ষড় ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশের এই সুন্দর প্রাকৃতির আবহওয়া ও পরিবেশ এই ষড় ঋতুরই ফল।বর্ষাকালে আমাদের দেশ ( বাংলাদেশ ) এ প্রচুর পরিমানে বৃষ্টি হয়। আষাঢ়- শ্রাবন দুই মাস বর্ষাকাল। এই সময়ে বাংলাদেশে বন্য হয়ে থাকে। বন্যার কারনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল প্রাকৃতিক কারন এবং মানব সৃষ্ট কারন আছে। তবে বর্তমানে আবহওয়ার এমন হওয়ার পিছনে মানব সৃষ্ট কারনই উল্লেখযোগ্য। কেননা পরিবেশ রক্ষায় আমাদের গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা অবহেলিত হচ্ছে একই সাথে বৃক্ষ নিধন হচ্ছে। গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারনে গাছ আমদের এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ হতে রক্ষা পাচ্ছি না। বর্তমানে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতির দিকে। সাধারন মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনে পশুপাখি, বন্য জীবজন্তু এবং গৃহপালিত জীবজন্তু পর্যন্ত টিকে থাকা অনেক মুশকিল হয়ে গেছে। এসময় অনেকের মৎস্য ক্ষেত্র নষ্ট হয়ে যায় এবং মাছ কোন দিকে চলে যায় তার কোন ঠিকানা থাকে না।
বন্যা কবলিত এলাকা থেকে উদ্ধারঃ
বন্যা কবলিত এলাকায় সাধারন মানুষের সাথে পশুপাখিও ঐ প্রতিকূল পরিবেশ হতে উদ্ধার করতে হবে। পোষা প্রানী, গবাদি পশু, অন্যান্য জীবজঅন্তু কীভাবে বন্যা কবলিত এলাকায় সার্ভাইভ করতে পারে তার জন্য আজকের আর্টিকেল। বন্যা কবলিত এলাকায় সাধারন মানুষের সাথে নিজেদের গবাদি পশুকেও সর্বপ্রথম উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যেতে হবে। অবস্থার অবনতি হওয়ার পূর্বেই নিরাপদ জায়াগায় পৌছানর কোন বিকল্প নেই। আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষের পাশাপাশি নিজেদের গবাদি পশুকেও রাখতে হবে। তবে এসময় আশ্রয়কেন্দ্রের পরিবেশের কথা খেয়াল রেখে মানুষের জন্য আলাদা জায়াগা এবং পশুদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্রের পাশে অবস্থিত কোন সুনির্দিষ্ট জায়গা নির্ধারন করতে হবে। একসাথে অনেকের প্রানী থাকতে পারে এক্ষেত্রে নাম্বারিং ট্যাগ ব্যবহার করে পারেন যাতে করে আপনি আপনা গবাদি পশু পরবর্তীতে ফিরিয়ে পেতে কোন অসুবিধা হবে না।
আমাদের বাড়ির আশেপাশে রাস্তা-ঘাটে অনেক ধরনের কুকুর বিড়াল সহ অন্যান্য প্রানীদেখতে পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই নিজদের গবাদি পশুর পাশাপাশি এসব প্রানীর কথাও চিন্তা করতে হবে এবং এদের শেলটার সেন্টারে নিয়ে আসতে হবে। শুধু নিজেদের গবাদি পশুর চিন্তা করলেন কিন্তু এসব প্রানীর চিন্তা করলেন না সেক্ষেত্রে বিষয়টি মোটেও ভাল দেখায় না। পোষপ্রানী গুলোর জন্য শুকনা জাতীয় খাবার এর ব্যবস্থা রাখা উচিত।
টিকে থাকাঃ
বন্যা কবলিত এলাকায় অনেক প্রানীদের ডুবতে দেখা যায় শুধুমাত্র বাঁচার আশায়। কারন তারা হয়ত সাঁতার পারে না বা সাঁতার কাটতে পারে না। পানির স্রোত বেশি হওয়াই এরা টিকতে পারে না। তবে কিছু কিছু প্রানী সাতার কাটতে পারে (যেমনঃ কুকুর )। তবে পানির স্রোতের সামনে টিকে থাকা যথেষ্ট বেশী মুশকিল হয়। বন্যা কবলিত এলাকায় সবচেয়ে বেশি পরিমান রোগ ছড়ানোর সম্ভবনা থাকে। পানিবাহিত রোগ অল্প সময়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এসময় সাধারন মানুষের জন্যও বিভিন্ন ধরনের মেডিসিন স্টক করে রাখতে হয়। যাতে কারে আশ্রয়কেন্দ্রে অসুস্থ লোকদের প্রয়োজনের সময় কাজে আসে। একই ভাবে পোষা প্রানী গুলোর মধ্যেও রোগছড়িয়ে থাকতে পারে। আবার ঐ সব প্রানী থেকেও সাধারন মানুষ রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
পরিশেষে, বন্যা একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের নাম। কেউই কখনও চায় না সে প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হোক এবং সে তার পরিবারের সাথে ঐ পরিস্থিতির মধ্যেও পড়ুক। এমন পরিস্থিতিতে আমদের কি করা উচিত তা নিয়ে আমাদের অনেকের সঠিক ধারনা নেই। অর্থাৎ এমন পরিস্থিতি কিভাবে মোকাবেলা করা যায় তা নিয়ে ধারনা কম। এই কারনে এসব বিষয় নিয়ে আমাদের সচেতনতা বাড়াতে হবে। সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি বর্তমানে ভয়াবহ হওয়ার কারনে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আসাই বাঁচার উপায়। এখানে সাধারন মানুষের পাশাপাশি পশুপাখি এবং গবাদি পশু উদ্ধারেও এগিয়ে আসতে হবে।