জীবনে একবার হলেও রোমাঞ্চকর জায়গায় ভ্রমনে যাওয়া দরকার। কেননা জঙ্গল, গ্লেসিয়ার, রেইন ফরেস্ট ইত্যাদি অঞ্চলে অসাধারন প্রাণীদের দেখা পাওয়া যায়। আমরা স্নো লেপার্ড, গরিলা, কিউট পেঙ্গুইনদের কথা বলছি। এ রকম রোমাঞ্চকর বন্য পরিবেশ সম্পর্কে এবং প্রাণীদের বিচিত্র তথ্য নিচে তুলে ধরা হলঃ
উগান্ডার গরিলাঃ
মানুষের সাথে গরিলার অনেক মিল রয়েছে প্রানির বিবর্তনের দিক থেকে। মানুষের সাথে গরিলার ৯৭.৭ % মিল রয়েছে। যা অনেক রোমাঞ্চকর তথ্য। এটি বিশেষজ্ঞরা উগান্ডার বিউন্ডি ন্যাশনাল পার্কে লক্ষ্য করেছে। মানুষের জন্য এই প্রাণীটি ক্ষতিকর নয়। এরা কলা, পেয়ারা, আপেল সহ আরও অন্যান্য ফল খেয়ে থাকে। তবে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন বনে যেসব গরিলা বাস করে তারা ঐ অঞ্চলের ১০০ এর বেশি ধরনের ফল খেয়ে থাকে।
অ্যাণ্টার্কটিকার পেঙ্গুইনঃ
“পেঙ্গুইন অফ মাদাগাস্কার” সিনেমার অ্যাণ্টার্কটিকা অঞ্চলের পেঙ্গুইন এর প্রেমে পরে থাকেন এবং স্ব-চক্ষে পেঙ্গুইনকে দেখতে চান তাহলে আপনাকে অ্যাণ্টার্কটিকার গ্লেসিয়ার এর দুর্গম অঞ্চলে চার রাতের সফর এর জন্য তৈরি হতে হবে। গ্লেসিয়ার অঞ্চল হওয়ায় সম্রাট পেঙ্গুইন এর মেমোরি ক্যাপচার করতে হলে অবশ্যই ভালমানের ক্যামেরা সঙ্গে আনতে হবে । এই রোমাঞ্চকর প্রাণী গ্লেসিয়ারের নিচে ঠান্ডা পানির মধ্যে ২০০০ ফিট পর্যন্ত যেতে পারে এবং তারা তাদের শিকার ধরে এনে ডিনার করে। পেঙ্গুইন সম্পর্কে আরও জানতে ক্লিক করুন
হাতির পিঠে রাইডিংঃ
আমরা সচরাচর যে সব প্রাণীর পিঠে চড়তে পছন্দ করি সেগুলো অনেকটা দলবদ্ধ হয়ে থাকে যা অনেকটা নিরীহ প্রকৃতির এবং বন্ধু-সুলভ। কিন্তু দক্ষিন আফ্রিকার ক্যাম্প জাবুলিনি নামক হাতিগুলোর জিম্বাবুয়ের দাঙ্গায় রক্ষা পাওয়া প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম। ঐ অঞ্চলে থাকা অবস্থায় যে কেউ অনায়সে হাতির পিঠে চড়তে পারবে এবং হাতিকে খাওয়াতে পারবে। টুরিস্টদের জন্য যা রোমাঞ্চকর হয়। হাতি সম্পর্কে আরও জানতে ক্লিক করুন
মেরুর সাদা ভাল্লুকঃ
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেলে মানুষ এবং বন্য প্রাণীর মধ্যে যে সম্পর্ক তা ট্রাভেলারদের দ্বারা অনেক ভালভাবে ফুটিয়ে তুলেছে। বরফ এবং ভাল্লুক উভয়ই সাদা হওয়ায় এদের সহজে পৃথক করা যায় না। এসব জায়গায় মানুষদের সার্ভাইভ করা অনেক কস্টসাধ্য। কিন্তু বর্তমানে মেরু অঞ্চলের ভাল্লুকদের সম্পর্কে অনেক বেশি তথ্য এবং তাদের জীবন-যাপন কী রকম তা বুঝার উপায় রয়েছে।
মঙ্গোলিয়ার চিতাবাঘঃ
শীতকালে অ্যাটলাই পর্বতে আশে-পাশের অঞ্চল বরফ দ্বারা আবৃত হয়ে পড়ে। এ অঞ্চল চিতাবাঘদের নিজস্ব এলাকা ধরা হয়। ৭৩০০ প্রজাতির চিতাবাঘদের মধ্যে মাত্র ১০০০প্রজাতির স্নো লেপার্ড শুধু মঙ্গোলিয়ায় বাস করে। এদের দেখতে পর্যাটকরা স্কাই ডাইভিং করে থাকে উক্ত এলাকায়। এই স্কাই ডাইভিং অনেক রোমাঞ্চকর।
আইসল্যান্ডে হর্স রাইডিংঃ
আইসল্যান্ডের ঘোড়াগুলোর ঘাড় এবং লেজের চুলের জন্য অনেক সুন্দর লাগে। নবম শতাব্দীর শুরুর দিকে আইসল্যান্ডের উৎপত্তি হয়। সে সময় থেকে এরা নিজেদের আকর্ষনীয় করে তুলতে নিজেদের ধাপে ধাপে উন্নত করে তুলছে। আইসল্যান্ডে ভ্রমনে গেলে যে কেউ ঘোড়ার পিঠে চড়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবে। আইসল্যান্ডে এমন অনেক জলপ্রপাত রয়েছে যেখানে ঘোড়ায় চড়ে যাওয়া যায়। এসব জায়গা টুরিস্টদের জন্য আকর্ষনীয়। পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর ১০ পজাতির ঘোড়া সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন
কোস্টারিকার শ্লথঃ
কোস্টারিকার শ্লথ অনেকটা নিরীহ প্রকৃতির। স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে এরা সবচেয়ে আদুরে প্রাণী। শ্লথের জমজ বাচ্চাগুলো যখন খেলাধুলা করে দেখে মনে হয় তারা জঙ্গলে ওয়ার্ক-আউট করছে। এদের আবার রেইন ফরেষ্ট অঞ্চলেও দেখতে পাওয়া যায়।
আলাস্কার তিমিঃ
সমুদ্র পথে ভ্রমণে বের হলে জাহাজ হতে সী- লায়ন এবং ঈগল দেখা যায়। অনেকটা ভ্রমনের যেন নিত্য সঙ্গী। এদের মত তিমিও একই ভাবে সামুদ্রিক যাত্রায় নিত্য সঙ্গীর মধ্যে পড়ে। গ্রীষ্মকালে সমুদ্র ভ্রমনে গেলে এদের যে কেউ অবশ্যই দেখতে পারবে। জুন, জুলাই এবং আগস্ট মাসে এরা হাওয়াই দ্বিপের দিকে রওনা হয়। সেখানে তারা তাদের বংশ বৃদ্ধি করে।
থাইল্যান্ডের হাতিঃ
“প্রানিদের অভয়ারান্য” হিসাবে বিবেচিত কিছু জায়গা আছে থাইল্যান্ডে। এসব জায়গায় মানুষ এবং প্রাণী অনায়সে একত্রে চলাচল করতে পারে। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই টুরিস্ট এবং সাধারন লোকজনের ভিড় হওয়া যাবে না। এটা অনেকটা “সামার ক্যাম্পের” মত। যেখানে আপনি সবকিছু করতে পারবেন। প্রয়োজনে হাতি এবং তার বাচ্চাদের খাওয়াতে পারবেন এবং তাদের সাথে জলপ্রপাত এবং নদীতে গোসল করতে পারবেন।
পরিশেষে, প্রাণীদের সম্পর্কে রোমাঞ্চকর তথ্যের শেষ নেই। বিভিন্ন প্রাণী বিভিন্ন রকম আচরণ করে থাকে। আপনি যদি কোন প্রাণীর অদ্ভুত আচরণ জেনে থাকেন তাহলে কমেণ্ট বক্সের মাধ্যমে শেয়ার করতে ভুলবেন না। পশুপাখি সম্পর্কে বিচিত্র সব তথ্য জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।