সামুদ্রিক মাছ এর পাশাপাশি সমুদ্রে অনেক জীব আছে যা সমুদ্রের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে। সুন্দর প্রানীর সমুদ্রের তলদেশে কোন কমতি নাই। এজন্য প্রাণীদের প্রজাতি এবং সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও সময়ের বিবর্তনের সাথে সাথে প্রাণীর সংখ্যা কিছুটা বিলুপ্তির পথেও। আমরা স্বাভাবিকভাবে দেখতে পাই এক প্রজাতির প্রাণী অন্য প্রজাতির প্রাণীর সাথে দ্বন্দ্বে লিপ্ত। বিষয়টি অত্যন্ত স্বাভাবিক। এটিকে খাদ্যচক্রের একটি অংশ বলা হয়। সমুদ্রের তলদেশে চিংড়ি মাছ আমাদের দেশি চিংড়ি গলদা বাগদা এর চেয়ে অনেক বড়। কেননা যে কোন প্রজাতির প্রাণী তার নিজ নিজ অস্তিত্ব রক্ষায় তথা নিজেদের রক্ষা করার চেষ্টা করে।সমুদ্রের তলদেশে এমন ঘটনা ঘটে থাকে।কিন্তু যে কোনো প্রাণীদের বিলুপ্তির পিছনে অনেকাংশে দায়ী। মানুষের অসৎ উদ্দেশ্য, লোভ, এবং উদাসীনতাই দায়ী। সুন্দর প্রানীদের প্রতি মানুষ আকৃষ্ট বেশি হয়।
সমুদ্রের তলদেশে ক্ষুদ্র থেকে শুরু করে বৃহৎ প্রজাতির বিভিন্ন রকম প্রাণী আমরা দেখতে পাই। এজন্য এদের আকার-আকৃতি রং সহ অন্যান্য বৈশিষ্ট্য ইউনিক প্রকৃতির। যেহেতু সমুদ্র তলদেশে সব অঞ্চলের মানুষের যাওয়া সম্ভব হয় না কিন্তু
প্রাণের সন্ধান রয়েছে সে সকল জায়গার জীবদের বা রঙিন সামুদ্রিক মাছ সম্পর্কে আমাদের জানা উচিত। ইউনিক প্রকৃতির প্রাণীদের দেখতে অসম্ভব সুন্দর হয়। সহজ কথায় সুন্দর প্রানী দেখে চোখ ধাঁধিয়ে যায়। আজকে এমন কয়েকটি প্রাণীদের সম্পর্কে জানব।
জেলিফিশঃ
এ প্রজাতির জেলিফিশগুলো দেখতে অনেকটা ফুলের মত।এজন্য এদের ফ্লাওয়ার হ্যাট জেলিফিশ বলা হয়। এটি জেলিফিশের অনেকগুলো প্রজাতির মধ্যে বিরলতম প্রজাতি।পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এদের দেখতে পাওয়া যায়। মজার বিষয় হলো এই প্রজাতির জেলিফিশের মধ্যে সকল রঙের হয়ে থাকে। গোলাপি, হলুদ, বেগুনি, নী্ সবুজ সহ অন্যান্য আরো অনেক রংঙের এই প্রজাতির জেলিফিশ পাওয়া যায়।তবে এদের কাটাতে বিষাক্ত পদার্থ থাকায় মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর।
সুন্দর প্রানীঃ
এ প্রজাতির মাছের সম্পূর্ণ শরীর আবৃত অবস্থায় থাকে। সারা বিশ্বব্যাপী এই এই মাসের প্রায় ৩০০০ প্রজাতি রয়েছে।এইসব প্রজাতির মাছের রং অনেক চিত্তাকর্ষক হয় এবং যে স্থানে থাকে তার সাথে মিল রেখে এদের খোলসের উপর রঙের আস্তরণ সৃষ্টি হয়।
এই ক্যামোফ্লাজ সুবিধার জন্য এরা এদের শত্রু এবং শিকারকে সহজেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং নিজেদের রক্ষা করে। এদের মধ্যে অনেক প্রজাতি আছে নিশ্চল ভাবে এক জায়গায় পড়ে থাকে। আবার অনেক প্রজাতি অতি দ্রুততার সাথে একই স্থান থেকে অন্য স্থানে চলাফেরা করতে পারে। এদের নাম নুডিব্রাঞ্চ।
