আফ্রিকার বিভিন্ন প্রানীদের মধ্যে বিষাক্ত সাপ ব্ল্যাক ম্যাম্বা অন্যতম। এই সাপ সারাবিশ্বব্যাপী বিভিন্ন জায়গায় বিচরন করে থাকে। নেটিভ অঞ্চলে এরা বাসা বাড়িতেও দেখতে পাওয়া যায়। ডিসকভারী চ্যানেলে এমনও অনুষ্ঠান “স্নেক ইন দ্যা সিটি” সম্প্রচার হয় যেখানে ঐ অঞ্চলগুলোতে সাপ লোকালয়ে প্রবেশ করে এবং মানুষের মৃত্যুর কারন হতে পারে। অনুষ্ঠানটিতে দেখানো হয় ঐ সব কীভাবে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় এবং জঙ্গলে ছেড়ে দিয়ে আসে। ব্ল্যাক ম্যাম্বা সাপ আফ্রিকার বিষাক্ত সাপের তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করে। এদের পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বা বিষাক্ত সাপের তালিকা অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
ব্ল্যাক ম্যাম্বা সাপ যেমন মানুষের মুখে মুখে জনপ্রিয় তেমনি এটি অনেক ভয়ংকর। আজকে আমরা ব্ল্যাক ম্যাম্বা সম্পর্কে কিছু ইন্টারেস্টিং ফ্যাক্ট জানব। যেসব তথ্য সহজে সাধারন মানুষ জানে না সেসব তথ্যই আজকে আমরা জানার চেষ্টা করব। ব্ল্যাক ম্যাম্বার আফ্রিকার সকল অঞ্চলগুলোতে দেখতে পাওয়া গেছে। এছাড়াও বিশাল বনাঞ্চলে এদের দেখতে পাওয়া যায়। চলুন ব্ল্যাক ম্যাম্বা সম্পর্কে ইন্টারেস্টিং ফ্যাক্ট জেনে নিইঃ
ব্ল্যাক ম্যাম্বার বাসস্থানঃ
এরা মাটির উপর এবং গাছে চলাচল করে থাকে। এরা মাটিতে ঘাড় এবং মাথার সাহায্য এগিয়ে চলে। কিন্তু আফ্রিকার মাটিতে এরা খাদ্যের সন্ধানে বের হয় এবং গাছে এরা নিজেদের বাসা বা শেলটার হিসেবে আশ্রয় নেয়। এরা সকাল ৭ টা হতে রাত ১০ টা এবং বিকাল ২ টা থেকে ৪ টা পর্যন্ত রোদ পোহায়।
এই কাজটি তারা রেগুলার করে থাকে । এজন্য এরা বেশি ভাগ কর্মতৎপর হওয়াই এরা দ্রুত গমন করতে পারে। এরা ওজনে ব্ল্যাক ম্যাম্বা ওজনে ১.৫ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।
আক্রমনাত্মক সাপঃ
এরা অন্যান্য বিষাক্ত সাপের চেয়ে বেশ আক্রমনাত্মক। কেউ যদি এদের দিকে আগ্রসর তাহলে এরা অতি দ্রুততার সাথে ছোবল দিয়ে থাকে। কোন মানুষ যদি ৪০ মিটারের চেয়ে কম দুরত্বে থাকে তাহলে সে চুপ না থেকে ছোবল দিয়ে থাকে। এরা এক অন্যান্য সাপদের চেয়ে অতিরিক্ত সংখ্যকবারে ছোবল দিতে থাকে। এদের নিকটে যে কোন কিছুর মুভমেন্ট তাদের নার্ভকে সক্রিয় করে তোলে।
আক্রমনের স্থানঃ
অন্যান্য সাপ শরীরের বিভিন্ন স্থানে বা কোমরের নিচের দিকে কামড় দিয়ে থাকে। কিন্তু এরা শরীরের উপরের অংশে আক্রমন করে থাকে। অন্যান্য সাপ অত্যান্ত ছোট হয় ব্ল্যাক ম্যাম্বার চেয়ে কিন্তু এরা আকারে দীর্ঘ হওয়াই মানুষের শরীরের উপরের দিকে কামড় দিতে সক্ষম হয়। এরা মানব শরীরের ৪০ শতাংশ স্থান পর্যন্ত পৌছাইতে পারে। এরা দ্রুতগতিতে চলা এবং লম্বা হওয়ার জন্য অতি অল্প সময়ে বেশি দূরত্ব অতিক্রম করে।
টপ ৭ টি পোষা সাপ সম্পর্কে জানার জন্য ভিজিট করুন
মুখমন্ডলঃ
সাধারন অন্যান্য সাপের জিহ্বা এবং মুখের অভ্যান্তরে লালচে রঙের হয়ে থোকে ঠিক একই ভাবে এদের মুখের অভ্যান্তরে কালো বর্নের হয়ে থাকে। কোন কোন ক্ষেত্রে এরা কালো বর্নের না হলেও এরা গাঢ় জলপাই, এবং জলপাই সবুজ বর্নের হয়ে থাকে। তবে কিছু বিশেষ প্রাজাতির ক্ষেত্রে ধূসর এবং বাদামী বর্নের হয়ে থাকে। এমনটি হয় এদের শরীরের বাদামী এবং ধূসর বর্নের হয়ে থাকে।
খাদ্যভাসঃ
সেন্ট্রাল রিপাবলিক অফ আফ্রিকা, চাঁদ , নাইজেরিয়া, মালি এই দেশগুলোতে বিভিন্ন রকম পোকা-মাকড় খেয়ে থাকে। ১৯৫৪ সালে এই অঞ্চল থেকে তৎকালীন সময়ের ফিজিশিয়ান এই সাপের বিষের এন্টিভেনম আবিষ্কর করে থাকে। এরা নিয়মিত ভাবে শিকারের খোঁজে বের হয় এবং শিকার ধরে সময় মত বাসায় ফেরে।
কিন্তু এটির কখনও কখনও ব্যাত্যয়ও ঘটে যখন তাদের কাজের মধ্যে ডিস্টার্বেন্স আসে। এরা পাখি এবং ছোট ছোট স্তন্যপায়ী প্রানীদের শিকার করে থাকে এবং খাদ্য হিসাবে গ্রহন করে।
পরিশেষে, ব্ল্যাক ম্যাম্বা সম্পর্কে আরও বিস্তারিত ইন্টারেস্টিং তথ্য আছে। কিন্তু এক আর্টিকেলে তো আর সব জানা সম্ভব নয়। তেমনি ভাবে এদের সম্পর্কে আরও তথ্য অন্য একদিন আপনাদের সাথে শেয়ার করা হবে। লেখাটি পড়ে কেমন লাগল তা কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে আপনার মন্তব্য আমাদের সাথে শেয়ার করুন এবং আপনাদের মতামত তুলে ধরুন।