সবচেয়ে বড় মাছ আমরা কে না পছন্দ করি।সমুদ্রকে প্রাণিজগতের ভান্ডার বলা হয়। কেননা জীবজগতের অর্ধেকের চেয়ে বেশি প্রাণীর অস্তিত্ব সমুদ্র এবং সমুদ্র তলদেশে পাওয়া যায়। স্থল ভাগের প্রাণীগুলো বিভিন্ন দিক থেকে সমুদ্রের উপর নির্ভরশীল। প্রাণীভেদে এই নির্ভরশীলতার মাত্রা কম অথবা বেশি রয়েছে। তবে সমুদ্রের নিচে অবস্থিত সামুদ্রিক শৈবাল এই পৃথিবীর ৬০ ভাগের ও বেশি পরিমাণের অক্সিজেন উৎপাদন করে সমুদ্র জীবজগৎ এবং বায়ুমন্ডলে সাপ্লাই দিচ্ছে। সমুদ্রের শৈবাল যদি অক্সিজেন উৎপাদন করা বন্ধ করে তাহলে এই পৃথিবীতে প্রাণের টিকে থাকা অনেক দুষ্কর। এছাড়াও আবহাওয়া জলবায়ু এবং বায়ুমণ্ডলের তথা ইকোসিস্টেম এর ভারসাম্য বজায় রাখতে এরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
কেননা বর্তমানে অনেকেই বনভূমি উজার করছে। এতে করে গাছপালা সঙ্গে যেমন কমে আসছে ঠিক তেমনি পৃথিবীটা আমাদের বসবাসের অনুপযোগী হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এজন্যই বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বা পৃথিবীর তাপমাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মেরু অঞ্চলের বরফ গলে পানিতে পরিণত হয়ে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই বিশিষ্ট এলাকাগুলো সমুদ্রের নিচে অতি দ্রুতই প্লাবিত হবে।
এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য আমাদেরকে বেশি বেশি গাছ লাগাতে হবে। পৃথিবীতে সবুজ শ্যামল রাখতে হবে। পৃথিবী কে সুস্থ রাখতে সমুদ্র এবং সমুদ্রের নিচের প্রাণীগুলো কোন না কোনভাবে আমাদের বাস্তুতন্ত্রে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে ভূমিকা রেখে চলেছে। আজকে আমরা সমুদ্রের নিচে সবচেয়ে বড় মাছ এর সম্পর্কে জানব।
তিমি হাঙ্গরঃ
পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বড় মাছ এর মধ্যে এটি শীর্ষে অবস্থান করছে। এদের ইংরেজিতে Whale Shark বলে। ওজনের দিক থেকে এরা.২১.৫ টন পর্যন্ত এবং দৈর্ঘ্যে এরা ৪১.৫ ফিট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এরা অনেকটা তো প্রকৃতির এবং প্লাংকটন জাতীয় খাবার খেয়ে থাকে। তারা মুখ হা করলে ছোট প্রজাতির মাছ এবং বিভিন্ন প্লাংটন জাতীয় খাবার খুব স্বাভাবিকভাবে এদের মুখগহবরের ভিতরে চলে যায়। পৃথিবীতে এর চেয়ে বড় কোন ধরনের মাছ বর্তমানে পাওয়া যায় নাই।
বাস্কিং হাঙ্গরঃ
সবচেয়ে বড় মাছ এর দিক থেকে এদের অবস্থান দ্বিতীয়। এদের শরীরের রং ধূসর অথবা ধূসর বাদামী বর্ণের । এরাও উপরের প্রজাতির মত এদের পেট ভরানোর জন্য সাঁতার কাটার সময় মুখ খুলে চলাফেরা করে, এতে করে ছোট প্রজাতির মাছ এবং প্লাংকটন জাতীয় খাবার সহ আরো অনেক কিছু এর পেটের ভেতর চলে যায়। এরা ২০-৪০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে এবং ওজনের দিক থেকে ১১,৪০০ পাউন্ড পর্যন্ত হয়। এরা উপকূলীয় অঞ্চল গুলোতে সমুদ্রের নিকটস্থ অঞ্চলে চলাফেরা করে।
সবচেয়ে বড় মাছঃ
এরা দৈর্ঘ্যের দিক থেকে অনেক বড় লম্বা প্রকৃতির হয়। এই আকৃতি তারা প্রাপ্তবয়স্ক হলে লাভ করে। এদের ট্রপিক্যাল সামুদ্রিক অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায়। এরা ৫০ ফিট পর্যন্ত লম্বা হয় এবং ওজনে ৬০০ পাউন্ড পর্যন্ত হয়। এদের পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মাছ এবং লম্বা কাটা বিশিষ্ট মাছ হিসেবে গণ্য করা হয়। ছোট ছোট মাছের পাশাপাশি এরা জেলিফিশ স্কুইড ইত্যাদি খাবার হিসেবে খেয়ে থাকে।এদের নাম ওরফিশ।
মলা মাছঃ
এই নামের সাথে আমরা অনেকেই পরিচিত। কেননা আমাদের নদী এবং সংলগ্ন সাগর অঞ্চলের পানিতে এই নামের অনুরূপ মাছ দেখতে পাওয়া যায়।কিন্তু একই নামে সমুদ্র বিশালাকৃতির মাছ রয়েছে।পৃথিবীতে বিদঘুটে মাছের রূপের তালিকায় এরা শীর্ষ অবস্থান করছে।ওজনে এরা ২০০০ থেকে ৩০০০ পাউন্ড পর্যন্ত হয়ে থাকে।কিছু বৃহত্তর প্রজাতির ওজন ৫০০০ পাউন্ড পর্যন্ত হয়।এদের ইংরেজিতে সানফিশ বলা হয়।ট্রপিক্যাল অঞ্চলের সমুদ্রে এদের দেখতে পাওয়া যায়।
মান্টা রেঃ
ছবি দেখে এদের অনেকটা পাখির মতো মনে হয়। সমুদ্রের নিচে পাখির মতো একমাত্র এরাই পানিতে উঠতে পারে। অর্থাৎ ডানা মেলে চলাচল করতে পারে।লম্বায়এদের শরীর ৯-১২ ফিট পর্যন্ত হয়ে থাকে এবং এদের পাখনা দুটোর দৈর্ঘ্য ১৮ – ২৩ ফিট পর্যন্ত হয়।এদের ওপর অন্য মাছ চাইলে বসে থেকে একদা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে পারে। এরা অত্যন্ত শান্ত প্রকৃতির এবং ডুবুরিদের আশেপাশে কৌতূহলের সাথে সাঁতার কাটতে থাকে। এদের শরীরে ওজন ৩০০০ পাউন্ড পর্যন্ত হয়। সামুদ্রিক বিপদজ্জনক প্রানী সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন
পরিশেষে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রজাতির মাছদের সম্পর্কে জানা হল। বড় প্রজাতির মাছের তালিকায় শীর্ষে থাকলেও আরো অন্যান্য মাছ বিভিন্ন অবস্থানে অবস্থান করছে। এইসব প্রজাতি সম্পর্কে জানতে আমাদের সাথেই থাকুন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশি বেশি শেয়ার করুন। অবশ্যই কমেন্ট বক্সে আপনি আপনার মন্তব্য জানাতে পারেন