দ্রুতগামী প্রানীদের মধ্যে চিতা বাঘের সাথে কম্পিটশনে কেউ পারে না। কেননা এরাই সবচেয়ে বেশি দ্রুতগতিতে দৌড়াতে পারে। এ বৈশিষ্ট্য চিতাবাঘের জন্মগত ভাবে প্রাপ্ত। এদের স্থলপথের সবচেয়ে দ্রুতগতির প্রানীদের মধ্যে সবার শীর্ষে অবস্থান করে। এদের শরীরে কালো ছোপছোপ দাগ থাকে। বড় বড় চিতা বাঘ গুলো ছদ্মবেশ ধারন করতে পারদর্শী। এদের শরীরের মেকানিজম তৃনভূমির মধ্যে শিকারকে ধরতে পারে; তেমনভাবেই এদের সৃষ্টি। এরা নির্জনে চলাফেরা করতে পছন্দ করে। মজার বিষয় হল এরা রয়েল বেঙ্গল টাইগার এবং অন্যান্য জাতের বাঘের মত গর্জন করে না। চলুন এই দ্রুতগামী প্রানী সম্পর্কে কিছু অজানা বৈশিষ্ট্য বিস্তারিত জেনে নিই।
সবচেয়ে দ্রুতগামী প্রানীঃ
স্তন্যপায়ী প্রানীদের মধ্যে এরা সবচেয়ে বেশি দ্রুতগতিতে দৌড়াতে পারে। এরা স্থির অবস্থা হতে ঘন্টায় প্রায় ৯৭ কি.মি বা ৬০ মাইল পর্যন্ত দৌড়াতে পারে। দৌড়ানোর সময় এরা ২১ ফিট বা ৬-৭ মিটার পর্যন্ত একবারে লাফিয়ে অতিক্রম করে। লাফিয়ে চলার সময় এদের পা শুধুমাত্র ২ বার মাটি স্পর্শ করে থাকে। এভাবে দৌড়ায়ে শিকার ধরার পর চিতা বাঘকে অবশ্যই খাবারের পূর্বে ৩০ মিনিট বিশ্রাম নিতে হয়; নিজের শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক করতে। ২০১২ সালে সারাহ নামের একটি চিতা বাঘ ঘন্টায় ৯৮ কি.মি বেগে ৫.৯৫ সেকেন্ডে ১০০ মিটার অতিক্রম করে নতুন রেকর্ড গড়েছে।

গতির রাজাঃ
এদের শরীরের মেকানিজম এর জন্য এরা এত দ্রুত দৌড়াতে পারে। শারীরিক গঠনের জন্য এরা যখন দৌড়ায় তখন এদের শরীর সংকুচিত হয়। এতে তাদের গতি কোনভাবেই কমে না। এদের পা লম্বা দুরত্ব অতিক্রমের জন্য এবং এদের লেজ অনেকটা নৌকার হালের মত কাজ করে । এতে করে সে তার গতির দিক পরিবর্তন করতে সুবিধা হয়। দৌড়ানোর সময় এদের থাবা রাবারের মত কাজ করে এবং এদের গতি বৃদ্ধি করে।

গর্জন করে নাঃ
অন্যান্য হিংস্র প্রজাতির প্রানীরা ভয়ংকর গর্জন করলেও চিতা বাঘ গর্জন করে না। এরা অত্যান্ত নির্জনে বসবাস করতে চায়। তবে এরা বিড়ালের মত ম্যাউ ম্যাউ ডাকে।
এছাড়াও এরা আরও বিভিন্ন ধরনের আওয়াজ বের করে। রয়েল বেঙ্গল টাইগার সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন

অস্তিত্বের লড়াইঃ
বিংশ শতাব্দীতে চিতা বাঘের সংখ্যা ১০০০০০ এর মত ছিল। কিন্তু বর্তমানে একবিংশ শতাব্দীতে প্রাপ্ত বয়স্ক চিতার সংখ্যা প্রায় ৭০০০ এর কাছাকাছি নেমে এসেছে। এদের বিলুপ্তির পিছনে প্রাকৃতিক কারনের চেয়ে মানবসৃষ্ট কারন বেশি দায়ী।পশু শিকার, অবৈধভাবে এদের পাচার এবং এদের চামড়ার অত্যাধিক চাহিদার কারনে এদের সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে।

সুদর্শন দৃষ্টিঃ
অন্যান্য বড় প্রজাতির চিতার মত এরা দিবাচর। দিনের বেলায় এরা শিকারে বের হয়। এরা গাছ এবং ছোট ছোট পাহাড়ে উটতে পারে। রাতের বেলায় এরা মাঝে মাঝে শিকারে বের হয়। এক্ষেত্রে এদের দৃষ্টিশক্তি এদের সহয়তা করে। রাতের বেলায় এদের থাবা নিঃশব্দে হাঁটতে সহযোগিতা করে। এমন বিভিন্ন বিষয় চিতাকে অন্যান্য প্রানী থেকে এগিয়ে রাখে।

ছদ্মবেশঃ
এদের চামড়া প্রকৃতির সাথে ছদ্মবেশে লুকিয়ে থাকতে সাহায্য করে। চারপাশের পরিবেশ এবং চিতাবাঘের বাহ্যিক রূপ তাদের প্রকৃতির সাথে মিশে থাকতে সাহায্য করে। চিতাবাঘের বাচ্চাকে ম্যান্টল বলে।

দ্রুতগামী প্রানী হিসাবে চিতাবাঘ সম্পর্কে আমরা অনেক কিছু জানলাম। কিন্তু চিতা বাঘ সম্পর্কে এসব বেসিক তথ্য ছাড়াও আরও অনেক কিছু জানার আছে। এ সব অজানা তথ্য জানতে আমাদের সাথেই থাকুন এবং আপানাদের মূল্যবান মন্তব্যা আমাদের সাথে শেয়ার করুন।