বন্য জীবজন্তু মধ্যে জেব্রা দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি ভাবে বনে জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানো নিরীহ প্রাণী। এদের খোলা চারণভূমিতে দেখতে পাওয়া যায়। গহীন জঙ্গলে খুব কমই থাকে বরং এরা খোলা উন্মুক্ত জায়গায় এবং ঘাস যুক্ত জমিতে চরে বেড়ায়। এরা সর্বদায় দলবেঁধে চলাফেরা করে এবং হাতির মতই পরিবারের সাথে থাকে এরাও সামাজিক প্রাণী।
টাইটেল দেখে অনেকের মনে প্রশ্ন বিচিত্রা মনে হলেও ঘটনাটি আসলেই সত্য। আমাদের খালি চোখে কালো এবং সাদা স্ট্রাইপ বা প্যাটার্ন চামড়ার ওপর রয়েছে তা কখনোই একটি জেব্রা সাথে অন্য একটি জেব্রার মেলেনা। এমনকি পুরুষ প্রজাতি এবং স্ত্রী প্রজাতির জেব্রার মিলনের ফলে যে নবজাত জেব্রা পাওয়া যায় সেটার প্যাটার্নের ধরনের মিল থাকলেও প্যাটার্ন কখনো হুবহু মিল থাকেনা। এটা জেনেটিক্যালি অথবা প্রাকৃতিকভাবেই সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য যা অন্যান্য প্রাণীদের থেকে সম্পূর্ণ পৃথক করে রেখেছে।
মানুষের সাথে জেব্রার মিল কোথায়ঃ
মানুষের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে সেটি হচ্ছে কখনোই দুজন মানুষের ফিঙ্গারপ্রিন্ট এক হয় না। এমনই সাদৃশ্যপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ঐ স্ট্রাইপ এর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। মানুষের ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিবর্ধক কাচ বা ম্যাগনিফাইন গ্লাস দিয়ে খুব সুন্দর ভাবে স্পষ্ট দেখা যায় কিন্তু খালি চোখে তেমন ভালভাবে দেখা যায় না। জেব্রার প্যাটার্নও একইভাবে জুম করলে অথবা মাইক্রোস্কোপিক ভাবে সহজ কথায় ভিন্নতা বোঝা যায়।
এ কেমন তথ্যঃ
এদের আরো একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো বাচ্চা জন্ম নেওয়ার 6 মিনিট পরেই বাচ্চা দাঁড়াতে পারে। অন্যান্য প্রাণীদের ক্ষেত্রে নবজাতক বাচ্চার দুর্বল হয় দাঁড়াতে পারে না বিভিন্ন কিছু করতে অক্ষম থাকে। কিন্তু জেব্রার নবজাতক জন্মের পর পরই ভালো ভাবে দাঁড়াতে পারে এবং নিজের শরীরকে স্ট্যাবল রাখতে পারে। গরুর বাছুর যেমন বেশি ছোট থাকা অবস্থায় লাফিয়ে বেড়ায় এই নবজাতক যেমনি ভাবে লাফিয়ে বেড়ায়।
ছদ্মবেশঃ
জেব্রার শরীরে লাল-কালো যে স্ট্রাইপ গুলো থাকে এগুলো তাদের শত্রু কিংবা শিকারের হাত থেকে বাঁচতে সাহায্য করে। এদের প্যাটার্ন হওয়ার কারণে প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে নিজেদের লুকিয়ে নাই এতে করে যে প্রাণী শিকার করতে আসছে সহজে খুঁজে পায়না। এটা তাদের জন্য বেঁচে থাকার একটি লাইফলাইন হিসেবে কাজ করে।
পরিশেষে যে পারে বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কারণ এবং অন্যান্য লক্ষণ ভালোভাবে বোঝা গেল। অন্য যে কোন প্রাণীর এরকম বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা তাদের বাকি সব প্রাণী থেকে আলাদা করে রেখেছে। আপনাদের কাছে এমন কোন তথ্য থাকলে তা কমেন্ট বক্স এর মাধ্যমে আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। লেখাটি ভালো লাগলে অবশ্যই আপনারা আপনাদের সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করবেন। তদন্ত ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন এবং নিরাপদে থাকুন।
বেশি দূরত্ব অতিক্রম করেঃ
আফ্রিকার অন্যান্য প্রজাতির তৃনভোজী প্রানীদের জন্য দাড়িয়ে থাকা এবং বেশি দূরত্ব অতিক্রম করা খুব বেশী সমস্যা হয় না। কেননা এরা খাবাররে খোঁজে আফ্রিকার বৃহৎ চারনভূমি এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ঘুরে বেড়ায়। এরা এভাবে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বেশি মাইগ্রেট করে থাকে এবং আফ্রিকার আশেপাশে ৫০০ মাইল পর্যন্ত তানজিনিয়া এবং কেনিয়াতে মাইগ্রেট করে থাকে। এদের সাদা কালো স্ট্রাইপ যখন অনেক দূর দিগন্তে দল বেধে দৌড়াতে থাকে তখন তৎখনাৎ ড্যাজেলিং বা আকর্ষনীয় বা জ্বলজ্বল করে চোখে লাগে। এই বিষয়টি অন্য প্রানীদের ক্ষেত্রে ঘটে না। শুধুমাত্র এদের ক্ষেত্রেই ঘটে ভিন্ন রঙের ( সাদা এবং কালো ) রঙের হয়ে থাকে।
পরিশেষে, জেব্রা এবং ঘোড়ার মধ্যে বাহ্যিকভাবে মিল রয়েছে। এর একমাত্র কারন হল এদের গোত্র একই ধরনের কিন্তু প্রজাতি আলাদা। পরবর্তীতে সময়ের সাথে সাথে গোত্র একই হলেও প্রজাতি আলাদা হওয়ার কারনে জেব্রা এবং ঘোড়া পৃথক প্রানী হয়েছে। ঘোড়া ঘাড়ের উপর গুচ্ছের মত চুল থাকে যা দৌড়ানোর সময় উড়ে বেড়ায়। অ্যারাবিয়ান হর্সের ক্ষেত্রে এমনটি দেখা যায়।