বিষাক্ত কীটপতঙ্গ মানুষের জন্য ক্ষতিকর হলেও এরা ইকোসিষ্টেমে ভূমিকা রাখে।পৃথিবীতে প্রানীদের মধ্যে বৃহৎ আকৃতির প্রানী যেমন উপস্থিতি যেমন লক্ষনীয় তেমনি ক্ষুদ্র প্রজাতির প্রানীদেরও জীবজগতে যথেষ্ট অবদান রয়েছে। আমাদের মধ্যে অনেকে ক্ষুদ্র প্রজাতির প্রানীদের তেমন বেশি গুরুত্ব দেয় না। কিন্তু জীবজগতে ইকোসিষ্টেম সচল রাখার জন্য বৃহৎ কিংবা ক্ষুদ্র; স্থলচর, জলচর এবং খেচর যাই হোক না কেন সকল ধরনের সকল প্রজাতির প্রানীরা নির্দিষ্ট ভূমিকা রয়েছে।
তাদের এই ভূমিকাই ইকোসিষ্টেমকে সচল এবং বসবাস উপযোগী করে রাখতে সহযোগিতা করছে। তবে বড়-ছোট প্রায় সকল প্রানীরই ভাল এবং খারাপ দিক রয়েছে। অর্থাৎ প্রানীরা মানুষের উপকারীও হতে পারে আবার অপকারীও হতে পারে। কিন্তু এমন অনেক প্রানীও আছে যারা মানুষের জন্য ক্ষতিকর। ক্ষতিকর প্রানী হওয়ায় এদের থেকে দূরত্ব মেনে চলাই উত্তম। ক্ষুদ্র প্রানীদের মধ্যে নিচে বিষাক্ত প্রকৃতির কীটপতঙ্গদের সম্পর্কে কিছু বৈচিত্রময় তথ্য তুলে ধরা হল।
ড্রাইভার অ্যান্টঃ
নাম শুনে ড্রাইভার মনে হলেও এরা প্রকৃত অর্থে গাড়ি চালায় না। কিন্তু এসব পিঁপড়া সর্বদা এদিক-ওদিক চলাচল করে। তদের এই চলাচল অনেক দ্রুত প্রকৃতির হয়। এজন্য এদের নাম ড্রাইভার অ্যান্ট বলা হয়। এরা এভাবে খাদ্য সংগ্রহ করে থাকে।
এদের সংখ্যা মত্রারিক্ত হওয়ায় এদের কয়েকদিন পর পর নতুন খাদ্যের উৎস খুঁজে বের করতে হয়। এদের বেশিভাগ সেন্ট্রাল আফ্রিকায় দেখতে পাওয়া যায়। ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গো দেশে এদের বেশী উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
বুলেট পিঁপড়াঃ
এই প্রজাতির পিঁপড়া দৈর্ঘ্যে ১ থেকে ২ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। বুলেট লাগলে শরীরে যেমন অনুভুতি হয় এই পিঁপড়া কামড়ালে ঠিক একই রকম অনুভুতি হয়। এই পিঁপড়ার কামড়ের ব্যাথা অনেক তীব্র এবং কখনও কখনও তা অসহনীয় পর্যায়ে চলে যায়। এর কামড়ে অনেক ক্ষেত্রে প্যারালাইসিসও হয়ে থাকে। এর কামড়ের ব্যথা কিছুটা গরম কয়লার উপরে হাটার মতই কষ্টকর। বিষাক্ত কীটপতঙ্গ আরও রয়েছে কিন্তু এখানে কয়েকটি তুলে ধরা হল।
আগুন পিঁপড়াঃ
মাটি এবং বালির নিচে এসব প্রজাতির পিঁপড়া নিজেদের কলোনি তৈরি করে থাকে। মাটির উপর আমরা সর্বদা হাঁটি। এজন্য এদের তৈরি করা কলোনি আমাদের পায়ের নিকটে থাকে। যদি অসতর্ক হয়ে হাঁটার সময় কোন ভাবে এদের কলোনির উপর পা পড়ে তাহলে, এরা কামড়ানোর সময় কোন কৃপনতা করে না। অল্প সময়ের মধ্যে এরা দ্রুত কামড়াতে পারে। এজন্য আপনি হঠাৎ করে পা সরালেও এদের কামড় থেকে রেহাই পাবেন না। এরা নিজেদের কলোনি রক্ষার জন্য অনেক সিকিউরিটি নিশ্চিত করে। এজন্য এদের কামড়ে অনেক সময় অ্যালার্জিও হয়ে থাকে।বিষাক্ত কীটপতঙ্গ হিসাবে পিঁপড়ার নাম অনেকেই জানে না।
বিষাক্ত কীটপতঙ্গঃ
এই প্রজাতির পোকাকে ইংরেজিতে “কিছিং বাগ” বলা হয়। নাম শুনে মনে হলেও মানুষকে অনেকটা চুমু দেয়ার মত। কিন্তু এরা মানুষকে কামড় মারে শরীরের রক্ত চুষে খায়। মানুষ হা করে মুখ দিয়ে নিশ্বাস নিলে আপনি অবশ্যই এই পোকার পরবর্তী টার্গেট হবেন। এরা খুবই ক্ষতিকর বিষাক্ত কীটপতঙ্গ হিসাবে।
মশাঃ
এরা আকারে ছোট কিন্তু কিভাবে এরা মানুষের ক্ষতি করতে পারে। প্রকৃত পক্ষে সাইজে ছোট এবং বেশি পরিমান রোগ-জীবানু নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। এদের কামড়ে অনেক সময় শরীরে অনেক জ্বালাতন করে থাকে। এদের কারনে বছরে রেকর্ড সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়ে থাকে।যদিও এদের সম্পর্কে মানুষ
অনেকটা সচেতন হয়েছে। পৃথিবীর এমন কোন জায়গা নেই যে এদের পাওয়া যায় না। এমনকি আলাস্কা সহ বিভিন্ন দেশেই এদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এদের সংখ্যা কখনও কমে না বরং বাড়তেই থাকে। এরা আমাদের চিন্তার বাহিরে হলেও বিষাক্ত কীটপতঙ্গ হিসেবে ধরা হয়।
মৌমাছিঃ
পোলেন কনা বা মধু সংগ্রহকারী প্রানী কিভাবে মানুষের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তারা তাদের রানীকে রক্ষা করার জন্য যে কোন পর্যায়ে আক্রমনাত্মক হতে পারে। এরা এতটাই ডেডিকেটেট যে রানীর জন্য নিজেদের জীবন তুচ্ছ করতে বিন্দুমাত্র পিছপা হয় না। আফ্রিকান প্রজাতির মৌমাছি যথেষ্ট আক্রমনাত্মক হয়।
কিন্তু আমেরিকান প্রজাতির মৌমাছি অন্য যে কোন প্রজাতির চেয়ে সবচেয়ে বেশি পরিমান আক্রমনাত্মক। মৌমাছি সম্পর্কে আরও জানতে ক্লিক করুন
পরিশেষে, বিষাক্ত কীটপতঙ্গ আরও রয়েছে। অন্যান্য কীট-পতঙ্গ সম্পর্কে জানতে আমাদের সাথেই থাকুন। আপনাদের নতুন কোন তথ্য জানা থাকলে তা আমাদের সাথে শেয়ার করুন। আর্টিকেলটি পড়ে কেমন লাগল তা জানাতে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন। বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত কীট পতঙ্গ সম্পর্কে জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।