ভারত মহাসাগরের মধ্যে পূর্ব আফ্রিকার উপকূল হতে ৪০০ কি.মি দূরে এ দ্বীপ অবস্থিত। এর আয়তন ৫,৯২,৮০০ বর্গ কি.মি। আয়তনের দিক থেকে এরা বিশ্বের মধ্যে ২য় বৃহত্তম দ্বীপ। এর রাজধানীর নাম আন্তানানারিভো। এখানে অনেক বিচিত্র রকমের প্রাণী রয়েছে যা সম্পর্কে আমরা অনেক কিছুই জানি না। এ রকম অদ্ভুত প্রাণী সম্পর্কে রহস্য জনক তথ্য আজকে জানব।
টমেটো ব্যাঙঃ
এদেরকে অতি সহজে রঙের মাধ্যমে চিনতে পারা যায়। পুরুষ প্রজাতির ব্যাঙ হলুদ-কমলার এবং স্ত্রী প্রজাতি উজ্জ্বল প্রকৃতির লাল-কমলার সংমিশ্রিত রঙের হয়। এদের শরীর থেকে এক ধরনের বিষাক্ত পদার্থ নিঃসরন করে যা অন্যদের জন্য ক্ষতিকর। এরা এদের জীবনের অধিকাংশ সময় পাতার নিচে অথবা কাঁদার ভিতরে বাস করে। স্ত্রী প্রজাতির ব্যাঙ পুরুষ প্রজাতি হতে সামান্য বড় হয়। এরা সচরাচর রেইন ফরেস্ট বা সোয়াম্প ফরেস্ট অঞ্চলে বাস করে। একে অপরের সাথে যোগাযোগের জন্য এক বিশেষ ধরনের শব্দ বের করে থাকে। পোকা-মাকড় এবং লার্ভা খেয়ে এরা বেঁচে থাকে। ব্যাঙ সম্পর্কে আরও জানতে ক্লিক করুন
ব্লু কোয়াঃ
এদের দ্বীপের শেষপ্রান্তে দেখা যায়। তবে মাঝে মাঝে এদের ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের এর পূর্ব এবং উত্তর-পশ্চিম উপকূলে দেখতে পাওয়া যায়। কোকিলের মত এরা অন্যের বাসায় ডিম পারে না। বরং নিজেরা নিজেদের বাসা তৈরি করে এবং নিজের সন্তানদের লালন-পালন করে। এরা পোকামাকড় ছোট ছোট সরিসৃপ জাতীয় প্রাণী এবং বিভিন্ন ধরনের ফল খেয়ে থাকে। নাম বিচিত্র হলেও পাখিটা দেখতে সুন্দর। এরা মাঝে মাঝে ডানা মেলে অনেক লম্বা উড়ান দেয়।
প্লাওশেয়ার কচ্ছপঃ
মাদাগাস্কার দ্বীপের উত্তর-পশ্চিম অংশে ব্লু-বে নামক অঞ্চলে এ ধরেনের কচছপ দেখতে পাওয়া যায়। সে অঞ্চলে ৩০ কি.মি এর মধ্যে ৫ জন মানষিক ভারসাম্যহীন মানুষ বাস করে। ব্লু বে ৬০০ এরও কম প্রজাতি ভিন্ন ভিন্ন প্রাণী বাস করে। এরা বাশ জাতীয় গাছ এবং লতা-পাতা যুক্ত জায়গায় বাস করে।
ডে গেকোসঃ
ফ্লেসুমা নামক প্রানিদের এক ধরনের প্রজাতির নাম ডে গেকোস। এদের মাদাগাস্কার দ্বীপে পাওয়া গেলেও সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা রাজ্যে এদের পরিচিতি সম্পর্কে মানুষ জানতে পেরেছে। এদের নামের পূর্বে ডে থাকলেও এরা মূলত নিশাচর প্রাণী। এরা ছদ্মবেশে চলাচল করতে পারে যা আমরা অনেকে “ক্রিপসিস” নামে জানি। “ক্রিপসিস সম্পর্কে আরও জানতে ক্লিক করুন। এরা সচরাচর ৬-৮ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে। এরা অনেকটা ব্যাঙের মত শব্দ করে থাকে। মানুষের জন্য এরা ক্ষতিকর নয়।
ইউরোপ্লাটুসঃ
এরা গেকোস প্রানির অন্য প্রাজাতি। এদের দেখতে অনেকটা বড় আকৃতির টিকটিকির মত। এদের লেজ অনেক লম্বা হয়ে থাকে। ধূসর রঙের হওয়ায় এদের তেমন আকর্ষনীয় দেখায় না। এরা উচ্চতর তাপমাত্রায় নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে।
ফুর্সিফারঃ
এরাও এক ধরনের টিকটিকির মত প্রাণী। এদের শরীর সবুজ রঙের হয়। এদের চলার সময় দেখতে অনেকটা শামুকের চলার মত দেখায়। এরা বর্নচোরা। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রং ধারন করে। এতে করে জে কেউ সহজে এদের চিনতে পারে না। এরা গিরগিটির মত রঙ বদলায়।
মথঃ
এরা দেখতে প্রজাপতির মত এবং উড়ে বেড়ায়। ১,৬০,০০০ উড়ন্ত পোকা-মাকড় এর মধ্যে প্রজাপতি এবং স্কিপার এর মত রাতের বেলা উড়তে পারে। এজন্য এদের নিশাচর প্রাণী বলা হয়। এরা ঠান্ডা অঞ্চলে উড়ে বেড়ায় এবং পরিবেশের সাথে সহজে মানিয়ে নিতে পারে।
এলিফ্যান্ট বার্ডঃ
অস্তিত্বের দিক থেকে এরা বিলুপ্তির পথে। এদের পাখি বলা হলেও এরা উড়তে পারে না। বৃহৎ আকৃতির কারনে এদের এলিফ্যান্ট বার্ড বলা হয়। র্যাটিট নামক পাখির সর্বশেষ প্রাজতির এটি। এ পাখিকে কে বা কেন হত্যা করা হয়েছে এর উত্তর জানা যায়নি। এলিফ্যান্ট সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন
তেলাপোকাঃ
তেলাপোকার সাথে আমরা সবাই পরিচিত। কিন্তু মাদাগাস্কার দ্বীপের তেলাপোকা একটু বিশেষ প্রকৃতির। ধারনা করা হয় এর তেলাপোকার মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রজাতি। এ চলার সময় সাপের মত হিস হিস শব্দ করে বলে এদের হিসিং তেলাপোকা বলা হয়। আমাদের দেশের সাধারন তেলাপোকা যে সব জায়গায় বাস করে এবং খাবার খায় হিসিং তেলাপোকাও তাই খায়। তবে মজার বিষয় এরা এদের ভালোবাসার জন্য লড়তে জানে।
চ্যামেলিওনঃ
২০২ প্রজাতির টিকটিকির মধ্যে এরা অনেক উন্নত মানের এবং বিশেষ ভাবে রুপান্তরিত। অন্যদের তুলনায় এরা নিজেদের রং দ্রুত পরিবর্তন করতে পারে। এরা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এবং গিরগিটির মত রং পরিবর্তন করতে পারে। উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করলে এদের পোষা প্রাণী হিসাবে বাসাতে রাখা যায়।
এ রকম আরও অদ্ভুত সব প্রাণী সম্পর্কে জানতে আমাদের সাথেই থাকুন। আপানাদের মূল্যবান মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কমেন্ট করুন। নতুন কোন তথ্য জানা থাকলে আমাদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু।