অনেকের কাছে সুন্দর টিকটিকি এবং কচছপ উদ্ভট চেহারার এবং বিশ্রী দেখতে। কিন্তু কচছপ কারও কারও কাছে ভাল লাগে তাই অ্যাকুরিয়ামে পালন করে। অনেক সুন্দর টিকটিকি দেখতে ভয়ংকর , এ জন্য সবাই টিকটিকি পছন্দ করে না। বিশেষ করে রাতে টিকটিকির সাইজএবং আকৃতি এবং মুখের এক্সপ্রেশন এর জন্য সাধারন মানুষ ভয় পায়। এরা বিভিন্ন ওয়ালে ছুটে বেড়ায় বিপরীতে কচ্ছপ ধীর প্রকৃতির এবং নীতিতে চলাচল করে।
প্রকৃতপক্ষে কচছপ এবং টিকটিকি উভয়ই মানুষের জন্য নিরীহ প্রকৃতির। তবে কিছু কিছু প্রজাতি মানুষের জন্য অনেক সময় আক্রমনাত্মক হয়ে উঠে এবং আক্রমণ করে যে কাউকে অসুস্থ করে ফেলে। কিছু কিছু প্রজাতির টিকটিকি বিষাক্ত এবং আক্রমনাত্মক। এ সব সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত দেওয়া হলঃ
কমোডো ড্রাগন টিকটিকিঃ
পৃথিবীর বর্তমান সময়ে জীবন্ত টিকটিকিদের মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রজাতির টিকটিকি। এরা ইন্দোনেশিয়া কমোডো দ্বীপ এবং তার আশেপাশে দ্বীপগুলোতে বাস করে। এদের বৃহৎ আকৃতি এবং সাইজের এর জন্য ইকো-টুরিস্ট সহ সাধারন মানুষের নিকট অনেক জনপ্রিয়। এরা আত্মরক্ষার জন্য বিশেষ কৌশল ব্যবহার করে। এ কারনে এরা মানুষের কাছে অনেক ইন্টারেস্টিং বিষয়।
এরা লম্বায় ১০ ফিট এবং ওজনে ১৩৫ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। মার্চ-এপ্রিলের দিকে এরা ৯ মিটার গভীর গর্ত করে এবং সেখানে ডিম পাড়ে। এরা অনেক দ্রুত দৌড়ায় এবং মানুষকে আক্রমন করে থাকে। তারা পোকা-মাকড় খায়। এরা শিকারকে ফাঁদে ফেলে তার শরীররের ভিতর বিষাক্ত পদার্থ ঢুকিয়ে দেয়। পৃথিবীর বিশ্রী প্রাণী কোনগুলো তা জানতে ক্লিক করুন
ওয়াটার মনিটরঃ
সুন্দাদ্বীপ এবং বঙ্গোপসাগরের উপকূল সহ শ্রীলংকা এবং চীনের দক্ষিনাংশে এদের দেখা পাওয়া যায়। অন্য মনিটর সুন্দর টিকটিকির মত এদের নখ, চোখ , এবং অনেক লম্বা লেজ আছে। প্রাপ্ত বয়স্ক অবস্থায় এরা ৯ ফিট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। ছোট পোকা-মাকড় থেকে শুরু করে মাকড়সা পর্যন্ত এরা খেয়ে
থাকে। এরা এদের শিকারকে হঠাৎ আক্রমণ করে না। বরং সাঁতার কাটতে, গাছে চড়তে এমনি শিকারের পিছনে দৌড়ায়ে তাদের ধরে থাকে। এরা সুযোগ পেলে মানুষকে আক্রমণ করে থাকে এবং শরীরের মধ্যে বিষ প্রবেশ করে দেয়। এতে মারাত্মক ক্ষতি না হলেও মৃদু ব্যাথা হয় ইনফেকশনে।
গাছন্ত টিকটিকিঃ
এদের ট্রি ক্রোকোডাইল বলা হয়।এরা পাপুয়া নিউ গিনিতে সমুদ্র উপকূল বনে এদের দেখা যায়। এরা মাটি হতে ৬৫০ ফিট উচুতে গাছে চলাফেরা করে এবং ওজনে ৯০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। কমোডো ড্রাগন ওজনে এদের থেকে বেশ বড় হলেও লম্বায় এরা ১৬ ফিট পর্যন্ত হয়ে থাকে। মানুষ এদের মাংস এবং চামড়ার জন্য এদের শিকার করে থাকে। এদের চামড়া দিয়ে কাপড় এবং ড্রাম তৈরী হয়। কিন্তু এরা অনেক আক্রমনাত্মক হওয়ায় এদের শিকার করা অনেকটা কঠিন প্রকৃতির।
