You are currently viewing ডলফিন বা শুশক মাছ এর বিচিত্র বৈশিষ্ট্য জানেন কি আপনি
ছবিঃবাচ্চা ডলফিন এবং তার মা

ডলফিন বা শুশক মাছ এর বিচিত্র বৈশিষ্ট্য জানেন কি আপনি

Dolphin এর বাংলা অর্থ হচ্ছে শুশক মাছ। আমাদের দেশে শুশক মাছ এর দেখা মিলে বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন নদীতে। কিন্তু এমনটা সচরাচর হয় না। বরং ডলফিন সামুদ্রিক প্রানী হওয়াই এদের বঙ্গোপসাগরে দেখতে পাওয়া যায়। বঙ্গোপসাগর এর একটি নির্দিষ্ট জায়গা পর্যন্ত সাধারন মানুষ ট্রাভেল করতে পারে। কিন্তু উত্তাল সমুদ্রের ঢেউ মাঝে মাঝেই প্রতিকূল পরিবেশের সৃষ্টি করে। এই ঢেউ প্রায় ক্ষেত্রেই ডিঙ্গি নৌকা বা জাহাজ প্রায় ক্ষেত্রেই ডুবে যেতে পারে। এই কারনে সমুদ্র ভ্রমনের সময় আবহওয়া এর উপর আমাদের নির্ভরশীল থাকতে হয়। তাই সব কিছু মনের মত হয় না।


সামুদ্রিক এলাকাঃ

ডলফিন সমুদ্রের নিরীহ প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম। ডলফিন এর সিষ্টেসিয়ান  দাঁতগুলো সহজেই সবার নিকট পরিচিত। এ পরিচিতির কারন হল তাদের বাঁকানো মুখ, যা তাদের মুখে সর্বদা হাসি প্রকাশ করে থাকে।সমুদ্রে ৩৬ প্রজতির ডলফিন পাওয়া যায়। অধিকাংশ প্রজাতির ডলফিন সামুদ্রিক এবং তারা মাঝ সমুদ্রে অথবা উপকূল বরাবর বেশি পানি বিশিষ্ট এলাকায় পাওয়া যায়। কিছু প্রজাতির ডলফিন আছে যারা দক্ষিন এশিয় অঞ্চলের নদী বা বড় জলপ্রপাতে পাওয়া যায়।

ডলফিন (Dolphin)
ছবিঃ ডলফিন

শুশক মাছের ছবিঃ

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রজাতির ডলফিন এর নাম হল “অর্কা”। এরা ৩০ ফিট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। “মাউই” প্রজাতির ডলফিন পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট ডলফিন। এরা লম্বায় ৫ ফিট পর্যন্ত হয়ে থকে। ডলফিন এর খাদ্য তালিকায় মাছ এবং স্কুইড বিশেষ জায়গা দখল করে আছে। ডলফিনরা তাদের কান দিয়ে প্রতিধ্বনি ব্যবহার করে চলাচল করে এবং শিকার ধরে থাকে।



প্রতিধ্বনির সাহায্যে ডলফিন যেকোন প্রানির স্থান, দিক, আকার, আকৃতি ইত্যাদি নির্দিষ্ট করে বুঝতে পারে। কিছু কিছু ডলফিন আছে  যাদের নাক অনেকটা বোতল আকৃতির হয়ে থাকে। এ প্রজাতির ডলফিন  সেকেন্ডে ১০০০ বার ক্লিক করলে যেমন শব্দ হয় তেমন শব্দ উৎপন্ন করে থাকে।

Bottlenose Dolphin
ছবিঃ বোতলনোজ ডলফিন

শুশক মাছ এর দলঃ

একটি ডলফিনের অধীনে ১২ অথবা তার চেয়ে বেশি সংখ্যক ডলফিন বাস করে। তারা খুব বেশি সামজিক প্রানী যে তারা চি-চি, টিক-টিক শব্দ করে থাকে। আবার মাঝে মাধ্যে তারা বাঁশির মতও শব্দ করে। এগুলা মূলত তাদের ভাষা। মানুষ যেমন সামাজিক ভাবে বস-বাস করে তারাও তেমন ভাবেই বাস করতে স্বাচছন্দ্যবোধ করে। অন্য সব স্তন্যপায়ীদের মত তারা উষ্ণ রক্ত বিশিষ্ট এবং সন্তানদের লালন পালন করে থাকে।



মানুষ স্তন্যপায়ী প্রানির অর্ন্তভুক্ত। এজন্য মানুষ এর সাথে ডলফিন এর অনেক বৈশিষ্ট্য মিল পাওয়া যায়। ডলফিন এর মনে মানুষদের মতই করুনা রয়েছে। তারা দক্ষ চতুর সাঁতারু যা  ঘণ্টায় ১৮ মাইল বা তার বেশি গতিতে সাঁতার কাটতে পারে। অন্যান্য সামুদ্রিক প্রানী দের সম্পর্কে জানতে চান তাহলে ভিজিট করুন

