সাপের বৈশিষ্ট্যের সাথে জলহস্তীর মিল!!! বিষয়টি অদ্ভুত তাই না? সাপ ও জলহস্তী উভয়ই মেরুদন্ডী প্রানী। প্রানীজগতে প্রানীদের সকল প্রানীদের দুটি শ্রেনিতে ভাগ করা হয়েছে। তা হল মেরুদন্ডী এবং অমেরুদণ্ডী প্রানী। জলে, স্থলে, কিংবা আকাশে বিদ্যমান সকল প্রানীদের এই দুই ধরনের ক্যাটাগরির মধ্যে পড়ে।সাপ এবং জলহস্তী উভয়ই মেরুদন্ডী প্রনীদের তালিকায় পড়ে। সময়ের বিবর্তনের সাথে সাথে বিজ্ঞানীরা নতুন নতুন রিসার্চ করার মাধ্যমে
যেমন নতুন প্রানীদের খোঁজ পেয়েছে।ঠিক তেমনি ভাবে নতুন নতুন শাখা-প্রশাখার সৃষ্টি হয়েছে। এমনি ভাবে দিন দিন মেরুদন্ডী প্রানীদের বিস্তার ঘটছে দিনদিন।এমনই ভাবে সাপ সরীসৃপ প্রজাতির এবং জলহস্তী স্তন্যপায়ী প্রজাতির।এজন্য এদের মধ্যে কিছু কিছু মিল রয়েছে তেমনি অমিল রয়েছে।
কিন্তু এদের মধ্যে শারীরিক কাঠামো, রক্তের বৈশিষ্ট্য সহ বিভিন্ন কিছু পুথিগতবিদ্যা যেগুলা আমরা শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে জেনে থাকি, জ্ঞান অর্জন করে থাকি।আজকে আমরা সাপ এবং জলহস্তীর কিছু বিশেষ ধরনের বৈশিষ্ট্য রয়েছে।তাদের যে বিশেষ ধরনের তথ্য রয়েছে তা আমাদের অনেকেরই অজানা।চলুন জেনে নেওয়া যাক।
জলহস্তীর না জানা তথ্যঃ
প্রাচীন গ্রিক ভাষায় এদের “River Horse” বা “নদীর ঘোড়া” হিসাবে বিবেচিত করা হয়।এরা মাঝে মাঝে সাঁতার কাটে না। বরং সামান্য পানিতে আমরা যেমন স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরা করতে পারি, হাঁটতে পারি তেমনিভাবে এরা নদীর জলে চলাফেরা করে থাকে।চিড়িয়াখানায় গেলে এদের আমরা বেশীভাগ সময় পানির ভিতর থাকতে দেখা যায়।এমনটি করার কারন হল এদের স্কিনকে এরা সূর্যের আলো থেকে রক্ষা করে থাকে।কেননা এদের চামড়া গন্ডারের মত মোটা নয় বরং পাতলা। গন্ডার সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন
এরা নিজেদের নিঃশ্বাস সাত মিনিট পর্যন্ত আটকে রাখতে পারে পানির মধ্যে।প্রাপ্ত বয়স্ক জলহস্তীরা ৩-৫ মিনিট পরপর নিঃশ্বাস নিয়ে দীর্ঘ সময় পানির মধ্যে থাকে।এদের এই বৈশিষ্ট্য অন্যান্য প্রানীর থেকে আলাদা।আমাদের মনে এই প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক যে, এরা পানির ভিতর থাকে বেশী ভাগ সময় তাহলে এদের কান এবং নাকের মধ্যে পানি যায় না?
