তোতা পাখি এর বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে ম্যাকাউ প্রজাতি সবার নিকট বেশি পরিচিত। মানুষকে মনোরঞ্জিত করার এবং এর গায়ের রঙয়ের জন্য মানুষ একে বেশি পছন্দ করে। সবার নিকট এ পাখি এতটাই পছন্দের যে মানুষ এটিকে যুগের পর যুগ ধরে পোষা পাখি হিসাবে ব্যবহার করে থাকে। এসব পাখির বৈশিষ্ট্য, আচার-আচারন এবং আরও বিভিন্ন কিছু পোষার ক্ষেত্রে অনেকটা চ্যালেঞ্জিং মনে হয়। তবে তারা তাদের সঙ্গীদের প্রতি অনেক অনুগত থাকে। এবং সময় সম্পর্কে সচেতন।
কেন এদের পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পাখি বলা হয়?
৩৭০ এর চেয়ে বেশি প্রজাতির তোতা পাখি রয়েছে। এদের মধ্যে ম্যাকাউ সবচেয়ে বড় প্রকৃতির। এরা এক কেজি হতে পৌনে দুই কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। পাখিদের সাথে তুলনা করলে এ ওজন অনেক বেশি হয়ে যায়। এদের মধ্যে নীল প্রজাতির ম্যাকাউ সবচেয়ে বড় পাখি। এরা আকৃতিতে বড়, এদের পছন্দ-অপছন্দ সহ অরো অনেক বৈশিষ্ট্য অন্যান্য পাখি হতে আলাদা।
কেন এদের শতবর্ষী পোষা পাখি বলা হয়ঃ
এদের যদি ভালভাবে যত্ন নেওয়া হয় তাহলে নীল এবং সোনালি বর্ণের ম্যাকাউ গড়ে ৬০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে। কিছু কিছু প্রজাতি ৮০ বছর বা তার বেশি অনেক বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে। এদের বিভিন্ন প্রজাতির বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে বলে এদের দেখতে যেমন সুন্দর প্রজাতিভেদে তারা ১০০ বছর পর্যন্তও বেঁচে থাকে। এদের পোষার ক্ষেত্রে কিছু অতিরিক্ত যত্নের প্রয়োজন পরে।
পৃথিবীর দ্রুতগামি পাখি সম্পর্কে আরও জানতে পড়ুন
কেন এদের আওয়াজ আগে শুনা যায়ঃ
এদের দেখার আগে আওয়াজ শুনা যায়। এর একমাত্র কারন হচ্ছে এদের উচ্চস্বরে ডাক দিয়ে থাকে। জঙ্গলে এদের আওয়াজ এর মাধ্যমে এরা একে অপরের সাথে যোগাযোগ করে থাকে। জঙ্গলে এদের আওয়াজ প্রতিধ্বনি হয়। এরা অত্যান্ত বুদ্ধিমান এবং আকর্ষনীয় হয়। অনেক ক্ষেত্রে এরা মানুষের কথার অবিকল নকল করে থাকে। পোষা প্রাণী হিসাবে ম্যাকাউ পাখি মন্দ হয় না। আর এটি বেশি দিন বাঁচেও।
এদের খাদ্যভাস কি রকমঃ
এদের খাদ্যতালিকায় ফলমূল, ফলের বীজ, পাতা, ফুল, বাদাম জাতীয় খাবার খেয়ে থাকে। এদের ঠোঁট অনেক শক্ত হয়। এরা এদের ঠোট দিয়ে নারিকেলের শক্ত খোশা পর্যন্ত ভাঙতে পারে। এ বৈশিষ্ট্য অন্য সাধারন পাখির থেকে ম্যাকাউ পাখিকে আলাদা করেছে। এদের ঠোঁট শক্ত এবং এরা অনেক শক্তিশালি হওয়া সত্ত্বেও এরা ভদ্র প্রজাতির পাখি বলে পরিচিত।
প্রকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষায় পশু -পাখির ভূমিকা জানতে আরও পড়ুন
এছাড়া এরা ট্রপিকাল রেইন ফরেস্ট অঞ্চলে বাস করে। তবে কিছু প্রজাতি সাভানা অঞ্চলেও পাওয়া যায়। এরা দক্ষিন আমেরিকা, ব্রাজিল, ভেনেজুয়েলা, পেরু, বলভিয়া,প্যারাগুয়ে এসব অঞ্চলে পাওয়া যায়। এসব দেশে এ ধরনের পাখি সব জায়গাই পাওয়া যায়। অবাক করা তথ্য হল এরা বনে গাছ এর সংখ্যা বৃদ্ধিতে বড় ভুমিকা পালন করে। তারা যেসব বীজ খায় তা তারা আবার ত্যাগ করে। বীজ পুনারায় মলের সাথে মাটিতে পরে। এতে করে রেইন ফরেস্ট অঞ্চলে গাছের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এদের দেহ পালক দ্বারা আবৃত থাকলেও এদের একটি প্যাটার্ন রয়েছে। দুইটি ম্যাকাউ পাখির মধ্যে কখনই একই প্যাটার্ন এর হয় না। বিষয়টি অনেকটা মানুষের ফিঙ্গারপ্রিন্ট এর মত। দুই জন মানুষের ফিঙ্গারপ্রিন্ট যেমন এক হয় না তেমনি ভাবে দুইটি ম্যাকাউ পাখির পালকের প্যাটার্ন ও তেমন এক হয় না। এরা সামাজিক ভাবে একত্রে থাকা পছন্দ করে। এরা সাধারনত ৩০টি পাখি একত্রে দলবেধে উড়ে।