সুন্দর ঘোড়া দেখতে অনেক আকর্ষনীয়।প্রাণীজগতে অনেক প্রাণী থাকেলও ঘোড়া তাদের মধ্যে অন্যতম এবং সকলের অনেকটা পছন্দের। ঘোড়া গৃহপালিত প্রাণী কিন্তু অনেকে বন্য প্রাণী বলে থাকে। ঘোড়া এবং মানুষের একটি প্রাচীন সম্পর্ক রয়েছে। প্রায় ৪০০০ বছর আগে এশিয়ান যাযাবর সম্ভবত প্রথম ঘোড়াগুলি পালন করেছিলেন এবং ইঞ্জিনের আগমন পর্যন্ত এ প্রাণীগুলি মানবসমাজের কাছে অপরিহার্য ছিল। ঘোড়াগুলি এখনও অনেক সংস্কৃতিতে সম্মানের জায়গা রাখে, প্রায়শই যুদ্ধের বীরত্বপূর্ণ কাজে যুক্ত হয়। বর্তমানে যুদ্ধ ছেড়ে মানুষ শান্তির এগিয়ে গেলেও ঘোড়ার ব্যবহার কমে যায়নি। বরং যুদ্ধের বিকল্প হিসাবে এসব ঘোড়ার ব্যবহার হয় যা মানুষের কল্যনে ভুমিকা রাখে ।এমনই উন্নত জাতের ঘোড়া সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত বর্ণনা করা হলঃ
সুন্দর ঘোড়াঃ
এ প্রজাতির ঘোড়া নেদারল্যান্ডের ফ্রিয়েশিয়ান অঞ্চলে পাওয়া যায়। এদের উন্নত জাতের প্রজনন এর জন্য ব্যবহার করা হয়। দৌড়ানোর সময় এদের উড়ন্ত লম্বা চুলের জন্য দেখতে অনেক আকর্ষনীয় লাগে। এদের ঘাড়ে এবং লেজে প্রচুর চুল থাকে।একে দেখতে অনেকটা “কালো মুক্তার” মতই সুন্দর।অঞ্চলের নাম অনুসারে এদের ফ্রিয়েশিয়ান ঘোড়া বলা হয়।
হ্যাঁফলিঙ্গার ঘোড়াঃ
এরা অ্যাভেলিগনেজ নামেও পরিচিত। উনিশ শতকের শেষের দিকে ইতালির উত্তরাংশ এবং অস্ট্রিয়া অঞ্চলে এদের আবির্ভাব হয়। এরা আকারে বাকি ঘোড়াদের তুলনায় সামান্য ছোট।এদের বুক অনেকটা চওড়া লেজ লম্বা হয়।
লিপ্পিযান ঘোড়াঃ
এরা লিপ্পিযা স্টাড নামক এক প্রকার জাত হতে এদের উৎপত্তি। এ ঘোড়া হাবসবার্গ রাজতন্ত্রে ব্যবহৃত হত। এত দ্রুত দৌড়ায় যে এরা যেন বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে। এদের রাজকীয় কাজে ব্যবহার হয়। আবার এরা লাফ দিয়ে বাতাসে কিছুক্ষনের জন্য ভেসে থাকতে পারে।
জিপসি হর্সঃ
এ ঘোড়া কোন রূপকথার গল্পের থেকে কম নয়। দেখতে যেমন ভাল বৈশিষ্ট্যে তেমনি এগিয়ে। এদের ঘাড়ে, লেজে এবং ক্ষুরের উপর পালক দ্বারা আবৃত। দৌড়ানোর সময় এদের দেখতে অপূর্ব সুন্দর লাগে। এ ধরনের ঘোড়া মানুষ পছন্দ করে। কেননা এদের অনেক কিছু মানুষ হর্স রাইডিং এর সময় অনায়সে মিলিয়ে নিতে পারে।
হাতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন
আন্দুলুসিয়ান হর্সঃ
