অজানা প্রানী এর সংখ্যা গণনা করে শেষ করা যাবে না। সমুদ্রকে প্রাণিজগতের ভান্ডার বলা হয়। কেননা জীব বৈচিত্রের প্রায় ৬০ ভাগ জীবই সমুদ্রের তলদেশে বসবাস করে। কিন্তু সমুদ্রের অতল গহ্বর পর্যন্ত মানুষের যাওয়া সম্ভব হয়ে ওঠেনি।কিছু ডুবুরী দেখতে পারলেও সমুদ্র তলদেশের সকল প্রাণী এবং জীব বৈচিত্র সম্পর্কে বিস্তারিত জানা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। আজকে আমরা এমন কিছু প্রজাতির প্রাণী সম্পর্কে জানব যেগুলো সমুদ্রের তলদেশে কদাচিৎ দেখা যায়। অর্থাৎ খুবই কম মানুষেরই চোখে এদের পড়ছে এবং মানুষ এদের সম্পর্কে খুব কম পরিমাণ তথ্যই জেনেছে।
সানফিশঃ
মলা মলা নামক মাছকে সানফিশ বলা হয়। এরা প্রায় সব সমুদ্রের তলদেশে এবং ক্রান্তীয় এবং উষ্ণ জলবায়ু অঞ্চল বিশিষ্ট সমুদ্রে এদের বেশি দেখতে পাওয়া যায়। এরা সামুদ্রিক শৈবাল, ছোট ছোট মা্ জুওপ্লাংকটন ইত্যাদি খাবার খেয়ে থাকে। এর আকারে অনেক বড় এবং এদের শরীর কাটা দিয়ে নয় বরং হাড় দিয়ে তৈরি। এজন্য এদেরকে বোনি (Boney Fish ) ফিশ বলা হয়। এদের শরীরে দুইপাশের এক পাখনার কিনার থেকে অপর পাখনার কিনার পর্যন্ত ১১ফিট হয়। ওজনের দিক থেকে এরা ৩০০ পাউন্ড বা ১৩৭ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।
আইসোপডঃ
এরা ব্যাথিনোমাস গোত্রের বাকি আরো ৯ টি প্রজাতির রয়েছে। এদের মধ্যে এই প্রজাতির সবচেয়ে বৃহৎ। আকার আকৃতি এবং চেহারা কিছুটা চিংড়ি এবং কাকড়ার সম্মিলিত রূপ। এদের ছবি দেখে বোঝা যায় যে এরা এদের গোত্রের এবং সমুদ্রের বড় প্রজাতির প্রাণীর মধ্যে পরে। অজানা প্রাণী হলেও দেখতে তেলাপোকার মত। অজানা প্রানী এর তেলাপোকা এর মধ্যে এরা উল্লেখযোগ্য।
হাঙ্গরঃ
বিভিন্ন প্রজাতির হাঙ্গর রয়েছে এবং হাঙ্গরকে আমরা কমবেশি সবাই চিনি। কিন্তু মেগামাউণ্ট প্রজাতির হাঙ্গর আমরা অনেকেই চিনিনা। এদের মাথা অনেক বড় এবং চোয়াল অনেক প্রসারিত হয়। এদের মাথা এবং পাখনার মাঝখানে একটি কালো ডট রয়েছে যা অন্য কোন প্রজাতির থাকে না।লম্বায় এরা ৪.৫ মিটার পর্যন্ত এবং ওজনে ৭৫০ কেজি পর্যন্ত হয়।
হাঙর সম্পর্কে আরও জানতে ক্লিক করুন
অজানা প্রানীঃ
এদের ফ্যাংটুথ নামেও ডাকা হয়। এটি সারা বিশ্বের সমুদ্র তলদেশের সবচেয়ে বিপদজনক প্রাণী । এরা বেশিভাগ অ্যানপ্লোগেস্টার নামে পরিচিত। এর এমন নাম দেওয়া হয়েছে শুধুমাত্র এর রূপের কারণে। এর দাঁত অনেক বড় এবং কখনও কোন প্রাণীকে ভক্ষণ করলে তখন সবচেয়ে বেশি পরিমাণ খাবার এর অংশ এরা মুখে নিতে পারে। এরা দেখতে সুন্দর না হওয়ায় এদের দৈত্য মাছও বলা হয়।
ভাইপার ফিসঃ
এদের গভীর সমুদ্রে পাওয়া যায়। এদের চোখ, মুখ থেকে কিছুটা উপরের দিকে অবস্থিত। এদের দেখতে এতটাই ভয়ানক লাগে যে সাধারন মানুষ দ্বিতীয়বার দেখতে চায় না। এদের দাঁত খুবই বড় এবং শিকারির জন্য ঘাতক হিসাবে পরিচিত হয়।
এরা শিকারকে ধরার জন্য পানির নিচে দ্রুত গতিতে আসে আক্রমণ করে থাকে। ভাইপার সাপ হিসাবে জানলেও মাছ হিসাবে তা অজানা প্রানী।
গ্লাস স্কুইডঃ
সমুদ্রের উপরিতল হতে মাঝ বরাবর গভীরতায় এদের খুঁজে পাওয়া যায়। এ মাছ থেকে দেখলে মনে হয় সূর্যের আলো এবং পানির সংমিশ্রণের এক অপরূপ শরীর। এ কারণে এদের সহজে পানির মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায় না। এদের চোখ আকারে বড় এবং এদের শরীরে বায়োলুমিনিসেন্স নামক অঙ্গ রয়েছে। স্কুইড সবাই চিনলেও এটিকে না চেনার জন্য এটি অজানা প্রানী।
ফুটবল ফিশঃ
নাম শুনে অনেকটা অবাক হলেও এ নামেরও মাছ রয়েছে। এদের গভীর সমুদ্রে খুঁজে পাওয়া যায়। পুরুষ এবং মহিলা প্রজাতির মাছের মধ্যে বিশাল পার্থক্য থাকায় এদের সহজেই খুঁজে বের করা যায়। মহিলা প্রজাতির মাছ ২ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয় এবং পুরুষ প্রজাতির লম্বায় ১.৫ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে। অজানা প্রাণী হিসাবে এদের জুড়ি নেই।
পরিশেষে অসংখ্য প্রজাতির অজানা প্রানী রয়েছে। তবে এ রকম আরো অনেক মাছ রয়েছে যাদের বৈশিষ্ট্যের সাথে আমরা অপরিচিত। এরকম বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক প্রানী এবং মাছ সম্পর্কে জানতে আমাদের সাথেই থাকুন এবং সোশ্যাল মিডিয়ার কমেন্ট বক্স এর মাধ্যমে আপনাদের মতামত আমাদের সাথে শেয়ার করুন।