এর উত্তর অত্যান্ত সহজ। এরা নিজেদের কান এবং নাকের ছিদ্র বা নাসারন্ধ্র পানির ভিতর থাকার সময় বন্ধ রাখে।এজন্য এদের নাক এবং কানের মধ্যে সহজে পানি ঢুকে না। এরা নিজেরা নিজেদের ইচ্ছামত কান এবং নাকের ছিদ্র বন্ধ করতে পারে।খাদ্য ছাড়া প্রানীর বাঁচা মুশকিল। এজন্য এরা খাবারের খোঁজে ১০ কিলো পর্যন্ত হেটে গিয়ে থাকে। প্রতি রাতে গড়ে এরা প্রায় ৫ ঘন্টার মত বিচরন করে ৬৮ কেজি ঘাস খেয়ে থাকে। আফ্রিকান প্রজাতির জলহস্তী বেশি রাগী প্রকৃতির হয়ে থাকে। সবচেয়ে বড় স্তন্যপায়ী প্রানীদের মধ্যে এরা প্রায় তৃতীয় আবস্থানে আছে।
সাপের না জানা তথ্যঃ
সাপের সংখ্যা পৃথিবীতে কখনও গুনে শেষ করা যায় না।কেননা জলে, স্থলে কিংবা আমাজন রেইন ফরেস্টের দীর্ঘ গাছের ডালেও এদের দেখতে পাওয়া যায়।আমাজন রেইন ফরেস্টের বেশিভাগ অংশ ব্রাজিলের অভ্যন্তরে। ব্রাজিল ছাড়াও অন্যান্য আরও দেশে আমাজন রেইনফরেস্টের অস্তিত্ব রয়েছে। তেমনি একটি জায়গা আছে ব্রাজিলের সাও পাওলো উপকুল হতে সমুদ্রের মধ্যে একটি আইল্যান্ড রয়েছে। ঐ দ্বীপের নাম স্নেক আইল্যাণ্ড।ঐ দ্বীপের আয়তন ৪৩ হেক্টর।
কিন্তু মজার বিষয় হল যে কোন নতুন দ্বীপের আবিষ্কার হলে সাধারন মানুষ সেখানে ঘুরতে যায় কিংবা মানুষের পর্যাটন স্পট হিসাবে ব্যবহারের চেষ্টা করে।কিন্তু উক্ত দ্বীপে শুধু সাপেরই বসবাস।সেখানে এমন কোন অংশ নেই দ্বীপে যে জায়গায় সাপ নেই। বিজ্ঞানীরা এখনও গবেষনা চালিয়ে যাচ্ছে
কিন্তু এখন পর্যন্ত উক্ত দ্বীপে কত প্রজাতির সাপ আছে তা কেউই নির্নয় করতে পায় নি।আমরা সাধারন বিষাক্ত অনেক প্রজাতির সাপের কথা জানলেও ঐ দ্বীপে এই বিষাক্ত সাপদের চেয়েও আরও বেশি বিষাক্ত সাপ তথা বিষধর সাপ রয়েছে।
কথিত আছে ঐ দ্বীপে এক প্রজাতির সাপ ছিল যারা মাইগ্রেট কিংবা অতিথি পাখিদের শিকার করে তাদের খাদ্য হিসাবে গ্রহন করত। এমনটি হত কারন মাইগ্রেশনের সময় ঐ পাখিরা উক্ত দ্বীপের গাছে বিশ্রামের জন্য বিরতি নিত। তখন এরা সাপদের খাবারে পরিনত হত।সাপের বৈশিষ্ট্যের সাথে জলহস্তীর মিল আমিল এর শেষ নেই। এখনও আরও তথ্য অজানা আবিষ্কার হয় নি।
পরিশেষে, সাপের বৈশিষ্ট্যের সাথে জলহস্তীর মিল খুব একটি না পাওয়া গেলেও উভয় প্রানীদের সম্পর্কে অজানা অনেক তথ্য জানা গেল।এমন সব জানা প্রানীদের সম্পর্কে অজানা তথ্য জানতে আমাদের সাথেই থাকুন এবং আপনাদের মন্তব্য কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে আমাদের সাথে শেয়ার করুন।