You are currently viewing পদ্মা সেতু এর নিচে কি ডলফিনের দেখা মিলবে
  • Post category:মাছ
  • Reading time:2 mins read

পদ্মা সেতু এর নিচে কি ডলফিনের দেখা মিলবে

পদ্মা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নদী এবং এর তীব্র স্রোত বাংলাদেশের অন্য যে কোন নদীর চেয়েও বেশি। এই কারনেই পদ্মা সেতু নির্মাণ করা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। পদ্মা সেতুর কারনে দক্ষিণবঙ্গের সাথে অন্যান্য জেলার আর্থিক সামাজিক ও অন্যান্য আরো সকল ক্ষেত্রে যোগসুত্র নতুন করে গড়ে উঠেছে  এবং পূর্বের তুলনায় যাতায়াত অনেক গতিশীল হবে। পূর্বে প্রতিকূল আবহাওয়ায় এপার থেকে ওপারে যাতায়াত করা সহজ ছিল না। যে কোন কাজ করতে অনেক বেগ পেতে হত যা ব্যাবসা বানিজ্যে নেগেটিভ প্রভাব ফেলত। কিন্তু পদ্মা সেতু হওয়াতে বর্তমানে এই সমস্যাটা দূর হয়েছে।


মৎস্য অর্থনীতিঃ

ভারতের গঙ্গা নদী বাংলাদেশে ঢোকার পর পদ্মা নামে প্রবাহিত হয়েছে। পদ্মার ইলিশ বিখ্যাত এবং সারাদেশে এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। পদ্মা সেতু নির্মাণের কারণে মৎস্য ব্যবসায়ীরা আর্থিক ও ব্যাবসায়িক ভাবে যথেষ্ট বুষ্ট আপ পেয়েছে। এখন তারা অতি অল্প সময়ে সহজেই রাজধানীসহ অন্য জেলাগুলোতেও নিশ্চিন্তে ব্যবসা করতে পারবে এবং পদ্মার ইলিশ এখন আপনার হাতের নাগালে সহজেই পাবেন।

পদ্মা নদীর ইলিশ বলতে আমরা মিঠাপানির ইলিশ বুঝি। কারন সমুদ্রের পানি লবনাক্ত কিন্তু নদীর পানি তেমন লবণাক্ত হয় না। নদী এবং সমুদ্রের মিলনস্থলে কিছুটা লবনাক্ত হয় এছাড়া বাকি অংশে মিঠা পানিই থাকে। সমুদ্রের মাছের প্রজননের সময় নদীতে আসে, ডিম পারে আবার পুনরায় সেগুলো সমুদ্রে যায়। এর কারন হচ্ছে ডিম গুলো সমুদ্রের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে তীব্র স্রোতের কারনে। সমুদ্রের তুলনায় নদীর পানির স্রোত কম হয়।



আবার নদী যে স্থানে গিয়ে সমুদ্রে মিলিত হয়েছে সে অঞ্চলের পানির স্রোত বেশি হয় এবং এই অঞ্চলকে মোহনা বলা হয়। মোহনাতে মাছের পরিমান বেশী থাকে। কেননা দুটি বা তার বেশী সংখ্যক নদী হতে মাছ এখানে আসে। অনেক সময় তিনটি নদীর মিলিত হয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হয় এবং মোহনার রূপ নেয়। পদ্মা-মেঘনার সাথে চাঁদপুরে মিলিত হয়েছে। চাঁদপুর ইলিশের জন্য বিখ্যাত। এছাড়াও পদ্মা যমুনার সাথে গোয়ালন্দে মিলিত হয়েছে। যমুনা নদীর উপর যমুনা সেতু এর মাধ্যমে নিরাপদে সড়ক পথে যাতায়াত করা যায়।

পদ্মা সেতু এর নিচে কি ডলফিন বা শুশক এর দেখা মিলবে?

ডলফিন সমুদ্রের নিরীহ এবং মানুষের পছন্দনীয় মাছের তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করে। এরা দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি ভাবে মানুষের সাথে ও মিশুক প্রকৃতির। মিশুক প্রজাতির হওয়ার কারনে এদের নাম দেওয়া হয়েছে শুশক। আমাদের দেশেও বঙ্গোপসাগরে ডলফিন এর দেখা মেলে। তবে এর জন্য একটুও গভীর সমুদ্রে যেতে হয়। আপনি যদি সোয়াচ অফ নো গ্রাউন্ড (Swatch of No Ground) যা বঙ্গোপসাগরের একটি নির্দিষ্ট জায়গার নাম। সেখানে ডলফিন এবং ক্ষুদ্র তিমিরও দেখা পাওয়া যায়।



