সমুদ্রের তলদেশে যথেষ্ট সামুদ্রিক প্রানী ডুবুরিদের চোখে অনেক আকর্ষনীয় লাগে। প্রায় ৮০০ প্রজাতির মাছ আছে যা যে কোন মানুষের কাছে সুন্দর এবং আকর্ষনীয় লাগবে। এসব প্রাজতির মধ্যে স্কুইড, অক্টোপাস, নাটালিয়াস সহ কয়েক প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ রয়েছে। এসব সামুদ্রিক প্রানী সম্পর্কে মানুষ অনেক তথ্যই জানে না। সামুদ্রিক মাছ সামুদ্রিক প্রানী এর অন্তর্ভুক্ত কিন্তু সকল সামুদ্রিক প্রানী সামুদ্রিক মাছ নয়। উভয়ই কি এ সব প্রাণীদের সম্পর্কে বিচিত্র তথ্য নিচে তুলে ধরা হলঃ
পায়জামা স্কুইডঃ
এরা অনেকটা ডাম্পলিং স্কুইড নামেও পরিচিত। এদের ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অস্ট্রেলিয়ার অংশে পাওয়া যায়। এরা আকৃতিতে অনেক ছোট প্রায় পৌনে ৩ ইঞ্চির কাছাকাছি। সমুদ্র উপকূলের কাছাকাছি অগভীর জলরাশিতে এরা বাস করে। তবে মাঝে মাঝে এদেরকে বালির মধ্যেও খুঁজে পাওয়া যায়। সামুদ্রিক প্রাণী স্কুইডের মধ্যে এটি এক প্রকার প্রজাতি।

ক্যাটল ফিশঃ
এদের সম্পূর্ণ নাম অনেক বড় এবং নামের সাথে এদের চেহারারও মিল আছে। তবে এদের ৩ ধরনের প্রজাতি পাওয়া যায়। এদের শরীরে মাংস অনেক বিষাক্ত প্রকৃতির হয়ে থাকে যা যে কোন প্রাণীর মৃত্যুর কারন হতে পারে। এদের সম্পূর্ন শরীর রঙিন হওয়ার জন্য এদের দেখতে অনেক সুন্দর লাগে। এরা সমুদ্রের তলদেশে হাটাহাটি করে। তবে ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এদের বসবাস। এরা ছদ্মবেশে লুকিয়ে থাকে এবং শিকার এর জন্য অপেক্ষা করে। জেলিফিশ সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন

নকল অক্টোপাসঃ
বাকি সব অক্টোপাসের মত মিমিক অক্টোপাস বা নকল অক্টোপাস ছদ্মবেশ ধারন করতে পারদর্শী। এরা কাকড়া হতে ফ্ল্যাট ফিশ, সী স্নেক, লায়নফিশ, জেলিফিশ সহ আরও বিভিন্ন প্রাণীর হুবাহু নকল করে থাকে। এরা শিকার করে এবং শিকার এর জন্য ফাঁদ পেতে রাখে। শিকার করার জন্য এরা অনেক পারদর্শী এবং অনেক আক্রমনাত্মক। এরা যেকোন মাছের বাহিরের রঙের মত নিজেদের পরিবর্তন করে ফেলে। এজন্য এদের বাকি সব মাছ হতে সহজে আলাদা করা যায় না। এজন্য এরা নকল অক্টোপাস নামে বেশি পরিচিত।

পিগলেট স্কুইডঃ
পিগ এর বাংলা অর্থ হচ্ছে শুকর। এ স্কুইডরা দেখতে অনেকটা শুকরের এর মত আকৃতির। এজন্য এদের নাম পিগলেট স্কুইড রাখা হয়। এরা দেখতে অনেক কিউট এবং ইনোসেণ্ট প্রকৃতির। নাইজেরিয়ার পাপুয়া নিউগিনি দ্বিপের উপকুলে এদের দেখতে পাওয়া যায়। তবে এরা সমুদ্রের ১০১৫ মিটার গভীর তলদেশে এদের দেখতে পাওয়া যায়। এরা সমুদ্রের তলদেশে অন্ধকার এলাকায় থাকতে বেশি পছন্দ করে। সামুদ্রিক প্রাণী হলেও দেখতে অনেকটা পিগি ব্যাংকের মত।

