বন্য জীবজন্তুর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চলাক প্রানী হিসেবে শিয়াল গন্য করা হয়। এমনটি বলা হয় কারন শিয়াল কিংবা শৃগালকে অন্য সকল প্রানীর সাথে চালাকির বিভিন্ন গল্প আমরা পড়ে থাকি। বিশেষ করে নীতিমূলক অনেক গল্পের উদাহরনের চরিত্রে শৃগালকে দেখা যায়। এবং গল্প শেষে একটি উপদেশ এবং শিক্ষা পেয়ে থাকি। এমন আরও নীতিমুলক গল্প আছে যাদের আমরা ঈশপের গল্পের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। প্রানীভেদে বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে কোন প্রানী চালাক অথবা বোকা হয়। আর চালাক প্রানী কখনই নিজের থেকে বেশি চালাক প্রানীর সাথে প্রতিযোগিতায় যায় না।
শিয়ালকে গ্রামের দিকে অনেক সময় খ্যাক শিয়ালও বলা হয়ে থাকে। গ্রামে শিয়ালের অত্যাচার একটু বেশি হয় গোধুলির সময় কিংবা ভোরে। এই সময় এরা গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে মুরগি ধরে নিয়ে যায়। এই কারনে গ্রামীন জীবনে সাধারন মানুষ এই বিষয় নিয়ে সতর্ক থাকে। তবে মাঝে মাঝে চালাকি করতে গিয়ে নিজেকেই ফাঁদে ফেলে। এমন ঘটনার গল্প “লেজ কাটা শিয়াল” সবারই জানা। এছাড়াও আরও একটি গল্প আছে শিয়াল এবং কাকের। এটিও বেশ পপুলার। শিয়ালের সম্পর্কে এমন অনেক বৈশিষ্ট্য আছে যা আমরা জানি না অথবা জানার চেষ্টা করা হয়নি। চলুন জেনে নেওয়া যাক।
অন্য প্রানীর সাথে মিলঃ
বিড়াল রাতের বেলা অন্ধকারেও খুব সুন্দর ভাবে স্পষ্ট দেখতে পাওয়া যায়। একই ভাবে বিড়ালের মত শিয়ালও নিশাচর প্রানী। এরা রাতের বেলা শিকারে বের হয়। বিড়ালের মত এদের চোখের পিউপিল বিশেষ ভাবে থাকার জন্য মৃদু কিংবা হালকা আলোতে এরা আরও বেশি দেখতে পাওয়া যায়। এরা এদের শিকার ধরার জন্য গাছেও উঠে। ধূসর বর্নের এক ধরনের শিয়াল আছে যারা বিড়ালের মত নখ দ্বারা আঁচড় দেয়।

আণ্ডারগ্রাউণ্ড চালাক প্রানীঃ
এরা পূর্ব থেকেও মাটির নিচে গর্তে থাকা পছন্দ করে। স্ত্রী প্রজাতির শিয়াল তার বাচ্চাদের নিয়ে এই গর্তে ভালভাবে থাকতে পারে। গর্তের আকার এমন হয় যেন একসাথে মা সহ ১১ টি শিয়ালের বাচ্চা অনায়সে থাকতে পারে।ভাল্লুখ এবং নেকড়ের মত অনেক শিকারি প্রানীই মাটির নিচে থাকে। স্বাভাবিক ভাবেই কোন মানুষই চায় না যে তার বাড়ির আশেপাশে শিয়াল কিংবা এমন শিকারী প্রানী ঘুরে বেড়াক। এজন্য তাদের মেরে না ফেলে নিরাপদ ভাবে ঐ স্থান থেকে সরিয়ে দেওয়াই উত্তম।

শরীরের দুর্গন্ধঃ
শিয়ালের শরীর থেকে প্রচন্ড রকমের দুর্গন্ধ বের হয়। এই দুর্গন্ধ তাদের লেজ এবং শরীরের বিভিন্ন গ্রন্থি থেকে বের হয়। এরা যে জায়গায় থাকে সেখানের আশেপাশে দুর্গন্ধ যদি আপনি আপনার বাড়ির আশেপাশে পান তাহলে নিশ্চিত থাকতে হবে আশেপাশে শিয়াল আছে। এমন হলে কিছুটা সচেতন থাকাই ভাল। এরা অন্যান্য প্রানীর চেয়ে অনেক একা থাকতে পছন্দ করে। এরা বেশিভাগ সময় একা শিকার করে খেয়ে দেয়ে একাই ঘুমাতে পছন্দ করে।

আওয়াজঃ
বিভিন্ন প্রানী এক ধরনের কিংবা বিশেষ করে দুই ধরনের শব্দ কিংবা আওয়াজ বের করে থাকে। কিন্তু শিয়াল ৪০ ধরনের আওয়াজ বের করতে পারে। তবে এতগুলোর মধ্যে এদের হাওলিং বা গর্জন সবচেয়ে বেশি ব্যাবহার করে। গভীর জঙ্গলে এদের এই গর্জন শুনলেই শিড়ডাড়া কাঁপে উঠে। এদের নিজেদের মধ্যে বিরোধ হলে এরা আলোচনার মাধ্যমে তার সমাধান ব্যবহার করে থাকে। লাল প্রজাতির শিয়াল আছে যা অন্য সবগুলো প্রজাতির চেয়ে আক্রমনাত্মক।
চালাক প্রানীর মত সুন্দর প্রানীদের সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন

এরা নিজেদের ঘর রক্ষা করার জন্য হলেও মাঝে মাঝে হিংস্রতা দেখায়। এরা যেমন জোরে আওয়াজ ক্রে বেড়ায় একই ভাবে এদের শ্রবনশক্তি অনবধ্য ধরনের। প্রায় ৪০ ইয়ার্ড দূরে থেকে এরা যে কোন কিছু স্পষ্ট শুনতে পায়। তবে শিয়ালরা খেলতে বেশি পছন্দ করে। এরা অন্য কোন শিয়ালের সাথে কিংবা মাঝে মাঝে অন্য প্রানী যেমন হরিন ইত্যাদির সাথেও খেলতে দেখতে পাওয়া যায়।
পরিশেষে, চালাক প্রানী হিসেবে শিয়ালের সাথে অন্য প্রানী খুব কমই জিততে পারে। এরা কিছু ক্ষেত্রে চালাকি কাজে লাগায়। এজন্য এদের অনেকে বুদ্ধিমান প্রানীর তালিকার অন্তর্ভুক্ত করে থাকে। এমন চালাক প্রানীদের সম্পর্কে জানার জন্য আমাদের সাথেই থাকুন এবং আপনাদের মুল্যবান মন্তব্য আমাদের সাথে শেয়ার করুন।