অমর প্রানী, সৃষ্টির শুরুতে এরা কেমন ছিল? সৃষ্টির আদিকাল থেকেই প্রানীর উৎপত্তি হয়নি বরং ধীরে ধীরে প্রানের উদ্ভব ঘটেছে। প্রটোপ্লাজমের মধ্যে সর্বপ্রথম জীবনের সঞ্চার ঘটেছে। এভাবে মিলিয়ন মিলিয়ন বছরের বিবর্তনের পর আজকের প্রানীদের আবির্ভাব। প্রানের অস্তিত্ব যেমন রয়েছে তেমনি ভাবে প্রানের একটি আয়ুষ্কালও রয়েছে। এই বিষয়টিই মূলত জীবনকাল। সকল প্রানীদের এক সময় মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করতে হবে। এজন্য প্রানী বা জীবদের যেমন জন্ম আছে তেমনিভাবে মৃত্যুও আছে।
কোন প্রানী বা জীব যদি মনে করে সে আজীবন বেঁচে থাকবে তাহলে সে বোকার স্বর্গে বাস করছে। আজ পর্যন্ত ইতিহাসে যত দুষ্কৃতকারী এমন দাবি করেছে তেমনি তারা সময়ের বিবর্তনে ধ্বংস হয়েছে। টাইটেল দেখে এমনটা ধারনা আসা স্বাভাবিক যে চিরঞ্জীবী প্রানীরা কোন গুলো? বাস্তবিক অর্থে কিছুকিছু প্রজাতির প্রানী যুগের পর যুগ বা মিলিয়ন বছর পূর্ব হতে এখন পর্যন্ত সার্ভাইভ করছে। আজকে আমরা এমন সব প্রানীদের সম্পর্কে জানব। চলুন জেনে নেওয়া যাক।
রিওয়াইন্ড জেলিফিশঃ
ধুমি নামক এক প্রজাতির জেলীফিশ আছে যারা মৃত্যুকে ধোকা দিয়ে থেকে পুনারায় নতুন জীবনের দিকে যাত্রা করে। এরা অসুস্থ কিংবা আহত হলে স্বাভাবিক ভাবে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাবে। এমনটিই স্বাভাবিক নিয়ম। কিন্তু ইনজুরি হলে এদের কিছু সময়ের মধ্যে অনেকটাই শিশু অবস্থায় অটোমেটিক পৌছে যায়। অর্থাৎ, জীবন চক্র সম্পুর্ন বীপরিত দিকে চলে থাকে। এভাবে এসব প্রানীর সংখ্যা যেখানে কমতে থাকা উচিত ঠিক সেখানে প্রজাতির সংখ্যা বেড়েই চলছে। এজন্য এদের অমর প্রানী বলা হয়।
এভারগ্রিন চিংড়িঃ
অন্যান্য প্রানীদের একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত প্রজনন ক্ষমতা থাকে।কিন্তু এই প্রানী বা চিংড়ির ক্ষেত্রে জন্মের পর থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এরা প্রজনন করতে সক্ষম। প্রজনন এই বিশেষ ক্ষমতার কারনে এদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে করে কোন প্রানী থেকে এদের জন্ম তা সহজে বুঝা যায় না। আরেকটি গুরুত্বপূর্ন তথ্য এদের জন্মের পর শারীরিক বৃদ্ধি দ্রুত হয়। অর্থাৎ জন্মের পর এরা অল্প সময়েই প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে যায়। এজন্য এদের অমর প্রানী যারা সহজে মরে না এর সাথে তুলনা করা হয়।
অমর প্রানীঃ
ধীর স্থির হলে প্রতিযোগিতায় সহজে জেতা যায়। এই প্রবাদ বাক্যটি যথার্থ সত্য। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এরা বেঁচে আছে। নিউ ইয়র্কের একটি গবেষনায় দেখা গিয়েছে কচ্ছপের যদি শিকার এবং রোগজীবানু প্রতিরোধ করতে পারে তাহলে এরা অনির্দিষ্টকালের জন্য আজীবন বেঁচে থাকতে পারে।
আজীবন বেঁচে থাকার জন্য এসব অমর প্রানীর মধ্যে কচ্ছপ অনেক দিন বেঁচে থাকে। জলহস্তী সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন
পাতা কৃমিঃ
এদের দেখতে পাতলা টিস্যু পেপারের মত। এদের প্রজনন ক্ষমতা অত্যাধিক বেশি এবং কেউ যদি এদের কাঁচি কিংবা অন্য কিছু দিয়ে কেটে ফেলার চেষ্টা করে তাহলে এদের দুটি আলাদা প্রানীদের সৃষ্টি হয়। এই অত্যাধিক মাত্রায় প্রজনন ক্ষমতা হওয়ায় এরা সহজে মৃত্যুকে ফাকি দিতে পারে। এটী নটিংহামের বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষনায় দেখা গিয়েছে।
তিমিঃ
স্তন্যপায়ী প্রানীদের মধ্যে এরা সবচেয়ে বেশি প্রাচীন প্রকৃতির। পপুলার সাইন্স নামের এক গবেষনায় দেখা গিয়েছে কিছু কিছু প্রজাতির তিমি মাছ ৭০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে। ধারনা করা হয়, বো হেডেড প্রজাতির তিমি মাছ ২১১ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে। এই দীর্ঘ সময় ধরে বেঁচে থাকার জন্য এরা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রানী বা biggest living animal on the planet বলা হয়ে থাকে।
পরিশেষে, অমর প্রানীদের সম্পর্কে আমরা অনেক কিছুই জেনে থাকলাম। এমন আরও প্রানীদের সম্পর্কে জানার জন্য আমাদের সাথেই থাকুন এবং আপনাদের মন্তব্য আমাদের সাথে কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে শেয়ার করেন। আপনাদের নতুন কোন তথ্য জানার থাকলে আমাদের জানাতে পারেন। আমদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।