অদ্ভুত প্রানী এর সমাহার এই পৃথিবীতে। মাদাগাস্কার পৃথিবীর অন্যন্য জায়গার মধ্যে অন্যতম। কেননা এটি একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। এই পৃথিবীর ৭০ ভাগ জল এবং ৩০ ভাগ স্থল দ্বারা গঠিত। আমাদের এই কথা মনে হওয়া স্বাভাবিক যে আকাশপথে সম্পূর্ন পৃথিবীতে ভ্রমন কম সময়ে অতি সহজে যাওয়া যায়। কিন্তু এই কথা বাস্তবে সত্য নয়। বাস্তবিক অর্থে এই পৃথিবী সমুদ্র দ্বারা বেষ্টিত। দেশের সাথে দেশ, মহাদেশের সাথে মহাদেশ এই সমুদ্র পথেই একে অপরের সাথে বেষ্টিত। এই দ্বীপে প্রায় ২৫,০০০ হাজার প্রজাতির প্রানীদের দেখা পাওয়া যায়। তবে এদের মধ্যে অনেক প্রজাতি বিলুপ্ত হওয়ারে পথে। এই দ্বীপ সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য এই মাদাগাস্কার নামের ফিল্মে ভালভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
মাদাগাস্কার দ্বীপ সম্পর্কে আমরা অনেক কিছুি জানিনা। কেননা এটি আমাদের থেকে অনেক দূরে এবং এটির সম্পর্কে জানার আগ্রহ অনেক কম। এমন সব প্রানীদের মধ্যে এমন কিছু অদ্ভুত প্রানী হয়েছে। এমন সব অদ্ভুত প্রানীদের সম্পর্কে আমাদের জানার জন্যই আজকের এই আর্টিকেল। কিন্তু ২৫,০০০ হাজার প্রজাতির মধ্যে একটিকেও যে আমরা জানিনা বা চিনি না এমন না বিষয়টি। কিন্তু অজানা প্রানীদের সংখ্যা বেশিই। মাদাগাস্কার আফ্রিকার মোজাম্বিক, জিম্বাবুয়ে সহ অন্যান্য দেশের পার্শ্ববর্তী সমুদ্রের মধ্যে মাদাগাস্কার অবস্থিত।
ম্যান্টেলাঃ
এটি মূলত মাদাগাস্কারের একটি ব্যাঙের নাম। এটি কাল এবং সবুজ, কাল, হলুদ কিংবা বাদামী রঙের হয়ে থাকে। মজার বিষয় হল এরা শুধুমাত্র আফ্রিকার এই দেশটিতেই দেখতে পাওয়া যায়। এরা কিছুটা স্যাঁতস্যাতে মাটিতে থাকতে পছন্দ করে থাকে। কিন্তু ঐ রকম স্যাঁতস্যাতে হওয়ার পরও পরিবেশের
তাপমাত্রা ৭৫ থেকে ৮১ ডিগ্রী সেন্ট্রিগ্রেড হয়ে থাকে।এরা তৃনভোজী নয় বরং অন্যান্য পোকা-মাকড় খেয়ে বেঁচে থাকে। এরা দিনের বেলায় বেশি এক্টিভ থাকে এবং খুব ছোট এলাকায় নিজেদের আধিপত্য স্থাপন করে। দেখতে অনেক সুন্দর এবং আকর্ষনীয় হলেও এদের শরীরে টক্সিক কিংবা বিষাক্ত পদার্থ থাকে যা মানুষের সংস্পর্শে থাকলে মানুষের মৃত্যুর কারন হতে পারে।
টেনরেকঃ
মাদাগাস্কারের নিচু এলাকায় এদের দেখতে পাওয়া যায়। এদের দেখতে অনেকটা বিচ্ছরি এবং অপরিষ্কার দেখতে। এদের লেজ অনেক লম্বা হয় এবং এদের সম্পূর্ন শরীর লোমে ভর্তি এবং এদের শরীরের লোমের কিছু অংশ হলুদ রঙের লোমে ঢাকা এবং কালো অংশের লোমে বেশি আবৃত। এরা দিনে এবং রাতের বেলায়ই অ্যাক্টিভ থাকে। এরা প্রাথমিক ভাবে পোকা-মাকড় খেয়ে থাকে। এরা অনেকটা ঘুতা মেরে মেরেও ধরে থাকে। এরা ছোট মাছ এবং ব্যাঙেকেও খাবার খেয়ে থাকে।
