আকাশে উড়ন্ত পাখি সম্পর্কে আমাদের অনেক কিছুই অজানা;বিশেষ করে সমুদ্রের নীল জলরাশির উপরে।এই সুবিশাল পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠের ৭০ ভাগই জল এবং বাকি ৩০ ভাগ স্থল।জলভূমি বেশি হওয়ার কারনে সমুদ্র অঞ্চলগুলো বিশাল বিস্তৃত প্রকৃতির।এজন্য সারা বিশ্বের সাথে বাণিজ্য জলপথে বেশি হয়।আকাশপথে অনেক সময় দূরত্ব কম মনে হলেও খরচ বেশি পড়ে।তবে আকাশ পথ চেয়ে জলপথে খরচ তুলনামূলকভাবে কম হয়।
সমুদ্রপথ ব্যবসা-বাণিজ্য এবং মানুষের চলাচলের জন্য ব্যবহার করে থাকে।তবে এ ক্ষেত্রে সমুদ্রের বিশাল জলরাশির উপরে আমরা বিভিন্ন ধরনের পাখিদের উড়তে দেখতে পাই।দূরদূরান্ত পর্যন্ত কোন তীর না দেখা গেলেও রং-বেরঙের আকাশে উড়ন্ত পাখিদের উপস্থিতি থেকে দেখা যায়।প্রকৃতপক্ষে এসব পাখি অনেকদূর পর্যন্ত থাকে এবং পরিযায়ীর মত ভ্রমণ করে।আজকে আমরা ঐসব পাখিদের সম্পর্কে জানব।যারা সমুদ্রের বিশাল জলরাশির উপর দীর্ঘ পথ বিনা বিশ্রামে অতিক্রম করে থাকে।চলুন জেনে নেওয়া যাক।
গানেট পাখিঃ
গালফ সাগরের তীরবর্তী উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের উপকূলে এদের দেখতে পাওয়া যায়।এসব পাখিরা কলোনি আকারে একসাথে অনেকগুলো কোন এক নির্দিষ্ট জায়গায় বসবাস করে। সমুদ্রের আশেপাশে যেসব অঞ্চলে পাহাড় রয়েছে সেসব পাহাড়ের উপরে এরা বাসা বানায়।ওই অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে পানির তাপমাত্রা ১০ থেকে ১৫ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত হয়ে থাকে।এসব পাখি ঘন্টায় ১০০ কিলোমিটার গতিতে উপর থেকে নিচের দিকে ডাইভ দিয়ে শিকার ধরে থাকে।
মুরে পাখিঃ
এই প্রজাতির পাখি চক্রাকারে একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের মধ্যে সবসময় করতে থাকে।এছাড়াও এরা নিম্ন তাপমাত্রা বিশিষ্ট আরটিকা অঞ্চলেও দেখতে পাওয়া যায়।এটা নর্থ আটলান্টিক এবং উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে উড়ে বেড়ায়।এসব পাখি তাদের জীবদ্দশার বেশিরভাগ সময় সমুদ্রে উড়িয়ে কাটিয়ে দেয়।
খুব কম সময়ের জন্য এরা ভূমিতে অবস্থান করে।প্রজননের সময় এরা ওই অঞ্চলের আশেপাশে যেসব পাহাড় রয়েছে, সেখানে বাসা বানায় এবং বংশ বৃদ্ধি করে।এরা আকারে ছোট হওয়ায় ৩০ মিটার উপর থেকে ডাইভ দিয়ে পানির নিচে গিয়ে পুনরায় উপরের দিকে উঠতে পারে।
নডি পাখিঃ
এদের সম্পূর্ণ পৃথিবীব্যাপী ট্রপিক্যাল এবং সাব- ট্রপিকাল অঞ্চলগুলোতে দেখতে পাওয়া যায়।এরা প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এবং এর শাখা প্রশাখা যেসব দিকে গিয়েছে সে সমস্ত অঞ্চল গুলোতেও সর্বদা আকাশে উড়ে বেড়ায়।এ অঞ্চল গুলোর মধ্যে সেন্ট্রাল আটলান্টিক অঞ্চল ক্যারিবিয়ান অঞ্চল এবংভারত মহাসাগরের কিছু অংশ গণনার ভিতরে আসে।এরা দেখতে সম্পূর্ণ কালো রংয়ের।প্রকৃতপক্ষে এদের সম্পূর্ণ শরীর কালো এবং ধূসর রংয়ের সংমিশ্রন।এরাই স্কুইড সহ অন্যান্য ছোট মাছ উড়ন্ত অবস্থায় ধরতে পারে।
আকাশে উড়ন্ত পাখিঃ
এই প্রজাতির পাখি উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরীয় অঞ্চলে এদের দেখতে পাওয়া যায়।এতে শরীরে দুই ধরনের পালক থাকায় দেখতে অসম্ভব সুন্দর লাগে।এদের দেখতে কিছুটা দোয়েল পাখির মতো দেখায়।
দোয়েল পাখি সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন
এরা এদের জীবনের বেশিরভাগ সময় সমুদ্রের উপর উড়তে থাকে।এবং শুধুমাত্র প্রজননের সময় মাটিতে আসে বংশ বৃদ্ধি করার জন্য।এসব প্রজাতির পাখির নাম রেজোর-বিল।
রোজেট টার্নঃ
এদের ইউরোপ এবং আমেরিকার আটলান্টিক মহাসাগরীয় অঞ্চল গুলোতে দেখতে পাওয়া যায়।এবং শীতকালে ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায়।এর সম্পূর্ণ শরীরের বেশিরভাগ অংশই সাদা এবং ধূসর রংয়ের পালক দ্বারা আবৃত থাকে। মাথার সামান্য অংশটুকু সম্পূর্ণ কালো রঙে আবৃত থাকে।
এদের চঞ্চু অত্যন্ত প্রকৃতির এবং কালো রংয়ের হয়।প্রজননকাল এটি ধীরে ধীরে লাল রঙের রূপান্তরিত হয়।অন্যান্য পাখিদের মতো এরাও পানিতে ডাইভ দিয়ে ছোট ছোট মাছ খাদ্য হিসেবে সংগ্রহ করে।
পরিশেষে, বিশ্বব্যাপী সমুদ্রের বিস্তৃতি বিশাল হওয়ায় বিভিন্ন প্রজাতির পাখি বিভিন্ন অঞ্চলে উড়ে বেড়ায়।এ সমস্ত আকাশে উড়ন্ত পাখিদের সম্পর্কে জানতে আমাদের সাথেই থাকুন এবং আপনাদের মূল্যবান মন্তব্য আমাদের সাথে শেয়ার করুন।লেখাটি পড়ে কেমন লাগলো কমেন্ট বক্সে মাধ্যমে তার জানাতে পারেন। ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন।