স্মার্ট প্রানী শব্দটির সাথে আমরা সাধারনত খুব বেশিপরিচিত নই।স্মার্ট ফোন অথবা স্মার্ট টেকনোলজি এই দুটি শব্দের সাথে আমরা দৈনিন্দন জীবনে প্রচুর ব্যাবহার করি। সাধারন পোষা প্রানী অথবা নিরীহ প্রানীদের মধ্যে কয়েকটি প্রানী তাদের আচরন এবং সামান্য বুদ্ধিমত্তার জন্য সেসব স্মার্ট প্রানী হিসেবে বিবেচিত হয়।সহজ কথায় চালাক প্রানীদের স্মার্ট প্রানী বলা চলে।প্রানীদের বিহেভিয়ার প্রজাতিভেদে আলাদা হয়ে থাকে।তাদের বিহেভিয়ার এমন আলাদা হওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রানীকে পোষ মানাতে সময়ও বেশি লাগে।
প্রানীরা মানুষের পোষ মানে।তবে হিংস্র প্রজাতির প্রানীরা সহজে পোষ মানে না।বরং তারা মানুষের প্রতি আক্রমনাত্মক হয়।গৃহপালিত প্রানীরা মানুষের প্রতি বিশ্বস্ত থাকে বেশি।বিশ্বস্ত প্রানীর মধ্যে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট হল কুকুর।বিড়াল, কুকুর, বিভিন্ন রকম পোষা পাখি ইত্যাদি মানুষ পুষতে পছন্দ করে।এসব প্রানীদের প্রতি এরা এত বেশি আকৃষ্ট থাকে যেন প্রানীগুলো দৈনিন্দন জীবনের অংশ হয়ে যায়।সাধারনত স্মার্ট প্রানী বলতে অনেক স্পেশাল কোন প্রানীকে বুঝায় না।বরং আমাদের আশেপাশে থাকা প্রানীগুলোর মধ্যে অনেক প্রানীই স্মার্ট প্রানী। চলুন স্মার্ট প্রানীদের সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ইঁদুরঃ
অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি ইঁদুরদের উপর ল্যাবরেটরিতে রিসার্চ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের এক্সপেরিমেন্ট করা হয়।অন্যান্য প্রানীদের চেয়ে এদের মস্তিষ্ক অনুন্নত। তবে এদের মন বা মানষিক আচরন মানুষের মস্তিষ্কের সাথে অনেকটাই সাদৃশ্যপূর্ন।এরা বিভিন্ন ধরনের ঘটনা, যেসব পথে চলাফেরা করে সেসব রাস্তা মুখস্থ এবং একই সাথে মাল্টি টাস্কিং করতে পারে। এসব বিবেচনায় ইঁদুর স্মার্ট প্রানীদের তালিকার অন্তর্ভূক্ত।
কবুতরঃ
কবুতরকে শান্তির প্রাতীক বলা হয়।বর্তমানে যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে স্মার্ট ফোন ম্যাসেজিং সহ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়।কিন্তু প্রাচীনকালে ম্যাসেজ বা বার্তা পাঠানোর একমাত্র মাধ্যম হিসেবে কবুতরকে ব্যবহার করা হত।এরা যেমন নিজেদের ব্যাপারে সচেতন ঠিক তেমনি ভাবে স্মরনশক্তিও
প্রখর।এরা সহজে ব্যাক্তি কিংবা স্থান ভুলে যায় না।এজন্যই এরা চিঠি-পত্র সঠিক ব্যক্তির নিকট পৌছে দেয়।এরা ইংরেজি বর্ণমাল চিনতে পারে। একই সাথে দুটি আলাদা ব্যাক্তির ছবি দেখালে এরা সহজেই বাস্তবে ব্যাক্তি দুটিকে চিহ্নিত করতে পারে।
কাকঃ
কবুতরের মত এরাও মেসেঞ্জার বা বার্তাবাহক হিসেবে কাজ করে।যদিও আমরা কাককে অনেকেই অপছন্দ করি।এরা অন্যান্য প্রানীদের সাথে লড়াই করার সময় বিভিন্ন ধরনের কৌশল অবলম্বন করে।এছাড়া এদের স্মৃতিশক্তি প্রখর হওয়ায় এরা বিভিন্ন কিছু মনে রাখতে পারে একই সাথে সর্বদাই নতুন কোন কিছু শিখার চেষ্টায় থাকে।অন্যান্য পাখিদের চেয়ে এদের মস্তিষ্ক বেশ বড় এবং এরা মানুষের চেহারা মনে রাখতে পারে।
শুকরঃ
আমাদের নিকট অনেক অপছন্দের প্রানী হলেও এরা যথেষ্ট বুদ্ধিমান।কুকুরদের চেয়েও এরা বেশি বুদ্ধিমান।এ কারনে শুকরকে পঞ্চম বুদ্ধিমান প্রানী হিসাবে বিবেচিত হয়।এদের আই কিউ অন্যান্য প্রানীদের চেয়ে বেশি।এরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য ২০ ধরনের আওয়াজ করে থাকে।মাতৃ শুকরগুলো বাচ্চাদের খাওয়ানোর সময় গান গায়। এরা নিজেদের আবেগ প্রকাশ করতে পারে এবং অন্যাের প্রতি সহানুভুতি প্রকাশ করতে পারে।
স্মার্ট প্রানীঃ
পাখিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বুদ্ধিমান প্রানী হিসেবে এরা সর্বদাই তালিকার শীর্ষে অবস্থান করে।পাঁচ বছর বয়সী বাচ্চার যে পরিমান বুদ্ধি থাকে ঠিক তার সমপরিমান বুদ্ধি এই পাখির রয়েছে।এজন্য এরা যেমন মানুষের কথা-বার্তা শিখে থাকে একই সাথে ভোকাবুলারি বা শব্দ ভান্ডারও মুখস্থ করে।এরা রঙ, আকৃতি,ছোট-বড় সম্পর্ক, পার্থক্য সহ আরও অনেক কিছু শিখে থাকে।সহজ কথায় ছোট বাচ্চারা কিন্ডারগার্টেনে যে সব শিক্ষা পায় তার প্রায় সম্পূর্ন শিক্ষাই এই পাখি রপ্ত করে থাকে।এরা প্রকৃতপক্ষে আফ্রিকান তোতা পাখি।
পোষা লাভবার্ড প্রজাতির সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন
অক্টোপাসঃ
অমেরুদন্ডী প্রানীদের মধ্যে এরাই সবচেয়ে বেশি বুদ্ধিমান প্রানী।এরা অত্মরক্ষার জন্য এক ধরনের বিষাক্ত কালি ছুড়ে দেয়। এই কালি প্রতিপক্ষকে প্যারালাইজড করে দিতে পারে।যদিও এরা কোন বিপদে পড়ে তবে সহজেই এরা সেখান হতে বেরিয়ে আসতে পারে।এই কাজটি অন্য অমেরুদন্ডী প্রানীরা সহজে করতে পারে না।
পরিশেষে,স্মার্ট প্রানীদের সম্পর্কে অনেক কিছুই জানা গেল।তবুও স্মার্ট প্রানীদের তালিকা এখানেই শেষ নয়।বরং অন্যান্য আরও প্রানীদের সম্পর্কে জানার জন্য আমাদের সাথেই থাকুন।আপনাদের যে কোন মন্তব্য কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে আমাদের সাথে শেয়ার করুন।ভাল থাকুন,সুস্থ থাকুন।