আমরা শুশক নামের প্রানীর সাথে খুবই পরিচিত এবং এদের দেখতে অনেকটাই ডলফিন এর মত লাগে। বাস্তবিক অর্থে এরাই ডলফিন। কিন্তু অন্যান্য প্রজাতির ডলফিন আমরা টেলিভিশন কিংবা সমুদ্রসৈকতে পানিতে সাঁতার কাটা অবস্থায় দেখে থাকি; এরা অতো বড় না। এই কারনে এদের দেখে ডলফিন এর মত মনে হয়। সামুদ্রিক প্রানী সুন্দর লাগার অন্যতম কারন হচ্ছে ওই প্রাণীটি যে অঞ্চলে থাকে সেই অঞ্চলের সমুদ্রের পানির রং। আর এ কারণেই অনেকের কাছে অন্যদেশের ডলফিন সুন্দর লাগে কিন্তু নিজেদের দেশের ডলফিন কিংবা তার বাচ্চা ভালো নাও লাগতে পারে। প্রজাতিভেদে ডলফিনের সৌন্দর্য নির্ভর করে থাকে। তবে আমাদের দেশে যেসব ডলফিন দেখতে পাওয়া যায় এরা গঙ্গা নদীর মাধ্যমে, পদ্মাসহ অন্যান্য নদীগুলোতে চলে আসে। চাঁদপুর মেঘনা; এমনকি ব্রহ্মপুত্র নদে এই ডলফিন বা শুশক জাতীয় মাছের দেখা মিলে থাকে। ডলফিন গুলোর মধ্যে বোটল নোজ ডলফিন বেশি সুন্দর এবং এদের নাক অনেক লম্বা প্রকৃতির।

সুন্দর ডলফিন
ছবিঃ মাঝ সমুদ্রে ডলফিন

আমাদের দেশে চার প্রজাতির ডলফিন দেখতে পাওয়া গেলেও এদের মধ্যে দুটি প্রজাতি বিলুপ্তপ্রায়। এই কারনেই যে সব প্রজাতির ডলফিন আমাদের দেশে আছে তা শুধু বঙ্গোপসাগরে দেখতে পাওয়া যায় মাঝেমধ্যে নদীতে দেখা মিলে। পদ্মা নদীর বুক চিরে পদ্মা সেতু গড়ে উঠেছে। আপনাদের মনে প্রশ্ন হতেই পারে পদ্মার ইলিস তো অনেক বিখ্যাত কিন্তু ডলফিন কি পদ্মা নদীতে দেখতে পাওয়া যাবে?



প্রকৃতঅর্থে এটার ওপর মানুষের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। তবে হ্যাঁ দেখার সুযোগ আছে কিন্তু কোথায়, কোন স্থানে, পদ্মা নদীর কোন পাশে শুশকের দেখা মিলবে এর নির্দিষ্ট কোন সময় কিংবা স্থান নেই। তবে নিরাশ হওয়ার কিছু নেই কক্সবাজার এ ডলফিনের দেখা পাওয়ার সমূহ সম্ভবনা আছে।

কোথায় দেখা যাবে ডলফিনঃ

সর্বপ্রথম সহজ উত্তর হল সমুদ্রে দেখা মিলবে ডলফিনের এবং আমাদের দেশের কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, বঙ্গোপসাগর, এবং বড় বড় নদী গুলোতে এদের দেখা মিলে। এছাড়াও  বিভিন্ন ধরনের ওয়াটার পার্ক কিংবা অ্যামিউজমেন্ট পার্কে ডলফিন এর দেখা মেলে। এখানে ডলফিন রাখা হয় এবং মানুষের বিনোদনের জন্য বিভিন্ন ধরনের কলাকৌশল দেখায়। ডলফিন কে ট্রেইন করে বিভিন্ন ধরনের কলা-কৌশল দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়। ডলফিন মানুষের সাথে খেলা করতে পছন্দ করে এই কারনে এরা মানুষের সাথে মিশুক প্রকৃতির। ডলফিন মিশুক প্রকৃতির সুন্দর প্রানী হওয়ার কারনে এদের ছোট বাচ্চাও পছন্দ করে। ছোট বাচ্চাদের জন্য এই মাছ ঝুঁকিপূর্ন নয়।



পরিশেষে ডলফিন নিরীহ প্রকৃতির সুন্দর প্রানী এবং এদের শরীরে লোম মসৃন প্রকৃতির। পদ্মা নদীতে ইলিশ ছাড়াও অন্যান্য আরও প্রজাতির মাছ দেখতে পাওয়া যায়। আমরা মাছে ভাতে বাঙালি। আমাদের প্রধান খাবার ভাত এবং মাছ। পহেলা বৈশাখ এর  সময়  আমরা পান্তা ইলিশ সবাই খেয়ে থাকে বাংলা নববর্ষকে বরন করে নেওয়ার জন্য। পদ্মার ইলিশ সারা বাংলায় বিখ্যাত। আমাদের লেখাটি পড়ে আপনার কেমন লাগল তা কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে জানাবেন। লেখাটি ভাল লাগলে আপনি আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করেন। ততক্ষন পর্যন্ত ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।

Facebook Comments

YappoBD

YappoBD-হলো poshupakhi.com এর একমাত্র স্বত্তাধীকারি। এই ওয়েবসাইটের সকল প্রকার কন্টেন্ট ইয়াপ্পোবিডি কর্তৃপক্ষ দ্বারা লিখিত, পরিমার্জিত এবং এটি ইয়াপ্পোবিডি এর অঙ্গসংস্থান।