ইগুয়ানাস টিকটিকিঃ
মেক্সিকো এবং ব্রাজিলের দক্ষিনাংশের এদের দেখতে পাওয়া যায়। এরা লম্বায় ৬.৬ ফিট পর্যন্ত হয়ে থাকে এবং ওজনে ৬ কেজি। পুকুর কিংবা কোন জলাশয়ের পাশের কোন গাছের ডালে এদের রোদ পোহাতে দেখা যায়। এদের শিড়দাঁড়া বরাবর কাঁটার মত অংশ রয়েছে। স্ত্রী প্রজাতির ইগুয়ানস গুলো ধূসর
বর্নের হয় এবং ওজনে পুরুষদের থেকে অর্ধেক হয়ে থাকে। এদের ২ ধরনের প্রজাতি গেলাপোগাস দ্বিপে বাস করে। এদের শরীরে মৃদু এক প্রকার বিষ উৎপন্ন হয় তা মারাত্মক না হলেও মানুষের অঙ্গ অবস করতে পারে।
মেক্সিকান টিকটিকিঃ
এরা বাকি সব প্রজাতির থেকে একটু বড় আকৃতির। এরা লম্বায় ৩২ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এরা গিলা মনস্টার এর থেকে ঘন কালো প্রকৃতির। তাছাড়া সম্পূর্ন অবয়ব গিলা মনস্টার এর মত। মেক্সিকোতে প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে এদের পাওয়া যায়। এর শরীরের বিষাক্ত পদার্থ নিঃসরন করে যা মানুষের জন্য ক্ষতি করে থাকে।
স্ন্যাপিং কচ্ছপঃ
এরা মিঠা পানির কচছপ। এদের নামকরন হয়েছে কামড়ানোর জন্য। এদের নর্থ আমেরিকার পাহাড়ি অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায়। এরা বৃহৎ আকৃতির এবং আগ্রাসী প্রকৃতির। এদের শরীরের উপর শেল রয়েছে। এদের লেজ একটু লম্বা এবং শরীরের রং অসুন্দর প্রকৃতির। এরা বেশি ভাগ সময় মাটিতে কাঁদার ভিতরে লুকিয়ে থাকে। তবে পানির নিচে এরা আগ্রাসি হয় না বরং ডাঙ্গায় আসে ঘুম পাড়ার জন্য। কচ্ছপ সম্পর্কে আরও জানতে ক্লিক করুন
গিলা মনস্টারঃ
আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া, নেভাডা, অ্যারিজোনার উপকূল বেয়ে গিলা নামক নদীর নাম অনুসারে এর নামকরন হয়েছে। এছাড়া এদের মেক্সিকোর সানোরা এবং সিনোলা অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায়। এরা লম্বায় ২০ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে।
এদের শরীরে সাদা-কালোর মধ্যে ছোপ ছোপ দাগ রয়েছে। এরা মরুভূমিতে বাস করে। গরমের সময় এরা রাতের বেলা শিকার করতে বের হয়। যেসব মনস্টার মোটা তারা তাদের পেটের মধ্যে খাবারকে সঞ্চয় করে রাখে। শীতকালে সে খাবার খেয়ে বেঁচে থাকে।
পরিশেষে এটা বলা যায় যে,সুন্দর টিকটিকি ক্ষতি করলেও খুব বেশি ক্ষতি করতে পারে না। যা ক্ষতি করে তা মৃদু প্রকৃতির । পশুপাখি সম্পর্কে আরও জানতে আমাদের সাথেই থাকুন এবং আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ার পেজে আপনাদের মতামত শেয়ার করতে ভুলবেন না।