মশার কামড়ে স্কিন কিছুটা ফুলে উঠে এবং সামান্য চুলকানি হয় মাঝে মাঝে। মশার সাথে পরিচিত নয় এমন মানুষ বর্তমানে খুঁজে পাওয়া যায় না। আমাদের দেশে মশার অত্যাচার আরও বেশি। মশার সংখ্যা বৃদ্ধির কারন হল মানুষ। কেননা মশার জন্ম আমাদের চারপাশে অবস্থিত বদ্ধ জলাশয়ে। বিভিন্ন ড্রেন এবং নর্দমায় এদের বংশবৃদ্ধি ঘটে। মশা একসাথে প্রায় শ থেকে হাজার খানেক জন্মলাভ করে। এজন্য এদের সংখ্যা অল্প সময়ে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়।
মশার কয়েক ধরনের প্রজাতি আছে। কিন্তু আমরা শুধুমাত্র একটি এবং দুটি মশা সম্পর্কে জানি। বিশেষ করে এডিস মশা সম্পর্কে আমরা সকলেই জানি। মশার কারনে বিভিন্ন রোগে মানুষ আক্রান্ত হয়। মানুষ আক্রান্ত হলে যেমন কিছুটা সময়ের জন্য অসুস্থ হয় কিংবা মারা যায়। বিশেষ করে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে অনেক মৃত্যুকে আলিঙ্গন করছে। আমাদের বসত বাড়ীর আশেপাশে ডেঙ্গু মশা বদ্ধ পানিতে জন্মে থাকে।
সরকারি-বেসরকারি কিংবা ব্যাক্তিগত পর্যায়ে এই ডেঙ্গু মশা নিধনে বিভিন্ন রকম কর্মসূচী গ্রহন করে থাকে। এজন্য বাড়ীর আশেপাশে ড্রেন, নর্দমা, ছাদ বাগান, গাছের টব সহ বিভিন্ন জায়গা যেখানে পানি জমে থাকে সেসব যায়গা পানি পরিষ্কার করা হয়। এতে করে মশা জন্মানোর কোন সম্ভবনা থাকে না। ডেঙ্গু জ্বর এডিস মশার কামড়ে হয় এবং এডিস মশা ছাড়াও আরও বিভিন্ন ধরনের মশা রয়েছে। আজকে সেসব মশাদের সম্পর্কে জানব।
জ্বরের মশাঃ
এই মশার কারনে পীত জ্বর হয়ে থাকে। এরা ক্ষুধার্ত থাকে এবং রক্ত পান করে। তবে এদের লালাতে বিভিন্ন জীবনু থাকে যা পরবর্তীতে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া অথবা জিকা ভাইরাসে রূপ নেয়। এরা দিনের বেলা কামড়ায় থাকে এবং নগর এলাকায় এদের দেখতে পাওয়া যায়। এরা বেশিভাগ বাসা বাড়িতে থাকে এবং মানুষকে কামড়িয়ে থাকে।
এশিয়ান টাইগার মশাঃ
এডিস মশারই অন্য একটি প্রজাতি এশিয়ান টাইগার নামে পরিচিত। এরা ডেঙ্গু চিকুনগুনিয়া ছাড়াও ড্রাসোফিলাস নামে রোগের বাহক হিসাবে কাজ করে। কোন রোগের বাহক বলতে মূলত ঐ মশার কামড়ে উক্ত রোগে আক্রান্ত হওয়াকে বুঝায়। কেননা এদের শরীরে এই রোগের জন্য জীবানু আছে যা রক্ত খাওয়ার সময় মানুষের শরীরে প্রবেশ করে এবং বংশবিস্তার করে রোগ ছড়ায়। এদের আমেরিকা, ইউরোপ, আফ্রিকা এবং কিছু দ্বীপে দেখতে পাওয়া যায়। এশীয় অঞ্চলের মধ্যে এদের শুধুমাত্র ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায়।
অ্যানোফিলিস মশার কামড়ঃ
এরা ভাসমান জায়গায় ডিম পাড়ে। এছাড়াও অন্যান্যদের মত পানিতে বংশ বিস্তার করে এবং বেড়ে উঠে। এছাড়াও স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশকী একসাথে ৫০-২০০ টি ডিম পাড়ে থাকে। তবে এত ডিম পাড়তে এদের ২-৩ দিন সময় লাগে। এদের কামড়ে ম্যালেরিয়া রোগ হয়। ম্যালেরিয়া রোগ হয় মশার কামড়ের কারনে। এই মশা শুধুমাত্র রাতের বেলা কামড় দিয়ে থাকে। মশাদের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি বিশেষভাবে লক্ষনীয় যে, কিছু মশা দিনের বেলায় কামড়ায়; আবার কিছু মশা রাতের বেলা কামড়ায়। কখনই এই নিয়মের ব্যাত্যয় ঘটে না।
সাউদার্ন মশাঃ
এদের বৈজ্ঞানিক নাম কিউলিক্স মশা। এরা পাখি এবং মানুষ সহ অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রানীদের রক্ত খেয়ে থাকে। এরা ট্রপিক্যাল এবং সাব-ট্রপিক্যাল অঞ্চলে এরা এদের বাসা বানিয়ে থাকে। এদের নীলনদের আশেপাশের অঞ্চলগুলোতে এদের দেখতে পাওয়া যায় এই কারনে এরা নীল নদের এলাকায় নাইল ভাইরাস নামের পরিচিতি লাভ করেছে।
লবনাক্ত এলাকার মশাঃ
এদের আটলান্টিক মহাসাগরীয় অঞ্চলে কানাডা এবং ফ্লোরিডার উপকূলে এদের দেখতে পাওয়া যায়। অন্যান্য মশা ঘুরে বেড়ানো পছন্দ করলেও এরা ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করে না। তবে মাঝে মাঝে রক্ত খোঁজার জন্য এরা ৪০ মাইল পর্যন্তও উড়ে থাকে।
মৌমাছি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন
পরিশেষে, মশা সম্পর্কে অনেক কিছু জানা গেল। কিন্তু বিভিন্ন প্রজাতির মশা সম্পর্কে জানা গেল। মশা এবং মশার কারনে সৃষ্ট সমস্যা এবং রোগ সম্পর্কে জানতে আমাদের সাথেই জানুন এবং আপনাদের মন্তব্য কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে আমাদের সাথে শেয়ার করুন।ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।