উড়ন্ত পাখিরা অনেক সময় দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয় এবং অনেক বেশি দূরত্ব অতিক্রম করে। আমাজনের বিভিন্ন প্রজাতির প্রানীদের দেখতে পাওয়া যায়। এমন কোন প্রজাতির প্রানী নেই যাদের আমাজনে খুঁজে পাওয়া যায় না। অজানা এসব প্রানীদের সম্পর্কে সকলের জানা সম্ভব হয়ে উঠে নি। সমুদ্রের তলদেশে যেমন মাছ সহ বিভিন্ন প্রানীদের দেখা মিলে তেমনিভাবে আমাজনের জঙ্গলে উদ্ভট সব প্রানীর খুঁজে পাওয়া যায়।
এমন উদ্ভট প্রানীদের সম্পর্কে জানার জন্য বহু মানুষ আমাজনের জঙ্গলে পাড়ি জমায়। এই জঙ্গল কয়েকটি দেশ পর্যন্ত বিস্তৃত। আমাজন জঙ্গলে এমন কিছু অঞ্চল রয়েছে সেখানে মানুষের পদচারন হয়নি। সেখানে শুধু প্রানীদের পদচারন। বাংলাদেশের ব-দ্বীপ সুন্দরবনেও এমন কিছু অঞ্চল রয়েছে যেখানে মানুষের বিচরন নেই। বরং রয়েল বেঙ্গল টাইগার অর্থাৎ বাঘের বিচরন।
আমাজনের জঙ্গলে একাধিক প্রজাতির প্রানি রয়েছে। আবার একই প্রজাতির বহু সংখ্যক প্রানীরও দেখা মিলে। আমাজনের আয়তন বড় হওয়ায় এখানে বিচিত্র রকমের গাছের দেখা মিলে। পৃথিবীর অক্সিজেনের চাহিদার একটি গুরুত্বপূর্ন অংশ এই বনের কারনে পূরন হয়। এতে সম্পূর্ন পৃথিবীর কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা অতি সহজেই নিয়ন্ত্রিত থাকে। তবে বর্তমানে বন উজার এর নির্বিচারে গাছ কেটে ফেলার কারন গ্লোবাল ওয়ার্মিং দিন দিন বাড়ছে। এতে তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারনে পৃথিবীর উষ্ণতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।আজকে আমরা আমাজনের কয়েকটি পাখি সম্পর্কে জানব।
উড়ন্ত পাখিঃ
হর্নেট স্ক্রিমার পাখিটি স্ক্রিমার প্রজাতির মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রজাতির পাখি। এদের বিশাল আকৃতির ডানা রয়েছে। দক্ষিন আমেরিকা এবং পেরু নিকটবর্তী আমাজন জঙ্গলে এদের দেখতে পাওয়া যায়। এরা জঙ্গলের মাঝে থাকে না বরং আমাজনের অববাহিকা ঘিরে যে নদী বয়ে চলছে সেখানেও এদের দেখতে পাওয়া যায়। এদের অনেকটা রূপকথার ইউনিকর্নের মত দেখায়। বিশাল আকৃতির ডানার জন্য এদের সহজে চিনতে পারা যায়।
ওরিওল ব্ল্যাকবার্ডঃ
এই হলুদ রঙের সুন্দর প্রজাতির পাখিটির লেজ এবং ডানার কিছুটা কালো রঙের হয়ে থাকে। এদের এই সুন্দর আকৃতির জন্য সবাই এদের দেখতে পছন্দ করে। এদের বিশেষ করে নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে উড়তে দেখা যায়। দক্ষিন আমেরিকার উত্তরাংশে এদের অল্প উচ্চতায় দেখতে পাওয়া যায়। এরা জোড়ায় জোড়ায় বা কাপল আকারে উড়ে থাকে। এরা বিভিন্ন ধরনের পোকা-মাকড় এবং ঘাস ফড়িং সহ অন্যান্য কীট পতঙ্গ খেয়ে থাকে।
কাঠ ঠোকরাঃ
এরা ধূসর ক্রিম কালার এবং হলুদের সংমিশ্রনে সুন্দরভাবে ফুটে উঠে। পুরুষ প্রজাতির পাখিদের গালে লাল রঙের দাগ দেখতে পাওয়া যায়। এরা বেশিভাগ সিজনাল পাখি হওয়াই এদের সব সময় দেখতে পাওয়া যায় না। দক্ষিন আমেরিকার দেশ বলভিয়া, পেরু, ব্রাজিল, কলাম্বিয়া ইত্যাদি দেশগুলোতে এদের দেখতে পাওয়া যায়। এরা নির্দিষ্ট ধরনের আওয়াজ করে থাকে।
এছাড়াও ম্যাকাউ পাখিদের সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন
হেরন পাখিঃ
এই অসাধারন সুন্দর পাখিটি দেখতে অসম্ভব সুন্দর। এদের পূর্বের পানামা থেকে দক্ষিনে ব্রাজিল পর্যন্ত দেশ সমূহের আমাজনের বেসিন অঞ্চলে এদের দেখতে পাওয়া যায়। আমাজনের বেসিন অঞ্চল বলতে নদী কিংবা নদীর আশে পাশে অবস্থিত জলাশয়কে বুঝায়। এদের ভেজা যায়গায় এবং নিচু অঞ্চগুলোতে দেখতে পাওয়া যায়। সমুদ্রপৃষ্ট হতে ৯০০ মিটার উচতায় এদের দেখতে পাওয়া যায়।এদের শরীরের রঙ আকাশী নীল রঙের পার্ফেক্ট কম্বিনেশনের জন্য এদের এত সুন্দর দেখায়।
টোওকানঃ
লেজ লম্বা পাখিদের সম্পর্কে আমরা অনেকেই জেনেছি।কিন্তু খুব কম পাখিরই ঠোঁট লম্বা হয়ে থাকে। এরা আকারে অনেক বড় এবং ঠোঁট কালো, হলুদের সংমিশ্রন। চোখের আশেপাশের অঞ্চলগুলোতে এদের পালক আকাশী নীল বর্নের হয়ে থাকে। দক্ষিন আমেরিকার আমাজনের নদীর পাশে বয়ে যাওয়া অঞ্চলের এদের দেখা মিলে। পুরুষ এবং স্ত্রী প্রজাতির উড়ন্ত পাখি গুলো ভিন্ন আকারের হয়ে থাকে।
পরিশেষে, আমাজনের আরও বিভিন্ন প্রজাতির উড়ন্ত পাখিদের দেখা মিলে। এই অসংখ্য প্রজাতির পাখিদের সম্পর্কে লিখে এক আর্টিকেলে সম্ভব নয়। তাই অন্যান্য সকল প্রানীদের বা উড়ন্ত পাখি দের সম্পর্কে জানার জন্য আমাদের সাথেই থাকুন এবং আপনাদের মূল্যবান মন্তব্য আমাদের সাথেই শেয়ার করুন।ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।