সবচেয়ে লম্বা প্রানীর সংখ্যা অনেক কিন্তু প্রজাতি সংখ্যা সীমিত। প্রানীজগতে অনেক ধরনের প্রানী রয়েছে। এদের মধ্যে উচ্চতার দিক থেকে লম্বা প্রানীদের নিয়ে আজকে আমরা জানব। কিন্তু একই বৈশিষ্ট্য থাকলেও এদেরও বিভিন্ন কিছুর উপর ভিত্তি করে ক্রম হিসাবে বিভিন্ন অবস্থানে থাকে। আমরা চিড়িয়াখানায় গিয়ে বিভিন্ন প্রানী দেখলেও এদের সম্পর্কে সব তথ্য জানি না। চিড়িয়াখানাতেও সব প্রানী রাখা সম্ভব হয় না। তবে মুক্ত বনে পশুপাখি যে স্বাধীনভাবে বিচরন করে, স্ব চক্ষে তা দেখলে মন জুড়ায় এবং নতুন এক্সপেরিয়েন্সও হয়। বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে ঘুরতে গেলে ট্রাভেল ভ্যানের সাহায্যে ঘুরা যায়। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই প্রানীগুলো মুক্ত ভাবে বিচরন করে।
সবচেয়ে লম্বা প্রানীদের মধ্যে জিরাফ শীর্ষে অবস্থান করছে। এদের পা এবং গলা অনেক লম্বা হওয়ায় এদের উচ্চতা অনেক বেশী। তবে এ প্রানীরা অনেক নিরীহ প্রকৃতির। কিন্তু নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে এদের দূর থেকে দেখাই শ্রেয়। জিরাফের মাথা এবং পা দিয়ে কাউকে আঘাত করলে খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। পায়ের আঘাতে অনেকের মৃত্যু হতে পারে। তবে একে কোন কিছু না করলে মানুষের কোন ক্ষতি করে না। জিরাফ সম্পর্কে বিস্ময়কর তথ্য চলুন জেনে নেওয়া যাক।
সবচেয়ে লম্বা প্রানীঃ
স্তন্যপায়ী প্রানীদের মধ্যে জিরাফ সবচেয়ে লম্বা প্রকৃতির। এদের পা স্বাভাবিক একজন মানুষের থেকেও বেশি। প্রায় ৬ ফিট পর্যন্ত লম্বা হয়। এদের শুষ্ক সাভানা মরুভূমির আশেপাশের সমভুমি ও বনভুমি অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায়। দুটি মানুষের হাতের ফিঙ্গার প্রিন্ট যেমন ইউনিক প্রকৃতির হয় তেমনি দুটি জিরাফের গায়ের চামড়া ইউনিক প্রকৃতির হয়। কখনই দুটি জিরাফের গায়ের চামড়ার প্যাটার্ন কখনই এক হবে না।
দৃষ্টিশক্তিঃ
সমভুমিতে বিচরনশীল প্রানীদের মধ্যে এরাই সবচেয়ে লম্বা প্রকৃতির। এরা প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের স্বাভাবিক উচ্চতার চেয়ে তিন গুন বেশি লম্বা হয়। অর্থাৎ তিনজন মানুষ একত্রিত হলে যে উচ্চতা হয় জিরাফের উচ্চতা তত। প্রাপ্ত বয়স্ক জিরাফেরা ৫.৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। তবে এত বেশি উচ্চতা হওয়ার জন্য এরা নিচু কোন জায়গায় পৌছাতে সমস্যা হয়। পানি পান করতে হলে এরা নিজেদের সামনের পা গুলো সামনের দিকে দেয়। এতে জিরাফের ঘাড় এবং মুখ পানি পর্যন্ত পৌছাতে পারে।
এদের গলা অনেক উচ্চ হওয়ায় এরা অনেক দূর পর্যন্ত দেখতে পারে। দূর থেকে সিংহ এবং হায়েনা সহ বিভিন্ন হিংস্র প্রানী তাদের দিকে এগুতে থাকলে তারা পূর্বেই সতর্ক হতে পারে। এদের আফ্রিকার ৭ টি দেশে এদের দেখতে পাওয়া যায়। জেব্রা সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন
জীবন-যাপনঃ
এরা ঘণ্টায় ৩৫ মাইল পর্যন্ত দৌড়াতে পারে। এমনটি হয় ছোট দূরত্ব অতিক্রমের ক্ষেত্রে। কিন্তু লম্বা দূরত্ব অতিক্রমের জন্য এদের গতি ঘণ্টায় ১০ মাইল পর্যন্ত হয়। এরা প্রতিদিনই পানি পান করে কিন্তু দিনে তা মাত্র একবার। এরা জীবনের বেশিভাগ সময় দাড়িয়ে থাকে। এমন কি তারা দাড়িয়ে ঘুমায় ঘোড়ার মত। প্রজননে ক্ষেত্রেও এরা দাড়িয়ে বাচ্চা প্রসব করে। এরা গাছ সহ বিভিন্ন ধরনের সবুজ গাছ গাছালি খেয়ে থাকে। বাচ্চা প্রসবের পরও এরা তাদের বাচ্চাকে তৃনভোজী খাবার খাওয়া শেখায়। তবে এ সময় অবশ্যই বাচ্চা জিরাফ হিংস্র প্রানীর শিকারে পরিনত হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
বিশ্রামঃ
এদের ২৪ ঘন্টায় ৫-৩০ মিনিট পর্যন্ত ঘুমের দরকার হয়। এরা মাঝে মাঝে ১ – ২ মিনিটের জন্য কুইক ন্যাপ নিয়ে থাকে। এরা সহজে কোন রকম হুংকার কিংবা শব্দ করে না। তবে প্রয়োজনের সময় এরা বিভিন্ন রকম আওয়াজ করতে থাকে। তবে কিছু কিছু সময় এরা এত আস্তে আওয়াজ করে থাকে যা আমাদের শ্রাব্যতার সীমার নিচে। এতে আমরা শব্দ শুনতে পাই। এরা দিনে ৪৫ কেজির মত পাতা খেয়ে থাকে। ছবি দেখেই বুঝা যায় যে জিরাফ সবচেয়ে লম্বা প্রানী।
জিরাফ সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম। জিরাফ সম্পর্কে নতুন কিছু জানা থাকলে আমাদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। জিরাফ সহ অন্যান্য প্রানী সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের সাথেই থাকুন। আপনাদের মন্তব্য কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে আমাদের কাছে তুলে ধরুন।