদের মালিকের সর্বদা অনুগত থাকে।
ইয়োর্কোশায়ার কুকুরঃ
কুকুরদের মধ্যে যদি ফ্যাশন শো করা হয় তাহলে এরা অনায়সে ট্রফি জিতে নিবে। প্রাচীন ভিক্টোরিয়ার আমল থেকে যুগ যুগ ধরে এরা এদের রূপের জন্য প্রশংসিত। এজন্য এরা ফ্যাশান করতে পছন্দ করে। তবে এদের জীবনকাল ১৩-১৬ বছর পর্যন্ত হয় এবং এদের সর্বোচ্চ ওজন ৭ পাউন্ড পর্যন্ত হয়ে থাকে।
জনপ্রিয় ১০ প্রজাতির কুকুর সম্পর্কে জানলাম। এগুলো ছাড়াও আরও অনেক প্রজাতির কুকুর রয়েছে। কুকুরের সঙ্গে অন্য প্রানীর তুলনা করলে আমরা নতুন অনেক তথ্যই জানি। তাই সোশ্যাল মিডিয়া পেজের মাধ্যমে আপনাদের মতামত শেয়ার করুন এবং পশুপাখি সম্পর্কে জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।