পালাও নাটালিয়াসঃ
এদের খোলস এর জন্য দেখতে অনেক সুন্দর লাগে। এদের শুধুমাত্র ৬ ধরনের প্রজাতিই খুঁজে পাওয়া যায়। প্রশান্ত মহাসাগরের শেষ প্রান্তের দিকে পালাও নামের দ্বিপের আশেপাশে এদের দেখতে পাওয়া যায়। এর সব গুলো প্রজাতির মধ্যে শুধুমাত্র একটি প্রজাতির খোলস রয়েছে। এ প্রজাতিটি জীবন্ত জীবাশ্মা হিসেবে মিলিয়ন মিলিয়ন বছর ধরে অপরিবর্তিত রয়েছে। সামুদ্রিক প্রাণী হিসেবে এরা দেখতে অনেক সুন্দর। যেমন সামুদ্রিক মাছের উপকারিতা আসে তেমনি ভাবে কিছু কিছু সামুদ্রিক মাছের অপকারিতা রয়েছে। সমুদ্রে পানিতে যেমন খনিজ লবন আছে তেমনি অনেক মিনারেল ও রয়েছে। সামুদ্রিক এলাকা যেমন কুয়াকাটা, কক্সবাজার ইত্যাদি জায়গায় সমুদ্রের পাশে জেলেদের দ্বারা সামুদ্রিক মাছের শুটকি তৈরি করে থাকে। অনেকের কাছে এই বিষয়টি অত্যান্ত নতুন যে সদ্য ধরা সামুদ্রিক মাছের চেয়ে শুটকি মাছ এর দাম যথেষ্ট বেশী। এই সামুদ্রিক মাছ ও শুটকি মাছ নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা হয়।

ভ্যম্পায়ার স্কুইডঃ
এদের উষ্ণ এবং ট্রপিকাল অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত মহাসাগরীয়অঞ্চলে এদের খুঁজে পাওয়া যায়। উত্তাল গভীর সমুদ্রের তলদেশে এদের খুঁজে পাওয়া যায়। এরা বায়োলুমিনোসেন্স পদ্ধিতে নিজেদের শরীরের অক্সিজেন সাপ্লাই করে শরীরের বিপাক ক্রিয়া সম্পাদন করে থাকে। কেননা সমুদ্রের তলদেশে অক্সিজেনের খুবই অভাব। সামুদ্রিক মাছ হিসেবে এরা অনেকটা ভয়ংকর। সামুদ্রিক প্রানীগুলো অনেক রহস্যজনক।

পরিশেষে সমুদ্রের তলদেশে আলোর এবং অক্সিজেনের অভাব রয়েছে। বাংলাদেশের সামুদ্রিক ছবি সহ মাছের নাম জানার জন্য আমাদের অন্যান্য আর্টিকেল দেখতে পারেন। এছাড়াও সমুদ্রের তলদেশে এমন কিছু বিষয়বস্তু আছে যা বাস্তবে ঘটে কিন্তু এর মূল কারন কখনও জানা যায় না। কিছু ক্ষেত্রে এমন অমীমাংসিত রহস্য উদঘটন করা সম্ভব হয় না। যেমন বারমুডা ট্রাইয়েঙ্গেল এ কেন যে কোন কিছু তলিয়ে যায়। এই ঘটনা অমীমাংসিত। প্রানীজগতে এমন ঘটনা এবং অচেনা প্রানীদের সংখ্যা অগনিত। অগনিত প্রানিদের সম্পর্কে জানতে আমাদের সাথেই থাকুন এবং আপনাদের মন্তব্য আমাদের সাথে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে শেয়ার করুন।