কীটপতঙ্গ মানুষের উপকার করার চেয়ে ক্ষতিই করে বেশি। এই কারনে মানুষ কীট-পতঙ্গকে খুব একটা বেশি পছন্দ করে না। কিন্তু এত কিছুর পরও পরিবেশের উপর যথেষ্ট প্রভাব ফেলে। বন্য প্রানী হতে মানুষ সাবধানে থাকতে পারলেও কিন্তু কীটপতঙ্গের হতে সহজে সাবধান হতে পারে না। পোকামাকড়ের মধ্যে ট্যারেন্টুলা মাকড়সাকে নিশাচর প্রানীদের তালিকায় রাখা হয়েছে।
তবে এই মাকড়সা নিয়ে ডিসকভারি চ্যানেলে বেয়ার গ্রেইল এর অনেক ডকুমেন্টরিতে উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। তবে এমন অনেক কীট-পতঙ্গ থেকে সাবধান থাকার পরও প্রায় সময় আমাদের পোকা-মাকড়ের কামড় খেতে হয়। তবে এসবের মধ্যে আরও এমন অনেক কীটপতঙ্গ আছে যাদের কামড় অনেক পেইনফুল। আজকে আমরা সেই কীটপতঙ্গ সম্পর্কে জানব যার কামড়ে একটু বেশিই পেইন পাওয়া যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক।
পাখি না মাকড়সাঃ
এদের দেখে মাকড়সার মত মনে না হলেও এদের প্রকৃত অর্থে মাকড়সা এর অন্তর্ভূক্ত। ট্যারেন্টুলা নামক এই পতঙ্গের ছবি দেখে বড় ডাঁশ আকৃতির মাছির মত দেখায়। এদের বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী দেখতে মাছির মত কিন্তু অভ্যান্তরীন বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী এরা পতঙ্গের বা মাকড়সা ক্যাটাগরিতে পড়ে। এদের দক্ষিন আমেরিকায় দেখতে পাওয়া যায়। এদের ধরলে বেশীভাগ সময়ই এরা পালানোর চেষ্টা করে।
খাদ্যাভাসঃ
প্রাপ্ত বয়স্ক ট্যারেন্টুলা তাদের শরীরের জন্য পুষ্টি সংগ্রহ করে নেকটার নামক মোম জাতীয় পদার্থ থেকে।এটা তখন সম্ভব হয় যখন পর্যাপ্ত পরিমান খাবারের সরবারহ থাকে। তবে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিলে স্ত্রী পতঙ্গরা তাদের বাচ্চাদের খাবারের জন্য সংঘর্ষ করে থাকে। এদের যে ধরনের হুল বা শুঙ থাকে তা অত্যান্ত ধারালো এবং যে কোন কিছুর সংস্পর্শে আসলে সাধারনত সংস্পর্শে আসা বস্তুরই ক্ষতি হয়। এই হুল গুলোতে বিষাক্ত পদার্থ থাকে।
কামড়ালে মানুষ চিৎকার করে কেনঃ
এই পৃথিবীতে মানুষ এবং অন্যান্য মেরুদন্ডী প্রানীদের জন্য এর চেয়ে বেশী কষ্ট দায়ক কিছু হতে পারে না।কারন অন্য যে কোন প্রানী কামড় দিক অথবা হুল ফুটিয়ে দিক না কেন এত বেশি মাত্রায় অসহনীয় ব্যাথা হয় না। সারা বিশ্বব্যাপী এক ধরনের প্রতিযোগিতা অথবা এক রকমের জরিপ করা হয়েছে। সেখানে সবচেয়ে বেশি ব্যাথা দেওয়া প্রানীদের তালিকায় এর স্থান দ্বিতীয়। প্রথম স্থানে রয়েছে দক্ষিন আমেরিকার বুলেট অ্যান্ট। এই কারনে বলা হয়েছে যে এরা কামড়ালে মানূষ ব্যাথার চোটে চিৎকার করে থাকে।
কেন এদের কীটপতঙ্গের চ্যাম্পিয়ন বলা হয়ঃ
কেউ যদি এদের কোন ভাবে বিরক্ত না করে থাকে তাহলে এরা সহজে কারও উপর আক্রমন করে না। বরং এরা অত্যান্ত নিরীহ প্রকৃতির এবং উস্কানি না দিলে এরা সর্বদাই শান্তশিষ্ট থাকে। আমাদের চারপাশে মৌমাছি আছে সেক্ষেত্রেও এমন বিষয়ই লক্ষ্য করে থাকে। মৌচাকের আশেপাশে চুপচাপ ঘরে বেড়ালে তেমন কোন সমস্যা হয় না এবং সহজে কামড় দেয় না। কিন্তু ভুল করেও যদি কেউ ঢিল মারে এবং তারপর মৌচাকের আশেপাশে থাকে তাহলে তার শরীর মৌমাছির কামড়ে ফুলে উঠে ছাড়া উপায় নেই। উজ্বল কমলা রঙের প্রজাতির পাখা থাকে এবং এরা অন্যান্য প্রজতির চেয়ে শিকারীদের জন্য একটু বেশীই বিপদজনক প্রমান হয়। এদের হুল থাকার পরও এটিই এদের প্রাথমিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয় না। তবে এদের শরীরের শক্ত কাঠামো কবচের মত কাজ করে থাকে। এবং শিকারীর শরীরে বিষ ইনজেক্ট করার ক্ষেত্রে সাপোর্ট হিসেবে কাজ করে থাকে।
যে কোন মেরুদন্ডি প্রানীকে বিষ হুলের মাধ্যমে ইনজেক্ট করার পর যখন তীব্র ব্যাথা অনুভূত হয় তখন স্বাভাবিক ভাবেই মানুষের হাত সেটিকে মারার চেষ্টা করবে। এটিকে রিফ্লেক্স বলে থাকে। এই সময় বেশী ভাগ কীটপতঙ্গ মারা পরার প্রবনতা বেশী থাকে। শরীরের শক্ত কাঠামো বা কবচ এই সময় শরীরের ক্ষতি হতে সম্পূর্ন শরীরকে রক্ষা করে। এভাবে তারা পালিয়ে যায়।
পরিশেষে এক বিশেষ ধরনের কীটপতঙ্গের সম্পর্কের বিচিত্র কিছু তথ্য জানা গেল। এই রকম আরও কীটপতঙ্গের সম্পর্কে অজানা বিশেষ তথ্য জানার জন্য আমাদের সাথেই থাকুন এবং আপনার মূল্যবান মন্তব্য কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে আমাদের সাথে শেয়ার করুন। লেখাটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন এবং সবাইকে জানতে সহযোগিতা করুন।