You are currently viewing প্রচন্ড গরম এ প্রানীদের দশা যেমন, জনজীবন অতিষ্ট তেমন

প্রচন্ড গরম এ প্রানীদের দশা যেমন, জনজীবন অতিষ্ট তেমন

প্রচন্ড গরম মানুষ সহ অন্যান্য সকল প্রানীর বেঁচে থাকা কষ্টকর হয়।মানুষ খাদ্য ছাড়া ২১ দিন, পানি ছাড়া ৩ দিন, এবং অক্সিজেন ছাড়া ৩ মিনিট পর্যন্ত বাঁচতে পারে।মানুষের শরীর বিভিন্ন কাজ করার সময় ঘাম এবং অন্যান্য আরো উপায় শরীর থেকে প্রয়োজনীয় পানি বের হয়ে যায়।এক্ষেত্রে অবশ্যই পরিবেশ অনেকটা প্রভাব ফেলে।যেমন গরমের সময় অল্প কাজ করতে আমরা বেশি ক্লান্তি বোধ করি, বিপরীতে শীতকালে সমপরিমাণ কাজ করলেও



অতটা ক্লান্তি বোধ হয় না।প্রাণীদের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো যে যে পরিবেশে জন্মগ্রহণ করেছে এবং দীর্ঘকাল ওই পরিবেশে অবস্থান করেছে তারা নিজেদেরকে সে সেই পরিবেশের সাথে  খাপ খাইয়ে নিয়েছে।আজকে আমরা এমনই কিছু প্রাণীদের সম্পর্কে জানব, যারা দীর্ঘ সময় পানি পান না করেও বেঁচে থাকতে পারে।পানির অপর নাম জীবন হওয়া সত্ত্বেও এসব প্রাণী নিজেদেরকে এভাবে দক্ষ করে গড়ে তুলেছে।চলুন জেনে নেওয়া যাক প্রাণীদের সম্পর্কেঃ


ক্যাঙ্গারু র‍্যাটঃ 

এদের নর্থ আমেরিকার মরুভূমি অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায়।পানি ছাড়া এরা আমি তো বেঁচে থাকতে পারে।কিন্তু এরা খাদ্য এবং পানির খোঁজে নিজেদের ঘর থেকে বের হয় এবং অনেক দূর পর্যন্ত খাদ্যের সন্ধানে করে থাকে।এদের কিডনি বিশেষভাবে রূপান্তরিত হাওয়াই এরা এদেশের মেটাবলিক ক্রিয়া সামান্য আলাদা।এদের চামড়ার উপর তৈলাক্ত আবরণ থাকায় এদের শরীর ঘামে না।মরুভুমিতে প্রচন্ড গরমে এরা এভাবে টিকে থাকে। 

kangaroo rat প্রচন্ড গরম
ছবিঃ ক্যাঙ্গারু র‍্যাট



ব্যাঙঃ

অস্ট্রেলিয়ান মরুভূমিতে এদের দেখতে পাওয়া যায়।এ প্রজাতির ব্যাঙ বিশেষ উপায়ে পানি নিজের শরীরের ভেতরে সংরক্ষণ করে রাখে।গ্রীষ্মকালে মরুভূমির তাপমাত্রা বেশি হওয়ায় এরা মাটির নিচে দীর্ঘ সময়ের জন্য  অবস্থান করে।এ অবস্থায় যাওয়ার পূর্বে এরা এদের ত্বকের মাধ্যমে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি শোষণ করে নেয়।ফলে ভবিষ্যতে এদের শরীরে পানি স্বল্পতা দেখা দেয় না।আবার তাপমাত্রা সহনীয় মাত্রায় আসলে এরা মাটির নিচ থেকে বের হয়ে আসে।প্রচন্ড গরমের মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার মরুভুমি অনেক উত্তপ্ত থাকে। 

Frog ব্যাঙ
ছবিঃ ব্যাঙ

মাছঃ

 আফ্রিকার বিশেষ প্রজাতির মাছ পানি ছাড়া বাঁচতে পারে।এ প্রজাতির মাছের বিশেষত্ব হচ্ছে এরা প্রায়৪০০ মিলিয়ন বছর ধরে টিকে আছে।এ কারণে এদের জীবন্ত জীবাশ্ম বলা হয়।অন্যান্য মাছ ফুলকার সাহায্যে পানি থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করলেও এরা পানির পাশাপাশি বায়ু থেকেও অক্সিজেন গ্রহণ করতে



