পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাংলাদেশ সবুজ-শ্যামল এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভরপুর। অন্যান্য দেশ সুন্দর হলেও বাংলাদেশের মত অন্য কোন দেশ নেই। এজন্য এই দেশের প্রকৃতির পাশাপাশি অন্যান্য জীব-জন্তুর দেখা মিলে। পৃথিবীর ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট ( Mangrove Forest ) সুন্দরবন যা দুটি দেশের মধ্যে অবস্থিত। সুন্দরবনকে বাংলাদেশের ব-দ্বীপ বলা হয় কেননা এর আকৃতির বাংলা বর্নমালার “ব” অক্ষরের মত। বাংলাদের এবং ভারত এই দুটি দেশের উপর সুন্দরবন রয়েছে। গাছ-গাছালি থেকে বন্য প্রানী এবং পাখি সব কিছুই অন্যান্য প্রানীদের থেকে আলাদা। যাই হোক হরিনের কয়েক ধরনের প্রজাতি আছে যাদের বৈশিষ্ট্য প্রত্যেকের থেকে আলাদা ধরনের হয়ে থাকে।
হরিনের সবচেয়ে আকর্ষনীয় হচ্ছে এদের শিং এবং গায়ের উপর সুন্দর করে ছোপ ছোপ দাগ বিশিষ্ট এদের স্কিন। এই দুই কারনেই মানুষ এদের সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে থাকে। তবে এরা যেহেতু তৃনভোজী তাই এদের জঙ্গলের মধ্যে বেশি গাছ পালা আছে এমন অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায়। ছোট অবস্থায় অর্থাত এরা যখন বাচ্চা থাকে তখন এরা ১৪ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয় এবং ৯ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়ে থাকে। এরা এদের জীবন কালে ১০-২৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। তবে প্রজাতিভেদে এদের সংখ্যার কিছুটা তারতম্যও হয়ে থাকে। এত কিছুর পরও হরিনের সম্পর্কে আজ আমরা নতুন কিছু জানার চেষ্টা করব যা অনেকেরই অজানা।
বিচিত্র রকমের চোখঃ
মানুষ সহ অন্যান্য প্রানীদের ক্ষেত্রে চোখ সর্বদাই সামনে থাকলেও এদের চোখ মাথার পাশে থাকে। এতে করে এরা চারিদিকে বিস্তৃতভাবে দেখতে পারে। পাশে অবস্থিত হওয়াই এদের চোখ ৩১০ ডিগ্রী এঙ্গেল পর্যন্ত কাভার করতে পারে। এজন্য এদের চোখ কোন ফোকাল পয়েন্ট নির্দিষ্ট করতে অসুবিধা হয়। এদের অনেক সুন্দর নাইট ভিশন আছে যা হরিনকে রাতের বেলায় খাবার খুঁজতে এবং শিকারীর হাত থেকে রক্ষা পেতে সহয়তা করে।
![সুন্দরবন হরিণ](https://poshupakhi.com/wp-content/uploads/2022/02/Deers.jpg)
হরিণ এর শ্রবনশক্তিঃ
মানুষের মাথা যে কোন দিক ঘুরানো লাগে দেখার জন্য। তবে হরিন তার কান যে কোন দিকে ঘুরাতে পারে অন্য একদিক তাকিয়ে থেকে।এতে করে সে সহজে বুঝতে পারে কোন শব্দ কোন দিক থেকে আসছে এবং ডিরেকশন ঠিক করতে পারে।
এছাড়াও এদের ঘ্রান শক্তি অনেক তীব্র কেননা এরা অনেক দূর থেকেই বুঝতে পারে। এরা তাদের নাককে প্রায় সময়ই চেটে থাকে এতে করে তাদের নাক ঘ্রান নেওয়ার জন্য সর্বদা সজীব থাকে। আর এজন্য এদের smelling ability দিন দিন বৃদ্ধি পায়।
![নদীর কূলে হরিণ](https://poshupakhi.com/wp-content/uploads/2022/02/Deer.jpg)
সামাজিকতাঃ
অন্যান্য প্রানীরা একা ঘুরতে পছন্দ করলেও এরা দলবেধে চলাফেরা করে থাকে। এদের দলের একজন দলনেতা থাকে যার অধীনে অন্যান্য আরও হরিণ থাকে। একজন পুরুষ হরিনের দলে ১,০০,০০০ এর মত হরিন থাকে। তবে পুরুষ প্রধান হওয়াই নারী প্রজাতির হরিনকে দলনেতার নিয়ম মেনে চলতে হয়। এবং নারী প্রজাতিদের উপর পুরুষ প্রজাতি দেখে শুনে রাখে।
![সুন্দরবন হরিন](https://poshupakhi.com/wp-content/uploads/2022/02/Deers.jpg)
যোগাযোগ ব্যবস্থাঃ
এরা নিজেদের মধ্যে একাধিক ভাবে যোগাযোগ করতে পারে। নিজেদের অন্যদের সামনে উপস্থাপন করে অর্থাৎ নিজেদের বডি ল্যাংগুয়েজের মাধ্যমে একজন অপরজনকে কি বুঝাতে চাচ্ছে তা তুলে ধরে। গলার স্বর কিংবা বিভিন্ন রকমের আওয়াজ করার মাধ্যমে নিজদের মধ্যে কমিউনিকেট করতে পারে।
এছাড়াও এদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যাঙ্গ থেকে সুগন্ধ বের হয় যা এক ধরনের যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহৃত হয়। তবে হরিণের চামড়া অনেক মূল্যবান এদবং দেখতে অনেক সুন্দর ধরনের।
![হরিনের শ্রবনশক্তি](https://poshupakhi.com/wp-content/uploads/2022/02/deer-hearing.jpg)
পরিশেষে, হরিণ সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য আছে যা এমনই ধরনের। তবে এক তথ্যের সাথে অন্য তথ্যের মিল তেমন নেই; তবে বিশেষতা আছে। হরিনের সম্পর্কে আরও এমন তথ্য জানার জন্য আমাদের পরবর্তী আর্টিকেল পড়ার আমন্ত্রন রইল। লেখাটি পড়ে কেমন লাগল তা অবশ্যই কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে আমাদের সাথে আপনাদের মূল্যবান মন্তব্য শেয়ার করবেন এবং লেখাটি আপনি আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করবেন যাতে করে আপনার ফ্রেণ্ড লিস্টের বাকিরাও এ সম্পর্কে জানতে পারে। ততক্ষন পর্যন্ত ভাল থাকুন ; সুস্থ থাকুন। ধন্যবাদ।