সী অ্যানিমনঃ
ফুলের তোড়া যে কারও পছন্দের এবং সুন্দর লাগে দেখতে। কিন্তু এর মত দেখতে সামুদ্রিক প্রাণী থাকলে এবং তা যদি চলাচল করতে পারে তাহলে তার সৌন্দর্যের শেষ নাই। সী অ্যানিমন এমনে প্রাণীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। সমুদ্রের তলদেশে শৈবাল এবং অন্যান্য প্রাণীর চারপাশে ফুলের তোড়ার মত সজীব
শাখা প্রশাখার আলোড়ন সৃষ্টি কার না দেখতে ভালো লাগে। সারাবিশ্বে হাজারের চেয়েও বেশি প্রজাতি ছড়িয়ে-ছিটিয়ে সমুদ্রের তলদেশে অবস্থান করছে। কিন্তু দেখতে যত সুন্দর হোক এদের শরীরের অভ্যন্তরে সম্পূর্ণ বিষাক্ত পদার্থের ভান্ডার। যা খুব অল্প সময়ে যে কাউকে ধরাশায়ী করতে পারে।
প্যারোট ফিশঃ
প্যারোট এর বাংলা প্রতিশব্দ টিয়া পাখি। কিন্তু প্যারোট ফিশ বলতে এক প্রজাতির মাছ কে বোঝানো হয়েছে। সারা বিশ্বে ৯০টির ও বেশি প্রজাতি রয়েছে। এরা উপকূলীয় অঞ্চলে অথবা সমুদ্রের হালকা স্রোত যুক্ত সরু অঞ্চলে চলাফেরা করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।এই প্রজাতির মাছ জন্মের সময় স্ত্রী প্রজাতির হয়ে জন্ম নিলেও সময়ের সাথে সাথে বড় হতে থাকলে প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় এরা পুরুষ প্রজাতির মাছে পরিণত হয়।
অপ্রাপ্ত বয়সে এরা ধূসর বাদামি কিংবা লাল বর্ণের হয়ে থাকলেও প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় এরা সবুজ অথবা নীল বর্ণের পরিণত হয়। সমুদ্রের সুন্দর প্রানীদের সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন
সামুদ্রিক চিংড়িঃ
চিংড়ি মাছের সাথে পরিচিত নয় অথবা নাম শুনেনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। বরং সকলের পছন্দের খাবারের তালিকার শীর্ষে চিংড়ি মাছ অবস্থান করে।সামুদ্রিক চিংড়ি অনেক প্রজাতির হওয়ায় স্থান ও পরিবেশের উপর ভিত্তি করে এদের ইউনিক কিছু
বৈশিষ্ট্য রয়েছে।এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে “মন্টিস চিংড়ি”। এর প্রায় চারশত উপপ্রজাতি রয়েছে।এদের ইন্দো প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দেখতে পাওয়া। এদের সম্পূর্ণ শরীর উজ্জ্বল বর্ণের এবং খোলস লাল-নীল আরো অন্য রং এর সংমিশ্রণে আকর্ষণীয় রূপ তৈরি করে।
পরিশেষে সমুদ্রের তলদেশে সুন্দর প্রানীদের যেমন অভাব তেমনি রঙিন সামুদ্রিক মাছ এর অভাব নেই। উপকারী ও অপকারী সুন্দর-অসুন্দর ভালো-মন্দ সহ সকল ক্যাটাগরির প্রাণীদের অভয়ারণ্য। সমুদ্র তলদেশের সুন্দর প্রাণীদের সম্পর্কে আপনাদের মতামত আমাদের কমেন্ট বক্সে মাধ্যমে শেয়ার করতে পারেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশী বেশী শেয়ার করেন।