শুশক মাছ
ছবিঃ শুশক মাছ এর দল

শুশক মাছ সম্পর্কে মজাদার কয়েকটি তথ্যঃ

  • এদেরকে পৃথিবীর সর্বত্র পাওয়া যায়। এদের শরীরের তাপমাত্রা ০ ডিগ্রী এর নিচে হতে ৩০ ডিগ্রী পর্যন্ত উঠা-নামা করে থাকে। ডলফিন মাছ আমাদের বঙ্গোপসাগরের সোয়াচ অফ নো গ্রাউন্ডে দেখা মিলে। এমন খবরের প্রতিবেদন টিভি চ্যানেলে প্রকাশ পেয়েছে। বর্তমানে সোয়াচ অফ নো গ্রাউন্ড এর প্রানীরা বর্তমানে গবেষনার বিষয় হয়েছে। 
  • আমাজন নদীতে ফ্রেশ ওয়াটার ডলফিনদের পাওয়া যায়। সেখানে শুধু মাত্র ৪ প্রজাতির ডলফিনই পাওয়া যায়, যা বিশ্বের অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। আমাজন নদী বিশ্বের দ্বিতীয় সবচেয়ে বড় নদীর মধ্যে একটি যেটি দক্ষিন আমেরিকা থেকে আরও তিনটি দেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আটলান্টিক মহাসাগরে গিয়ে পড়েছে। এ নদীর পাশে যে জঙ্গল আছে তা আমাজন জঙ্গল। এটি অনেক প্রাচীন হওয়াই এর ইতিহাসকে আমাজন জঙ্গলের ইতিহাস বলে। আমাজন জঙ্গলের মানুষ কিছুটা সভ্যতা থেকে দূরে থাকে। 



  • বিভিন্ন কারনে পানির নিচে শব্দ দূষন হয়; যা ডলফিনদের জন্য অনেক হুমকিস্বরূপ। এ দূষণ বিভিন্ন দেশের নেভেল এক্সারসাইজ, তেল ও গ্যাস উত্তোলন , পানির নিচে বিভিন্ন ধরনে  কন্সট্রাকশন এর কারনে হয়ে       থাকে।
  • তিমি মাছ এবং ডলফিন মাছ এর সাথে সাদৃশ্য হল উভয়ের স্কিন যথেষ্ট মসৃন। এ জন্য 
  • এরা পানির নিচে বুদবুদ তৈরি করতে পছন্দ করে। শিকার ধরার ক্ষেত্রে এরা “ফিস হ্যাকিং” নামের কৌশল ব্যবহার করে থাকে। বুদবুদ তৈরীর মাধ্যমে  তারা শিকার কে পানির উপরিভাগে নিয়ে যায়।
  •   প্রানিজগতের বাকি সব প্রাণী হতে এরা একক ভাবে বিভিন্ন রকম শব্দ বের করতে পারে।



  •   মানুষদের সাথে অনেকটা মিল থাকায় তাদেরও মানুষের মত বুদ্ধি আছে। এদের এ বৈশিষ্ট্য  বাকি সব প্রাণী হতে আলাদা করেছে।
  • এরা এদের মস্তিষ্কের অর্ধেক ভাগ নিষ্ক্রিয় করতে পারে। এতে করে তারা সারাক্ষন তাদের শিকার এর খোঁজ করতে থাকে। এ বৈশিষ্ট্য অনেকটা হাঙর এর সাথে মিল রয়েছে। তাদের মস্তিষ্ক অর্ধেক ভাগ নিষ্ক্রিয়    থাকলেও চোখ সর্বদা খোলা থাকে। প্রয়োজন শেষ হলে তারা তাদের নিষ্ক্রীয় অংশকে পুনারায় সক্রিয় করে ।



  • বড় বড়শি সহ মাছ ধরার বিভিন্ন রকম যন্ত্রপাতি এদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি স্বরূপ। এক্ষেত্রে মহাসাগর গুলোতে সিজন অনুযায়ী মাছ ধরে থাকে। Sword Fish সহ অন্যান্য আরও মাছ ধরের জন্য বিভিন্ন ধরনের বড়শি কিংবা হুক ব্যবহার করে থাকে। প্রায় ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট মাছ ছাড়ও আরও অন্যান্য মাছ ধরা পড়ে। এমনই হুকের কথা বলা হয়েছে। 

এসব তথ্যের মধ্যে সবচেয়ে আনন্দের বিষয় এরা নিরীহ প্রকৃতির। এরা মানুষের ক্ষতি করে না। বরং বড় বড় সুইমিংপুলে মানুষ এদের সাথে খেলতে পছন্দ করে। যা অনেক আনন্দদায়ক এবং বিনোদন মূলক।

Facebook Comments

YappoBD

YappoBD-হলো poshupakhi.com এর একমাত্র স্বত্তাধীকারি। এই ওয়েবসাইটের সকল প্রকার কন্টেন্ট ইয়াপ্পোবিডি কর্তৃপক্ষ দ্বারা লিখিত, পরিমার্জিত এবং এটি ইয়াপ্পোবিডি এর অঙ্গসংস্থান।