বাংলাদেশের দক্ষিনে এবং বঙ্গোপসাগর হতে উত্তর-পূর্ব দিকে এই দ্বিপ অবস্থিত।সেইন্টমার্টিন দ্বীপ বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপের মধ্যে অন্যতম। ৮ বর্গকিলোমিটার বিশিষ্ট এই দ্বিপ কক্সবাজার জেলার টেকনাফ অঞ্চল হতে ৯ কিলমিটার দক্ষিন দিকে এবং মিয়ানমার উপকুল হতে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে নাফ নদীর মোহনায় অবস্থিত। অন্যান্য যে কোন দ্বীপের চেয়ে
প্রাকৃতিক নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই দ্বীপ। মানুষের সারা বছর ভ্রমনের জন্য উন্মুক্ত থাকে। ভ্রমন পিপাসুরা প্রায়ই বেড়াতে যায়। এছাড়ও সাধারন মানুষেরা বছরে ছুটির জন্য একবার হলেও ভ্রমন করে থাকে।মজার বিষয় হল খুলনা কিংবা চট্টগ্রামের কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতে লোনা পানির চেয়ে ডাবের পানি খেতে দারুন লাগে। এজন্য এই এলাকায় ডাবের দাম কম।পর্যাপ্ত পরিমান ডাব পাওয়া যায়।
সেইন্টমার্টিনে প্রচুর পরিমান ডাব তথা নারিকেল পাওয়া যায়। এজন্য সেইন্ট মার্টিন দ্বীপের অপর নাম “নারিকেল জিঞ্জিরা”।এই দ্বীপে শামুক, প্রবাল, শৈবাল, বিভিন্ন রকমের সামুদ্রিক মাছ, উভচর প্রানী, কাকড়া সহ আরও কয়েক ধরনের প্রানীদের দেখা পাওয়া যায়।তবে এই অঞ্চলে সর্বদাই হালকা বাতাস বয়ে থাকে। সামুদ্রিক অঞ্চল কিংবা সমুদ্রের পাশে অবস্থিত এলাকায় এমনটি হয়। সমুদ্র ভ্রমনে গেলে জোয়ার ভাটা সহ আরও নতুন কিছুর এক্সপেরিয়েন্স পাওয়া যায়। আজকে আমরা সেইন্ট মার্টন দ্বীপের প্রানীদের সম্পর্কে জানব।চলুন জেনে নেওয়া যাক।
জিনাইদহ ঘুঘুঃ
কবুতর এবং ঘুঘুর সমগোত্রীয় পাখি এটি।এদের অনেক বৈশিষ্ট্য এদের সাথে মিল থাকলেও অনেক কিছু পার্থক্য দেখা যায়।আমাদের বাড়ির আশেপাশে যে সব ঘুঘু পাখি দেখতে পাওয়া যায় সেসব পাখি হতে এরা কিছুটা আলাদা প্রকৃতির। এদের সেইন্টমার্টিন দ্বীপে পাওয়া গেলেও এরা অ্যানগুইলার জাতীয় পাখি। স্থানীয়রা পাখিটিকে “টারটেল ডাব” বলে ডাকে।পাখিটি আসলেই কবুতরের মতই সুন্দর। এসব সেইন্টমার্টিন দ্বীপ এর মত অন্যান্য কিছু ছোট দ্বীপ রয়েছে যেখানে শুধুমাত্র প্রানীদের বিচরন থাকে।
কাকড়াঃ
আমেরুদন্ডী প্রানীদের মধ্যে সামুদ্রিক এলাকায় কাকড়া উল্লেখযোগ্য প্রানী।এসব কাকড়াই মানুষের জন্য অনেক আকর্ষনীয় এবং আগ্রহের কারন হয়।যেমনটি কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে লাল কাকড়া অনেক উল্লেখযোগ্য আকর্ষন।ঠিক তেমনি ভাবে স্পঞ্জ, শিল কাকড়া দেখতে পাওয়া যায়।এদের মধ্যে সন্ন্যাসী কাকড়া উল্লেখযোগ্য।
বড় বড় কাকড়া সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন
সামুদ্রিক মাছঃ
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ হওয়ায় সকল নদী গিয়ে সাগরে মিলিত হয়। অর্থাৎ সকল নদ-নদী গন্তব্য বঙ্গোপসাগর।এই বঙ্গোপসাগর প্রানীদের ভান্ডার।কেননা এখানে যেমন প্রানীদের জন্য পর্যাপ্ত প্রাচুর্জ রয়েছে একই ভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকাও এই বঙ্গোপসাগরের উপর নির্ভর করে।এখানে পরী মাছ, প্রজাপতি মাছ, বোল মাছ, সুই মাছ, লাল মাছ সহ আরও অনেক প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়।
কাছিমঃ
এই দ্বীপে সবুজ সাগর কাছিম এবং জলপাই রাঙা সাগর কাছিম দেখতে পাওয়া যায়।এদের গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায়।প্রায় ৮০ টি দেশের উপকুলে দেখতে পাওয়া যায়। এই কচ্ছপগুলো অনেক বেশী দিন বাঁচে।সেইন্টমার্টিন দ্বীপ এসব প্রজাতির কচ্ছপ ডিম পাড়ার জন্যও ব্যবহার করে।
সেইন্টমার্টিন দ্বীপের প্রবালঃ
সেইন্টমার্টিন দ্বীপ এর পর্যাপ্ত পরিমানের প্রবাল পাওয়া যায়।এই দ্বিপে প্রায় ৬৬ প্রজাতির প্রবাল দেখতে পাওয়া যায়।সামুদ্রিক প্রবালের নিকট আত্মীয় হল সাগর কুসুম।এরা দলবদ্ধ হয়ে কলোনি আকারে থাকা পছন্দ করে।এজন্য এরা একসাথে বেশি সংখ্যক এক জায়গায় থাকে।পৃথিবীর একমাত্র প্রবাল দ্বীপ হল বাংলাদেশের সেইন্টমার্টিন দ্বীপ।
পরিশেষে, সেইন্টমার্টিন দ্বীপের প্রানীদের সম্পর্কে আরও অনেক জানার আছে। আপনাদের সেইন্টমার্টিন ভ্রমনের অভিজ্ঞতা কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে আমাদের সাথে শেয়ার করুন এবং আরও অনেক প্রানীদের সম্পর্কে জানতে আমাদের সাথেই থাকুন। ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।