পেঙ্গুইন চালাক প্রানী কিভাবে? পেঙ্গুইন এর নাম শুনে নি এমন লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। পেঙ্গুইন এন্টার্কটিকা অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায়। এই মহাদেশ বরফে আবৃত থাকে সব সময়। কিন্তু এই মহাদেশে মানুষ খুব কমই বসবাস করতে পারে। মানুষের বসবাসের অনুপযোগী হওয়ার একমাত্র কারন হচ্ছে সেখানের তাপমাত্রা। তাপমাত্রা সবসময় মাইনাসের নিচে থাকে। এবং এই মহাদেশ সর্বদাই বরফে আবৃত থাকে।
তবে এই খানে কোন মানুষের আনাগোনা এবং বসবাসের সুব্যবস্থা না থাকলেও এরা সম্পূর্ন পৃথিবীর আবহওয়া এবং জলবায়ুর উপর প্রভাব ফেলে। গ্লোবাল ওয়ার্মিং অনেক গুরুত্বপূর্ন ইফেক্ট ফেলে এই মহাদেশের উপর। গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর জন্য এই মহাদেশের বরফ গলে পানিতে পরিনত হয়। এই কারনে সমুদ্রের পানির লেভেলের উচ্চতা বাড়তে থাকে।আজকে আমরা পেঙ্গুইনের সম্পর্কে কিছু অজানা ফ্যাক্ট সম্পর্কে জানব।
চালাক প্রানীঃ
পেঙ্গুইন কখনই একা চলাফেরা করে না। তারা বরং গ্রুপ অনুযায়ী ঘুরে বেড়ায়। গ্রুপ অনুযায়ী ঘুরে বেড়াতে এবং একত্রে বসবাস করার জন্য এদের কলোনি গড়ে তোলে। এরা বরফের উপর থাকে এবং নিজেদের দুই পায়ের উপর ভর করে হাঁটতে পারে। আবার, পেঙ্গুইন বরফের নিচে শীতল ঠান্ডা পানিতে সাঁতার কাটতে পারে। এদের সাঁতার কাটার প্রক্রিয়াকে র্যাফটিং বলে। আবার বরফের উপর হাঁটার প্রক্রিয়াকে ওড্যাল বলে থাকে। এরা পানির নিচে সাঁতার কাটার সময় নিজেদের একটু ভাঁজ করে নেয়। এতে করে এরা যেমন দ্রুত পানির নিচে চলতে পারে এবং শিকারীর হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে।
উড়ন্ত পাখিঃ
এদের পানির নিচে উড়ন্ত পাখি হিসেবে গননা করা হয়। তবে এই উড়ন্ত পাখি শুধুমাত্র পানির নীচেই দ্রুত উড়তে কিংবা সাঁতার কাটতে পারে। সামুদ্রিক মাছ যেমন পানির নিচে দ্রুত চলাফেরা করে এরাও তেমনি ভাবে পানির নিচে সেভাবেই উড়তে থাকে। এরা নিজেরা গাদাগাদি করে থাকতে পছন্দ করে। এরা বিভিন্ন ঋতুতে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় একত্রিত হয় এবং নিজেদের শরীরের উষ্ণতা বজায় রাখতে সহযোগিতা করে। এরা উভচর বলে এদের শরীরের মধ্যে কাটার পরিবর্তে শক্ত হাড় আছে। এরা নিজেদের ঐ পরিবেশে মানিয়ে নিয়েছে।
বাসস্থানঃ
এদের শরীরের মোটা পালকগুলো এদের শরীর উষ্ণ রাখার জন্য যথেষ্ট নয়। এদের পায়ের নিকটে এক ধরনের গ্রন্থি থাকে যেখান থেকে তৈলাক্ত পদার্থ নিঃসরন হয়। এই তৈলাক্ত পদার্থ সম্পূর্ন শরীরে থাকায় এদের শরীরে যেমন পানির ঠান্ডা লাগে না তেমনি ভাবে পানির কারনে এদের শরীরের পশমগুলো
ভেজা না থেকে সর্বদাই শুষ্ক থাকে। দ্রুত সাঁতার কাটতে এই তৈলাক্ত পদার্থ অনেক ভূমিকা রাখে। পেঙ্গুইন এর এন্টার্কটিকা মহাদেশ, গেলাপোগাস দ্বীপ ছাড়াও নিউজিল্যান্ড, অষ্ট্রেলিয়া, পেরু, চিলি ইত্যাদি দেশের দ্বীপেও এদের দেখা পাওয়া যায়।
দীর্ঘ পথের যাত্রীঃ
আমরা কার্টুনে পেঙ্গুইন কিংবা বরফ আচ্ছাদিত অঞ্চলের বিভিন্ন অ্যানিমেশন দেখে থাকি। কিন্তু কখনই পেঙ্গুইন এবং সাদা ভাল্লুক এক সাথে দেখবেন না। এরা সর্বদাই দুই প্রান্তে থাকে। এ কারনে পেঙ্গুইনের অঞ্চলে সাদা ভাল্লুক দেখা যায় না। পেঙ্গুইন থাকে দক্ষিন মেরুতে এবং সাদা ভল্লুক থাকে উত্তর মেরুতে।
পেঙ্গুইন দীর্ঘ ৬০ মাইল পথ পাড়ি দিয়ে প্রজননের জন্য তাদের ব্রিডিং অঞ্চলে যায়। এদের পা এমন ভাবেই গঠিত যে তারা এত দূর পথ অনায়সেই পাড়ি দেয়। এদের এই পা হাঁটার সময় এবং সাঁতার কাটার সময় অনেক সহযোগিতা করে। ফলে এরা হাঁটে এবং সাঁতার কাটে দীর্ঘ দূরত্ব অতিক্রম করে। এদের পা রাডার হিসেবে কাজ করে।
কিছু কিছু বিজ্ঞানীদের মত পেঙ্গুইনই চালাক প্রানী যারা স্ট্রীমলাইনড এবং সাতার কাটা এদের জন্য যেমন সহজ তেমনি দ্রুত তর। এই কারনে পেঙ্গুইন পাখি পানির নিচে তাদের এলাকায় রাজত্ব করে বেড়ায়। মনের মধ্যে প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক যে পেঙ্গুইন পানির নিচে দ্রুত সাঁতার কাটে নাকি বরফের উপর দ্রুত
হাঁটে? এই বিষয়টি তুলনা করলে দেখা যায় যে এরা পানির নিচের দ্রুঁত সাতার কাটে। তবে দুটি দুই ক্ষেত্র হওয়াই এ ভাবে তুলনা করা ঠিক না। কারন এতে সঠিক রেজাল্ট পাওয়া যায় না।
পরিশেষে, পেঙ্গুইন চালাক প্রানী কি না তা আপনারাই সিদ্ধান্ত নিন। আপনারা আপনাদের মতামত আমাদের সাথে কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে তুলে ধরতে পারেন। পেঙ্গুইন নিয়ে আরও অনেক তথ্য আছে যা আমাদের অজানা। তাই সেই সব তথ্য সম্পর্কে জানার জন্য আমাদের সাথেই থাকুন এবং লেখাটি ভাল লাগলে আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে লেখাটি শেয়ার করুন। এদের সম্পর্কে ভিডিও দেখতে হলে ভিজিট করুন