এদের পিওর স্প্যানিস হর্সও বলা হয়।তবে কেউ কেউ “প্রি” নামেও ডাকে। এদের পূর্ববর্তী বংশধর হাজার বছর ধরেও বেঁচে ছিল। পঞ্চদশ শতাব্দীর বিশেষ একটি ঘোড়ার মধ্যে এটি একটি। এদের বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষন দেওয়া যায়।
অ্যারাবিয়ান হর্সঃ
এ ঘোড়া তাদের শক্তি, সামর্থ্য, বুদ্ধি, ভদ্রতা এর জন্য সব জায়গায় পরিচিত । আরবদের দ্বারা সপ্তম শতাব্দীতে এদের উৎপত্তি। ছোট ঘোড়া পালতে যারা পছন্দ করে তাদের কাছে এদের বেশি সংখ্যায় পাওয়া যায়। তবে এদের যে কোন দেশে এখন পাওয়া যায়।
মারওয়ারী ঘোড়াঃ
এদের ভারতের রাজস্থানের মারওয়ারি অঞ্চলে এর এলাকায় পাওয়া যায়। এদের মারওয়ারী বা মালানী ঘোড়াও বলা হয়। এ প্রজাতির ঘোড়া বাকি সকল প্রজাতির চেয়ে অনেক বিরল। উন্নত জাতের ঘোড়ার তালিকায় এরা শীর্ষ দশের মধ্যে পড়ে। গুজরাত এলাকায় এদের বেশি পাওয়া যায়। এ প্রজাতির ঘোড়ার কান মোড়ানো হয়।
আকেল-টেক হর্সঃ
এরা তুর্কির উন্নত প্রজাতির ঘোড়ার মধ্যে একটি। যে কোন বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে এরা অন্য সব ঘোড়া হতে এগিয়ে। এদের গতি, দৌড়ানোর ক্ষমতা এবং বুদ্ধির দিক দিয়ে বিশ্বব্যাপী খ্যতি রয়েছে। এদের শরীরে চামড়া বা লোম সোনালী বর্নের হয়ে থাকে। সমুদ্র-সৈকতে রোদ্র-উজ্জ্বল পরিবেশে এ ঘোড়াতে হর্স রাইডিং অনেক আনন্দদায়ক এবং সুন্দর ঘোড়া দৌড়ানোর দৃশ্য আরও অসাধারন।
ক্যামারিলো হোয়াইট হর্সঃ
এরা ১০০ বছরের এর চেয়ে কম পুরনো ঘোড়া জাত। এদের সাদা রঙের জন্য এরা বিশ্বব্যাপী পরিচিত। এরা সাদা রঙের হওয়ায় অন্য প্রজাতির ঘোড়ার চেয়ে এদের সুন্দর বেশি লাগে। কথিত আছে ১৯২১ সালে অ্যাডলফ ক্যামারিলো ৯ বছর বয়সী একটি শাবক কিনেছিল। এবং শাবকটির নাম ছিল “সুলতান” ।
ব্ল্যাক ফরেস্ট হর্সঃ
এরা ৬০০ বছরের পুরনো প্রজাতি।ধারনা করা হয়ে থাকে এদের উৎপত্তি জার্মানির দক্ষিন-পশ্চিম উপকূলে বাডেন-রিটবার্গ অঞ্চলে। এদের ব্যবহার বেশি ভাগ কৃষি পন্য উৎপাদন এবং ফার্মের কাজে ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে এদের প্রজাতির সংখ্যা অনেকটা হ্রাস পাচ্ছে দিন দিন।
বিভিন্ন প্রজাতির সুন্দর ঘোড়া সম্পর্কে আরও বিচিত্র তথ্য জানা থাকলে কমেণ্ট বক্সে আমাদের সাথে শেয়ার করুন। পশুপাখি সম্পর্কে সচেতনতা মূলক কন্টেন্ট পড়তে আমাদের সাথেই থাকুন।