হিংস্র প্রানী হায়েনা আফ্রিকান মাংশাসী প্রজাতির প্রানীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিচিত মুখ।এরা আফ্রিকার উত্তর থেকে দক্ষিন অর্থাৎ সম্পূর্ন আফ্রিকায় এদের প্রভাব বিস্তার করেছে।এছাড়াও শুষ্ক মরুভুমি থেকে সাভানা অঞ্চলেও এদের দেখতে পাওয়া যায়। পৃথিবীতে শক্তিশালী হিংস্র প্রানীদের মধ্যে এরা শীর্ষে অবস্থান করে।দৈহিক আকৃতিতে এরা অনেক বৃহৎ আকারের।এদের মাথা যথেষ্ট বড় এবং চোয়াল খুব শক্তিশালী প্রকৃতির। সাধারনত প্রানীদের চার পা সমান আকৃতির হয়ে থাকে।
কিন্তু হায়েনার সামনের দুই পা পেছেনের দুই পা এর চেয়ে সামান্য লম্বা প্রকৃতির। এ কারনে দৌড়ানোর সময় দীর্ঘ লাফ দিয়ে থাকে। এভাবেই এরা অল্প সময়ে বেশি দুরত্ব অতিক্রম করে।হায়েনাকে আমরা বিভিন্ন ধরনের কার্টুনের মধ্যে ফ্যানি ক্যারেক্টারের মাধ্যমে দেখে থাকি। এরা বিভিন্ন কার্টুনে হাস্যকর কিংবা হিংস্র যে হিসাবেই দেখাক না কেন এদের বাস্তব চরিত্রের এবং বৈশিষ্ট্যের সাথে সম্পূর্ন মিল রয়েছে।এজন্য আজকে আমারা এমন হিংস্র প্রানীটির সম্পর্কে জানব।
সাদৃশ্যতাঃ
এরা দেখতে অনেকটা কুকুরের মতো হলেও, এদের সম্পূর্ণ বৈশিষ্ট্য কুকুরদের থেকে আলাদা।আমাদের দেশে দেশী জাতের বিভিন্ন কুকুর দেখে থাকলেও,হায়না দেখতে প্রকৃত অর্থে বিদেশী উন্নত জাতের কুকুরদের মত দেখায়।জীব বৈচিত্র্যের দিক থেকে এরা বিড়াল,মংগুজ,সাইভেট অন্যান্য প্রানীদের সাথে সম্পৃক্ত।
হিংস্র প্রানীর হাসিঃ
সকল প্রজাতির হায়না হিংস্র প্রানী নয়। বরং এমন কিছু প্রজাতি আছে, যারা হাসতে বেশি পছন্দ করে এবং বিভিন্ন ধরনের আওয়াজ বের করে থাকে।যা অনেক ক্ষেত্রে মানুষের জন্য ভয়ের কারন হয়; বিশেষ করে জঙ্গলে। কিন্তু এরা মাঝে মাঝে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে।এই আওয়াজই আমরা বিভিন্ন ধরনের কার্টুনে শুনে থাকি। মাঝরাতেও এই আওয়াজ মানুষের গাঁয়ে কাঁটা দেয়।
হিংস্র প্রজাতির প্রানী সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন
ডোরাকাটা হায়েনাঃ
এরা অত্যন্ত নীরবে চলাফেরা করে এবং ক্যাকলিং বা প্যাঁক প্যাঁক শব্দ করে। এ ধরনের আওয়াজ শুরুর দিকে ধীরে ধীরে করতে থাকলেও একসময় বড় আকারের গর্জনে রূপান্তরিত হয়। এরা যখন ভয় পায় তখন এদের লেজের দিকের লোমগুলো খাড়া হয়।যা সম্পূর্ণ শরীরের লোম এর সাইজ এর চাইতে
দ্বিগুণ প্রকৃতির।বিপদে পড়লে এদের মধ্যে দুই ধরনের প্রবনতা কাজ করে।শিকারী কে ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দিতে চায় অথবা নিজেরাই কত দ্রুত পালাতে পারে।এই প্রবনতা বিপদে পড়লে সর্বদাই কাজ করে।
অঞ্চলভিত্তিক প্রবণতাঃ
বিভিন্ন ধরনের হায়না আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে বাস করে; এবং এদের মধ্যে সকল ধরনের বৈশিষ্ট্য সবসময় একরকম হয় না।অবশ্যই ভিন্নতা থাকে। ডোরাকাটা হায়েনাগুলো শুষ্ক পাথুরে পাহাড়ের বসবাস করে। বাদামি রঙের হায়েনাগুলো সাব-সাহারান আফ্রিকান অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায় ।এডার-ওলফ প্রজাতির হায়েনা আফ্রিকার দক্ষিন-পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায়। অর্থাৎ হায়েনারা আফ্রিকা অঞ্চলে যুগের পর যুগ ধরে বসবাস করে আসছে।
ঘুমঃ
সাব-সাহারান আফ্রিকান অঞ্চল পৃথিবীর সবচেয়ে উষ্ণতম জায়গাগুলোর মধ্যে অন্যতম। এজন্য এরা নিজেদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখতে বিভিন্ন ধরনের গুহা,ঝোপঝাড়,ঘন-জঙ্গল সহ ছায়াযুক্ত স্থানকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে।প্রকৃতপক্ষে এরা ঝোপ-ঝাড় এবং জঙ্গলের মধ্যে পানির ডোবা থাকলে সেখানে
অবস্থান করতে পছন্দ করে। প্রচন্ড গরম হওয়ায় এরা দিনের বেলায় সচারচর শিকারে বের হয় না।কিন্তু সন্ধ্যাবেলা তাপমাত্রা কমতে থাকলে এরা শিকারে বের হয় এবং রাতে শিকার করে। এজন্য এদের নিশাচর প্রাণী বলা হয়।
পরিশেষে, হিংস্র প্রানী হায়নাদের সম্পর্কে অনেক কিছুই জানা গেল।হায়না সহ আরও অন্যান্য প্রাণী সম্পর্কে বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর তথ্য রয়েছে।এসব তথ্য জানতে আমাদের সাথেই থাকুন এবং আপনাদের কোন ধরনের মন্তব্য থাকলে তা কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে আমাদের সাথে শেয়ার করুন।