পারে।শুষ্ক মৌসুমে এরা নিজেদের কাদার নিচে লুকিয়ে নেই এবং দীর্ঘ সময় ধরে সেখানেই থাকে।অন্য মৌসুমে এরা কাদা থেকে বের হয়ে আসে।এদের আফ্রিকার লাং ফিশ বলা হয়। 

মাছ Fish
ছবিঃ আফ্রিকার লাং ফিশ

প্রচন্ড গরমে ড্রাগনঃ

এদের  সেন্ট্রাল অস্ট্রেলিয়ার  মরুভূমিতে দেখতে পাওয়া যায়।বৃষ্টি  এবং কুয়াশা এরা এদের শরীরে পড়লে ত্বকের মাধ্যমে তা মুখে গিয়ে পৌঁছায়।এভাবে তারা তাদের শরীরে পানির চাহিদা পূরণ করে।প্রচন্ড গরমের জন্য অনেক মরুভুমির প্রানী রাতে খাবারের সন্ধানে বের হয়। 

প্রচন্ড গরম
ছবিঃ ড্রাগন

কলোরাডোর ব্যাঙঃ

এ বিশেষ প্রজাতির ব্যাঙ কলোরাডোর মরুভূমিতে নিজেদের টিকিয়ে রাখতে অন্য সব প্রাণী থেকে আলাদা পন্থা অবলম্বন করে।এ তথ্য গবেষণায় সম্প্রতি নিশ্চিত হওয়া গেছে।এরা প্রচন্ড গরম এর সময় নিজেদের বালুর নিচে ঘর তৈরি করে নেয় এবং সম্পূর্ণ গরমের মৌসুম সেখানেই অবস্থান করে।



ব্যাঙ সম্পর্কে আরও জানতে ক্লিক করুন

Desert Frog
ছবিঃ কলরাডোর স্পেডফুট ব্যাঙ

মরু  কচ্ছপঃ

আমেরিকার “মজবা” এবং মেক্সিকোর “সনোরান” মরুভূমিতে এদের দেখতে পাওয়া যায়।অন্যান্য আরো প্রজাতি কচ্ছপের থেকে এদের দুটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে।প্রথমত, অন্য কচ্ছপের চাইতে এদের সেলগুলো অনেক শক্ত।এজন্য মরুভূমির চারপাশে পাহাড়ের পাথর থেকে সহজে ক্ষতিগ্রস্ত হয় না।দ্বিতীয়ত,



অন্য  প্রজাতির  কচ্ছপের চেয়ে এরা বেশি পরিমাণ পানি ধারণ করতে পারে।সংগৃহীত পানির সাহায্যে এক বছর বা তার চেয়ে বেশী সময় পর্যন্ত পানি ছাড়া বাঁচতে পারে।প্রচন্ড গরমে এদের চলতে সমস্যা হয় না। 

প্রচন্ড গরম
ছবিঃ মরুতে কচ্ছপ

পরিশেষে, প্রচন্ড গরম কিংবা যে কোন পরিবেশে পানি ছাড়া প্রাণী বাঁচতে পারে এমন উদাহরণ অনেক বিরল।তবে পানি সংরক্ষণ করে প্রয়োজনের সময় সেটিকে ব্যবহারের মাধ্যমে  যে কেউ প্রতিকূল পরিবেশে সার্ভাইভ করতে পারে।এজন্যই হয়তো পানির অপর নাম জীবন বলা হয়। আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ার কমেন্ট বক্সে মাধ্যমে আমাদের সাথে শেয়ার করুন।ভাল থাকুন,সুস্থ থাকুন।


Facebook Comments

YappoBD

YappoBD-হলো poshupakhi.com এর একমাত্র স্বত্তাধীকারি। এই ওয়েবসাইটের সকল প্রকার কন্টেন্ট ইয়াপ্পোবিডি কর্তৃপক্ষ দ্বারা লিখিত, পরিমার্জিত এবং এটি ইয়াপ্পোবিডি এর অঙ্গসংস্থান।