সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেষ্ট সুন্দরবন।সুন্দরবনের সীমানা শুধুমাত্র বাংলাদেশ নয় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের মধ্যেও কিছু অংশ রয়েছে।পৃথিবীর ব-দ্বীপ বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের ব-দ্বীপ সুন্দরবন। ম্যানগ্রোভ ফরেষ্ট সুন্দরবন এ বিভিন্ন ধরনের ঠেসমুল দেখতে পাওয়া যায়। যে সব দ্বীপ দেখতে বাঙালি ব্যঞ্জনবর্ণের “ ব ” অক্ষরের মত সে সমস্ত দ্বীপকেই ব-দ্বীপ বলা হয়।এই বনের ৬০ শতাংশ বাংলাদেশের মধ্যে অবস্থিত এবং বাকি অংশটুকু পার্শ্ববর্তী দেশ পর্যন্ত বিস্তৃত।বর্তমানে প্রচুর পরিমান গাছপালা বনভূমি এবং প্রানীদের সমাহার এই সুন্দরবনে।নদীর অববাহিকা শাখা প্রশাখায় বিভক্ত হয়ে চতুর্দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে সুন্দরবনের ভেতরে প্রবেশ করেছে।ফলে নদীর পাড়ে সংলগ্ন গাছ গুলো দেখতে বিচিত্র রকম দেখায় কেননা এদের শিকড় থেকে মাটি সরে যায়।
কিন্তু পাড়ের গাছগুলোর নিচের মাটি সরে গেলেও বিভিন্ন ধরনের বন্যা,ঝড়,জলোচ্ছ্বাস ইত্যাদির সময় সুন্দরবন, বাংলাদেশের ঢাল হিসেবে ব্যবহার হয়।এর ফলে যেকোনো বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে বাংলাদেশে সহজেই রক্ষা পায়।তবে বর্তমানে বনভূমির সংখ্যা দিন দিন কমে যাওয়ায় নির্বিচারে যেমন
গাছপালা কাটা হচ্ছে একই সাথে বন্যপ্রানী অসৎ উদ্দেশ্যে শিকার করা হচ্ছে।ফলশ্রুতিতে সুন্দরবনের জীব বৈচিত্র্য এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য অনেকটাই হুমকির মুখে।সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেষ্ট সুন্দরবন নিজেই যদি এভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হতে থাকে তাহলে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের ঢাল হিসেবে এটি খুব একটি দূর্বল হয়ে পড়বে।
সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেষ্ট সুন্দরবনঃ
যেহেতু সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেষ্ট সুন্দরবন প্রানীদের আঁতুড়ঘর এবং এখানে সকল ধরনের প্রানী রয়েছে ।এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, সিংহ,হরিন,কুমির,বানর,হনুমান, শিম্পাঞ্জি সহ আরও অনেক প্রানী।এছাড়াও এখানে বিভিন্ন ধরনের পাখি দেখতে পাওয়া যায়।সুন্দরবন শুধুমাত্র প্রানীর সমাহার নয়, এখানে বিপুল পরিমান ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে।
উদ্ভিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিচিত হলো “সুন্দরী গাছ”। সুন্দরবনের গাছগুলোর শিকরে ঠেস মূল রয়েছে। আজকে আমরা সুন্দরবনের উল্লেখযোগ্য প্রানীদের সম্পর্কে জানবঃ
সান বার্ডঃ
এই পাখির প্রায় ৯৫ ধরনের প্রজাতি রয়েছে।এদের এদের মধ্যে পুরুষ প্রজাতির পাখি গুলো ৩.৬ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে।আকারে অত্যন্ত ছোট হওয়াই এদের হামিংবার্ডের সাথে তুলনা করা যায়।এদের প্রকৃতপক্ষে আফ্রিকার কিছু অঞ্চলে এবং এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল গুলোতে দেখতে পাওয়া যায়।বাংলাদেশের সুন্দরবনের এদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।অন্যান্য পাখির ঠোঁট সোজা হলেও; এদের ঠোঁট সামান্য বাঁকা।
রয়েল বেঙ্গল টাইগারঃ
এটি আমাদের জাতীয় পশু।বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ চিহ্ন বা প্রতীক হিসেবে এর ব্যবহার হয়।সারাবিশ্বে এই প্রজাতির বাঘের কারনেই সুন্দরবন এবং বাংলাদেশকে আলাদাভাবে মানুষ চেনে। এক কথায় রয়েল বেঙ্গল টাইগার বিশ্ববাসীর নিকট বাংলাদেশকে তুলে ধরে।এজন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের লোগোতে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের ছবি রয়েছে।বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমও সারাবিশ্বে বাংলাদেশকে তুলে ধরে।
এদের সম্পর্কে আরও জানতে ক্লিক করুন
হরিনঃ
অন্যান্য প্রজাতির প্রানীদের চেয়ে হরিনের বিচরন সুন্দরবনের বেশি।চিড়িয়াখানায় হরিন দেখার চেয়ে সুন্দরবনের হরিন দেখা অনেক মনোমুগ্ধকর।ফলশ্রুতিতে এই হরিন মানুষের নিকট আকর্ষনীয় প্রানী হিসেবে বিবেচিত হয়।এরা নিরীহ প্রকৃতির হওয়াতে মানুষ এদের কাছ থেকে দেখতে পারে।অন্যদিকে বাঘ আকর্ষনীয় হলেও, একটু হিংস্র প্রবনতা সম্পন্ন হওয়ায় মানুষ এদের দূর থেকেই দেখে থাকে।
পরিশেষে, সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেষ্ট সুন্দরবনের প্রানীদের সংখ্যা গুনে শেষ করা একটু কঠিন।উল্লেখযোগ্য আরো প্রানীর কথা এক আর্টিকেলের মাধ্যমে উল্লেখ করা যায় না।এ কারনে সুন্দরবন সম্পর্কে এবং সুন্দরবনের আরও প্রানীদের সম্পর্কে জানার জন্য আমাদের সাথেই থাকুন।
লেখাটি পড়ে আপনাদের কেমন লাগলো অথবা পশু-পাখিদের সম্পর্কে যে কোন বিষয়ে আপনাদের মন্তব্য জানাতে কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন।