অদ্ভুতসব প্রানীর অদ্ভুত সব বেশ। আমাদের জীবজগতে প্রানীদের সংখ্যার কোন কমতি নেই। দিন দিন এদের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।এতে করে প্রানীজগত যেমন সমৃদ্ধ হচ্ছে ঠিক একই ভাবে নতুন নতুন প্রানীদের আবিষ্কার হচ্ছে।সমুদ্রের তলদেশের প্রানীদের সমন্ধে আমরা অনেক প্রজাতি সম্পর্কে এখনও অজানাই রয়েছে।সমুদ্রের তলদেশের গভীরতার উপর নির্ভর করে অনেক ধরনের প্রানী বাস করে। কিন্তু সকল প্রানী সকল স্তর বা লেয়ারে সার্ভাইভ করতে পারে না।
যে প্রানী বা মাছ যে অঞ্চলেই বাস করুক সেখানে তার খাদ্যের ব্যবস্থাও করে রেখেছে সৃষ্টিকর্তা। সমুদ্রের তলদেশে এমন সব জায়গা রয়েছে যেখানে ঘুটঘুটে অন্ধকার থাকে। সেখানে সাধারন কিংবা প্রফেশনাল ডুবুরীদের গমন সম্ভব নয়।এমন সব জায়গায় সূর্যের আলো সহজে পৌছাতে পারে না। এজন্য এসব স্থানগুলো সর্বদা অন্ধকার থাকে। সাবমেরিন কিংবা মিনি সাবমেরিন এরা সমুদ্রের নিচে অনেক দুর পর্যন্ত গেলেও এদেরও একটি নির্দিষ্ট সীমা আছে।
সমুদ্রের নিচের অঞ্চলগুলো নিয়ে সমুদ্র বিজ্ঞানীগন নিত্য নতুন গবেষনা এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছন।বিশ্বের উন্নত দেশগুলো এই বিষয়ে অনেক দুর পর্যন্ত এগিয়ে গিয়েছে।কিন্তু বাংলাদেশও এই সেক্টরে পিছিয়ে নেই।
আমাদের দেশের অর্থনীতি সমুদ্র নির্ভর।সমুদ্র নির্ভর অর্থনীতিকে “ব্লু ইকোনোমি” বলা হয়। এই বিষয় নিয়ে বর্তমানে অনেক গবেষনা চলছে।এই খাতের সম্ভবনা অনেক ভাল। এজন্য আমাদের দেশেও সমুদ্রের রিসার্চের উপর গুরুত্ব দিচ্ছে। বঙ্গোপসাগরের সোয়াচ অফ নো গ্রাউন্ডে হাঙ্গর এবং ডলফিন সহ বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের দেখতে পাওয়া যায়। আজকে আমারা ঐ সব প্রানীদের সম্পর্কে জানব যে এদের দেখতে সম্পূর্ন অপরিচিত লাগে, অদ্ভুতসব প্রানী এবং ভিনগ্রহী মনে হয়।চলুন জেনে নেওয়া যাক।
তারার পালকঃ
বাস্তবিক ভাবে এদের নাম মোটেও তারার পালক নয়।এদের ইংরেজিতে “Feather Star” বলে।মাছদের চেয়ে দেখতে সম্পূর্ন বিচিত্র হলেও এদের সামুদ্রের সুন্দর প্রানীদের মধ্যে অন্যতম বলা যায়।জেলিফিশ যেভাবে সমুদ্রের নিচে চলাচল করে এরাও তেমনিভাবে চলাচল করে।এরা এদের পালক গুলো পানির নিচে সর্বদা নাড়ায়। এভাবে তারা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গমন করে।অগভীর পানিতে এদের সবচেয়ে বেশি দেখতে পাওয়া যায়।তবে মাঝে মাঝে সমুদ্রের তলদেশে হতে ৯ কি.মি অঞ্চলের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায়।
গ্যালাকুছ প্রানীঃ
সমুদ্রের নিচে এদেরকে সামুদ্রিক ড্রাগন হিসাবে ধরা হয়।কেনন এদের বাহিরের রুপ এবং বৈশিষ্ট্য সম্পুর্ন ড্রাগনের মত।এরা সমুদ্রের নিচে দারুন ভাবে উড়ে বেড়ায়।উল্লেখ্য যে পানির নিচে উড়ে বেড়ানো এবং পানির নিচে ভেসে বেড়ানো একই কথা।এদের শরীরের উপরের পৃষ্ট নীল এবং সাদার দারুন কম্বিনেশনে চোখ রাঙানো রঙ রয়েছে।
তবে এদের শরীরের নিচের অংশে সোনালী বা সিলভার কালারের।১০ টি সামুদ্রিক বিপদজ্জনক প্রাণীর এ কি অবাক কাণ্ড জানতে ভিজিট করুন
অদ্ভুতসব প্রানীঃ
চিংড়ি চিনি না কিংবা খাইতে পছন্দ করি না এমন ব্যাক্তি খুঁজে পাওয়া মুশকিল।আমাদের দেশের চিংড়ি হিসাবে আমরা মুলত গলদা চিংড়ি এবং বাগদা চিংড়িকেই বুঝে থাকি।খাবার টেবিলেও এদের দেখা মিলে বেশি।কিন্তু সমুদ্রের নিচের তলদেশের ঘাসফড়িং এর মত এক ধরনের চিংড়ি পাওয়া যায়।এদের নাম ইংরেজিতে Mantis shrimp বলা হয়।এদের শরীরে রংধনুর সাতটি রঙের উপস্থিতি এবং এদের কম্বিনেশেনও দেখতে পাওয়া যায়।
ড্রাগনের পাতাঃ
এদের দেখলে মনে হতে পারে এরা পাতার উপর বাস করে থাকে।কিন্তু বাস্তবিক অর্থে এরা একধরনের মাছ।এদের শরীরের সাথে গাছের কম্বিনেশনে এদের এমন দেখায়।এদের অনেকটা সী-হর্সের মত দেখায়।কিন্তু প্রকৃত অর্থে এদের মত অন্য প্রানীদের সহজে দেখা পাওয়া যায় না।
ফ্রগফিশঃ
নামের মধ্যে ফ্রগ শব্দ থাকলেও এরা মোটেও ব্যাঙ অথবা ব্যাঙের বংশ প্রজাতির সাথে মিল নেই।কিন্তু এদের কাজ এবং বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় এরা প্রকৃত পক্ষে ফ্রগ এবং ফিশের কম্বিনেশন।এদের শরীরের বিভিন্ন রকম বড় চুলের উপস্থিতি দেখতে পাওয়া যায়।এজন্য এদের Hairy Frogfish বলা যায়।
এগুলা অনেকটা হেয়ার ব্রাশের মত দেখতে।এরা সহজেই যে কোন জায়গায় ছদ্মবেশ ধারন করতে পারে এবং আশেপাশে থাকা পরিবেশের সাথে নিজেদের রঙ পরিবর্তন করে থাকে।অদ্ভুতস্ব প্রানীদের মধ্যে এরা একটু বিশ্রী প্রকৃতির।
পরিশেষে, অদ্ভুতসব প্রানীদের সম্পর্কে অনেক কিছু জানা গেল।প্রানীগুলো অনেকটাই অপরিচিত এবং অজানা প্রকৃতির।এমন সব রহস্যময় প্রানীদের সম্পর্কে জানার জন্য আমাদের সাথেই থাকুন এবং আপনাদের মূল্যবান মন্তব্য আমাদের সাথেই শেয়ার করুন।ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।