খাদ্য প্রানিদের বেঁচে থাকার প্রধান উৎস। প্রানীদের নিয়ে জানা-অজানা অনেক রকম তথ্য রয়েছে। প্রানিদের মধ্যে এমন অনেক প্রাণী রয়েছে যারা ৩০ বছর কোন কিছু না খেয়ে এবং না পান করে বেঁচে থাকতে পারে। কিছু প্রানীর ক্ষেত্রে খাদ্য ব্যাতীত এক-দু দিন চলা সম্ভব। আবার অনেক প্রানী তাদের শারীরিক মেটাবলিজম এর কারনে খাদ্য ছাড়া এক মাস পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। আমরা পশুপাখি তে সর্বদা নতুন নতুন তথ্য জানতে এবং শেয়ার করতে পছন্দ করি।
খাদ্য ছাড়াই যেসব প্রানী দীর্ঘ দিন বেঁচে থাকে তা নিচে দেওয়া হল
বিড়ালঃ
বিড়াল স্বাভাবিক ভাবে যে খাদ্য গ্রহন করে সে ভিত্তিতে একটি বিড়াল খাদ্য না খেয়ে সর্বোচ্চ ২ সপ্তাহ পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। কেননা খাদ্য গ্রহনের পর ঐ খাদ্য বিড়ালের শরীরে শক্তি যোগায়।
মরুভুমিতে খাদ্যঃ
উটকে মরুভূমির জাহাজ বলা হয়। মরুভুমিতে পানি সংকট থাকার কারনে উট তার পেটের ভিতর একটি থলিতে পানি সঞ্চয় করে রাখে। পরে প্রয়োজন অনুযায়ী পানি শরীরের বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে। একই ভাবে খাদ্যও জমা করে রাখে। এভাবে উট না খেয়ে ২ মাস পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।
সাদা হাঙ্গরঃ
দৈত্যকৃতির সাদা হাঙ্গর বছরে প্রায় ১১ টন এর মত খাদ্য খেয়ে থাকে। সাধারণত এরা যখন একবারে খাদ্য খায়; তারপর তা না খেয়ে ৩ মাস পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।
ভাল্লুকঃ
এরা অনেক সময় শীতনিদ্রায় থাকার মত জীবন-যাপন করে থাকে। শীতনিদ্রায় থাকা কালীন এরা ৩ মাস পর্যন্ত না খেয়ে থাকতে পারে। এমন কি ৩ মাস পর্যন্ত এরা কোন কিছু পান করে না মল-মূত্র ত্যাগ করে না। তারা এ সময় শরীর চর্চাও করে না।
পেঙ্গুইনের রাজাঃ
পেঙ্গুইনরা এন্টার্কটিকা অঞ্চলে বাস করে। পুরুষ পেঙ্গুইন তাদের ডিম রক্ষা করার জন্য ৩ মাসের ও বেশি সময় ধরে ঐ অঞ্চলের শীত সহ্য করতে বাধ্য হয়। তারা এ সময় কোন খাদ্য খায় না। সুতরাং এরা খাবার না খেয়েও ৩ মাসের বেশি সময় পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।
তিমিঃ
হ্যাম্পব্যাক প্রজাতির তিমি গ্রীষ্মকালে খাদ্য গ্রহনের সময় ব্লুবার নামক থলি ব্যবহার করে থাকে। সেখানে তারা অতিরিক্ত খাদ্য চর্বিরূপে সঞ্চয় করে থাকে। পরবর্তীতে সে ফ্যাট খাদ্য হিসাবে শরীরে শক্তি যোগায়। এভাবে তিমি ৬ মাস ধরে খাবার না খেয়ে বেঁচে থাকতে পারে।
বল পাইথন সাপঃ
এদের শরীরের বিপাকের হার অনেক কম। এজন্য এদের খাদ্য শরীরে সঞ্চিত থাকে। এ সঞ্চিত শক্তি ব্যবহার করেই পাইথন ৬ মাসের বেশি সময় ধরে খাবার না খেয়ে থাকতে পারে। তারা অতি সহজেই তাদের শরীরের এ সঞ্চিত খাদ্য ব্যবহার করে থাকে।
গেলাপোগাস কচছপঃ
কচছপ অনেক ধীরগতির প্রাণী। এদের শরীরের ভিতরে পানির জন্য অনেক বড় থলি রয়েছে। সেখানে পানি সঞ্চয় করে রাখে। তাদের বিপাকের হার কম হওয়ায় তারা খাবার না খেয়ে অনায়সে ১ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।
বিচছুঃ
এরা এদের শরীরের ওজনের এক-তৃতীয়াংশ সমপরিমান খাবার খেয়ে থাকে। এ কাজটি এদের শরীরের বিপাকের হার কমিয়ে দেয়। এতে করে এদের পুষ্টির কোন তারতম্য হয় না। এই অনন্য বৈশিষ্ট্যটি এদের ১ বছর খাবার না খেয়ে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে। বিচ্ছু সম্পর্কে আরও জানতে ক্লিক করুন
বুড়ো ব্যাঙঃ
এদেরকে কাদায় কবর দেওয়া হলে এরা খাবার না খেয়েও ১ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। টর্পেরো অবস্থায় থাকে তখন খাদ্য ঘাটতি দেখা দিলে এরা শরীরের চর্বি হতে শক্তি সঞ্চয় করে।
কুমিরঃ
এরা এদের শক্তি সঞ্চয় করে নিজেদের শরীর নিশ্চল রেখে। এ কারনে এরা ভাল একটি শিকার ধরে খাওয়ার পর না খেয়ে ৩ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।কুমির সম্পর্কে আরও জানতে ক্লিক করুন
ওলমঃ
খাদ্যের ঘাটতি দেখা দিলে এরা এদের শরীরের বিপাকের হার এবং ক্রিয়া-কলাপ কমিয়ে দেয়।তারা নিজেরা নিজেদের শরীরের বিভিন্ন টিস্যু শোষন করে থাকে। এটি তাদের ১০ বছর পর্যন্ত খাবার ছাড়াই বেঁচে থাকতে সাহায্য করে।
তার্দিগ্রেডঃ
এরা ক্রিপ্টোবায়োসিসে গেলে এদের বিপাকের হার অনেক কমে যায়। বিপাকের হার অন্য সব প্রানির চেয়ে কম। তাদের বিপাকের হার স্বাভাবিক হতে ০.০১% এ নেমে যায় এবং পানির পরিমান ১% এ নেমে আসতে পারে। এ বৈশিষ্ট্য তাদের খাবার ছাড়া ৩০ বছরের এর চেয়ে বেশি বেঁচে থাকতে সাহায্য করে।
আপনার জানা মতে এমন কোন প্রাণী আছে কি, যেটা আমরা আমাদের লিষ্টে যোগ করতে পারি? যদি থাকে তাহলে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের সাথে শেয়ার করুন। আসুন পশুপাখির পাশে দাঁড়াই সুন্দর পরিবেশ গড়তে দশে মিলে হাত বাড়াই। পশুপাখি কে আপন করুন প্রকৃতি কে ভালবাসুন। বিভিন্ন পশুপাখির অজানা তথ্য সমুহ জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।