লম্বা কানের প্যাঁচাঃ
অন্যান্য প্যাঁচা দেখতে আকারে ছোট হয়ে থাকে। কিন্তু এই দ্বীপের প্যাঁচা গুলো বাকি সব প্রজাতির চেয়ে আলাদা বড় আকারের। এরা ৫০ সে.মি লম্বা হয়ে থাকে যা প্যাঁচাটিকে অন্যান্য প্রানীর চেয়ে বেশি আকর্ষনীয় হিসেবে করে তুলেছে। স্ত্রী প্রজাতির প্যাঁচাগুলা পুরুষ প্রজাতির প্যাচার চেয়ে লম্বা হয়ে থাকে। স্ত্রী এবং পুরুষ প্রজতির মধ্যে পার্থক্য বাদামি রঙের মাথার মুকুট অথবা এবং মুখ। পুরুষ প্রজাতির এই চোখের আশেপাশের অংশ সাদার মধ্যে কাল চঞ্চু দেখতে পাওয়া যায়।
বাদুড় সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন
অদ্ভুত প্রানীঃ
এটির নাম আয়ে আয়ে যা একটি নিশাচর প্রানী। রাতের বেলায় গাছের মগডালে এদের দেখতে পাওয়া যায়। এদের পায়ের নখগুলো অন্যান্য প্রানীর চেয়ে বড় হয় এবং লেজ লম্বা ও মোটা হওয়াই এরা খুব ভালভাবে ব্যালেন্স করতে পারে। এরা বাদুড়ের মত প্রতিধ্বনি ব্যাবহার করে শিকারকে নির্দিষ্ট করে থাকে এবং চলাফেরা করে থাকে।
এদের চোখ কান অত্যান্ত সজাগ এবং সেন্সিটিভ হিসাবে কাজ করে; যা তাদের খাবার খুজতে এবং চলফেরা করতে পছন্দ করে। এদের এই অদ্ভুত এবং ভয়ংকর কিছুটা লুকের জন্য ঐ দেশের মানুষ ঐ প্রানীর সাথে দেখা হওয়া অভিশাপ হিসেবে মনে করে। তবে এই প্রানীটি বর্তমানে বিলুপ্তপ্রায়।
সুন্দর পাখিঃ
এটি মাদাগস্কারের সর্বত্র দেখতে পাওয়া পাখিগুলোর মধ্যে একটি। মাদাগাস্কার ঐ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় দ্বীপ এবং তার আশে পাশে আরও ছোট দ্বীপ কমোরোস এবং সাইসিলিস ইত্যাদি অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায়। এরা ১২.৫ থেকে ১৩.৫ সে.মি যা ওজনে ২০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। এদের শরীরটা লাল এবং কমলার রঙের সংমিশ্রন যা অনেক সুন্দর দেখায়। একই সাথে এদের লেজ জলপাই রঙের এবং খাটো হয়ে থাকে। এরা দেখতে এত সুন্দর পাখি হলেও এরা এরা বিপন্ন প্রায় প্রজাতি।
সুন্দর প্রজাতির পাখিদের সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন
পরিশেষে, মাদাগস্কারের অদ্ভুত প্রানীদের সম্পর্কে অনেক কিছু জানা গেল কিন্তু এখানেই শেষ নয়। বরং এদের সম্পর্কে আরও তথ্য আগামীতে জানানো হবে এবং অন্যান্য আরও প্রানী আছে যাদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানা দরকার। অদ্ভুত প্রানীদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টাই আজানা দ্বীপ এবং তার প্রানী সম্পর্কে জানার আগ্রহ বাড়িয়ে দেয়। একই সাথে অনেক সুন্দর প্রানীদের দেখা মিলে এই মাদাগাস্কারে।