সুস্বাদু মাছ বাংলার মানুষের সাধারন খাদ্য।বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ মায়ানমার এবং ভারত।এছাড়া বাংলাদেশ সীমান্তের দক্ষিন পাশে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত।আমাদের দেশের অর্থনীতি বৃহৎ অংশ এই বঙ্গোপসাগরের উপর নির্ভর করে।বাংলাদেশ নদী-মাতৃক দেশ হওয়ায় মানুষদের জীবন জীবিকা নদীর উপরও নির্ভরশীল।জেলে নদীতে-সাগরে মাছ ধরে এবং কৃষকরা মাঠে ধান আবাদ করে খাদ্য শস্য উৎপাদন করে থাকে।এজন্য বাঙালিরা অর্থাৎ আমরা “মাছে ভাতে বাঙালি” বলা হয়।
বাংলাদেশের বুকের উপর দিয়ে প্রায় ৭০০ নদী প্রবাহিত হয়েছে।এক্ষেত্রে অবশ্যই ছোট এবং মাঝারি নদী গুলো বড় নদীতে মিলিত হয়েছে।একই ভাবে বড় বড় নদীগুলো বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে।একাধিক নদী একে অপরের সাথে মিলিত হয়ে মোহনার সৃষ্টি হয়েছে।এসব জায়গায় এক নদী অপর নদীর সাথে মিলিত হয়ে মাছদের প্রজনন ক্ষেত্র হিসাবেও ব্যবহৃত হয়। আমাদের জাতীয় মাছ ইলিশ চাঁদপুরে এবং পদ্মা নদীতে পাওয়া যায়।
এছাড়ও আরও অনেক ধরনের মাছ আমাদের দেশে পাওয়া যায়।রুই, কাতলা,মৃগেল,পুটি, ইলিশ, বোয়াল, চিতল সহ ইত্যাদি প্রজাতির মাছ পুকুর এবং নদীতে পাওয়া যায়।সামুদ্রিক মাছের মধ্যে টুনা,রুপচাঁদা, ডলফিন,হাঙ্গর ইত্যাদি মাছ বঙ্গোপসাগরে পাওয়া যায়।অগভীর জলের মাছ মাঝে মাঝে নদীতেও দেখতে পাওয়া যায়।আজকে আমরা আমাদের দেশি মাছ সম্পর্কে জানবঃ
সুস্বাদু মাছ ইলিশঃ
অন্যান্য মাছের চেয়ে ইলিশ সবচেয়ে বেশি পছন্দের এবং জনপ্রিয় মাছ।ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ এবং সারা বছরই কম-বেশি ইলিশের চাহিদা থাকে।পদ্মা নদী ইলিশের অভয়ারন্য। এখানেই সবচেয়ে বেশি ইলিশ পাওয়া যায়।এদের ওজন ২.৫ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।লম্বায় এরা ২৫-৩০ সে.মি।এরা দ্রুত গতিতে সাঁতার কাটতে পারে।একই সাথে ২ বছরে এরা প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে যায়।ইলিশের প্রজননের ঋতুতে ইলিশ ধরা নিষেধ থাকা।এ সময় তাদের ধরলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
রুই মাছঃ
বাজারে এবং আমাদের বাড়ির আশেপাশে পুকুররে এদের পাওয়া যায়।এই সুস্বাদু মাছ যে কেউ পছন্দ করে এবং সকলের পছন্দের খাদ্য তালিকার শীর্ষে অবস্থান করে।রুই মাছ শুধু বাংলাদেশ নয় মিয়ানমার এবং পাকিস্তানে উৎপাদন হয়।এই মাছকে পুকুর,হ্রদ, নদী এবং মোহনাতে পাওয়া যায়।মিঠা পানির মাছ কখনই লোনা পানিতে গিয়ে স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরা করতে পারে না।ফলে বিভিন্ন প্রজাতির বিভিন্ন মাছ ভিন্ন পরিবেশে ভিন্ন বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন হয়ে বড় হয়।
কাতল মাছঃ
কম-বেশি সকল মানুষের দৈনিন্দন খাদ্য তালিকায় এদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।কিন্তু বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে কাতল মাছ রুই মাছের চেয়ে সামান্য মোটা আকৃতির।এদের পেটের মাঝ বরাবর বেশ প্রশস্ত।রুই মাছের মত এরাও বাংলাদেশ,পাকিস্তান,মিয়ানমার ছাড়াও ভারত এবং নেপালেও এদের দেখতে
পাও যায়।ভারতীয় উপমহাদেশের অন্য়তম সুস্বাদু মাছ এটি।মাছদের জন্য বর্ষাকাল প্রজননের উপযুক্ত সময়।অন্যান্য মাছের চেয়ে এরা বেশি ডিম দিয়ে থাকে।রুই এবং কাতল উভয়ই সুস্বাদু মাছ।
বোয়াল মাছঃ
মিঠা পানির মাছের মধ্যে এদের বাহিরের আকার আকৃতি সামুদ্রিক হাঙ্গরের মত।এজন্য এদের মিঠা পানির হাঙ্গর বলা হয়।ভারতীয় উপমহাদেশ সহ ইন্দোনেশিয়াতেও এদের দেখতে পাওয়া যায়।এপ্রিল থেকে আগষ্ট মাস এই সময় বোয়াল মাছের প্রজননের সময়।এদের মুখে গোঁফ আছে।এসব মাছ বয়স্ক হলে এদের ওজন ২৫-৩০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।এরা মাংশাসী মাছ। সামুদ্রিক মাছ সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন
কৈ মাছঃ
মাছ ভাজি কারও পছন্দ হলে কৈ মাছের কোন তুলনা নেই।কেননা এই মাছ ভাজি করে খেতেই ভাল লাগে।এই মাছের শক্তি অন্যান্য মাছের চেয়ে বেশি।অন্যান্য মাছকে যে পরিমান আঘাত করলে সহজে মারা যায় ঠিক সমপরিমান আঘাত করলে সহজেই মৃত্যুবরন করে না বা অবচেতনও হয় না।এজন্য মানুষ কিছু ক্ষেত্রে বলে যে,”কৈ মাছের প্রান”।অন্যান্য মাছের চেয়ে এদের শক্তি বেশি হওয়ায় এরা লাফায় বেশি।এদের পাখনা অনেক শক্ত ধরনের হয়।
পরিশেষে আরও অনেক ধরনের মিঠাপানির সুস্বাদু মাছ আছে যা আমরা চাষ করি এবং খেতে পছন্দ করি।এই জানা মাছের সংখ্যা অগিনত এবং অজানা মাছের সংখ্যা আরও বেশি।তাই এদের সম্পর্কে এক আর্টিকেলে জানা সম্ভব নয়।এই সকল মাছ এবং অন্যান্য প্রানীদের সম্পর্কে নতুন কিছু জানতে আমাদের সাথেই থাকুন এবং আপনাদের মন্তব্য কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে আমাদের সাথে শেয়ার করুন।