You are currently viewing পানির নিচে সাঁতার কাটাতে কাটতে কি হাটা যায়?

পানির নিচে সাঁতার কাটাতে কাটতে কি হাটা যায়?

সাধারন পানিতে কিংবা পানির নিচে জলজ প্রানী সমূহই চলাফেরা করে থাকে। জলজ প্রানীদের পানিতেই বসবাস বিধায় এরা পানির নিচে অনায়সেই থাকতে পারে। চিন্তা করে দেখুনতো আকাশে উড়ন্ত পাখি যদি পানির নিচে চলতে বলা হয় কিংবা ব্যবস্থা করা হয় পাখি কি পানির নিচে উড়তে পারবে? আবশ্যই না। কারন পাখির পানির নিচে অক্সিজেন নিতে সমস্যা হবে এই কারনে পাখিটি মারা যাবে। মন্তব্য তখন এমন হতে পারে অক্সিজেনের অভাবে পানিতে ডুবে পাখির মৃত্যু।

আবার স্থলচর প্রানীদের যদি আপনি পানিতে কিংবা সমুদ্রের তলদেশে রাখা হয় কিংবা থাকার ব্যবস্থা করা হয় তাহলে আপনাকে অবশ্যই হয় সাঁতার জানতে হবে নতুবা অক্সিজেন সিলিন্ডার সহ ডুবুরীদের মত পানির নিচে ঘুরে বেড়াতে হবে। এভাবে চললে আপনার কোন সমস্যায় হবে না। এই বিষয়টি গেল শুধুমাত্র মানুষের ক্ষেত্রে। এক তথ্যের জরিপে এই প্লানেটে ৩২৬ মিলিয়ন কিউবিক মাইল পানি বা জলাশয় আছে। এই কারনে এই পৃথিবীর ৭১% পানি।

অন্যান্য স্থলচর প্রানীদের ক্ষেত্রে যেসব প্রানী সাঁতার কাটতে পারে তারা পানির নিচে সার্ভাইভ করতে পারে। কিন্তু কছু প্রানীআছে যারা একদম সাঁতার কাটতেই পারে না। বরং পানিতে  পড়ে গেলে এদের অন্য কিছুর সহযোগিতায় বেঁচে ফিরতে হয়। এত কিছুর পরেও বেঁচে থাকার লড়াইয়ে সব প্রানীই বেঁচে আছে সৃষ্টিকর্তায় ইচ্ছায়। সুইমিংপুলে সুইমিং করেনি অথবা করতে দেখিনি এমন লোক খুজে পাওয়া মুশকিল। সুইমিং পুলে পানি বেশী থাকলে নিচের ফ্লোর পর্যন্ত পা পৌছে না। বরং পানিতে ভেসে থাকা লাগে। একই ভাবে যদি পানি কম হয় তাহলে আপনি অনায়সেই পানির মধ্যে দাড়িয়ে থাকতে পারে। আজকে আমরা সেই সব প্রানী সম্পর্কে জানব যার পানির নিচে সাঁতার কিংবা হাটতে পারে।

রয়েল বেঙ্গল টাইগারঃ

এরা বাংলাদেশের জাতীয় পশু এবং সুন্দরবনে এদের দেখতে পাওয়া যায়। সারা বিশ্বে বিভিন্ন জায়গায় এই প্রজাতির  বাঘ দেখা গেলেও বাস্তবে ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট ( mangrove forest ) সুন্দরবনই একমাত্র এদের উৎপত্তিস্থল। তবে বাঘ পানি অত্যান্ত পছন্দ করে। তারা শিকার করার পূর্বে পানির নিচে ডুব দিয়ে যায়। এরা দক্ষ  সাঁতারুও বটে। সাঁতার কাটার কারনে এদের পেশী যথেষ্ট শক্তিশালী হয়ে থাকে এবং ঘন্টায় ১৮ মাইল গতিতে সাঁতার কাটতে পারে এবং নয় মাইল দূরত্ব অতিক্রম করে থাকে। সুন্দরবন অঞ্চলে নদীতে এরা সাঁতার কাটে থাকে। এবং নদী পার হয়ে থাকে।

রয়েল বেঙ্গল টাইগার
ছবিঃ সাঁতারু রয়েল বেঙ্গল টাইগারের ছবি

চিতাবাঘঃ

এরা পৃথিবীর দ্রুতগামী প্রানীদের মধ্যে অন্যতম। পৃথিবীর দ্রুতগামী প্রানীদের টপ স্পিড ঘন্টায় ৭০ মাইল । এরাও অত্যান্ত দক্ষ সাঁতারু বটে। এদের চর্বিহীন শরীর হালকা ওজনের কারনে এবং পায়ের শক্তিশালী মাংসপেশীর কারনে পানির ভিতরে দ্রুতগতিতে সাঁতার কাটতে পারে। শিকার ধরার সময় যদি দৌড়াতে গিয়ে শিকার পানির মধ্য দিয়ে দৌড়ায়ে চলে যায় তখন চিতাবাঘও পানির মধ্যে ভালভাবে দৌড়ায়ে থাকে। মধ্যপ্রাচ্যের ধনকুবের চিতাবাঘ এবং রয়েল বেঙ্গল টাইগার কে পোষা প্রানী হিসেবে নিজেদের বাড়িতে রাখে। তাদের বাসার নিজস্ব সুইমিংপুলে  কখনও তারা বাঘদের সাথেও সুইমিং করে থাকে।

দ্রুতগামী প্রানী চিতাবাঘ
ছবিঃ সাঁতারু চিতাবাঘ

শুকরঃ

শুকর যেমন কাদা পছন্দ করে তেমনি পানিও পছন্দ করে থাকে। এরা প্রত্যেকেই দক্ষ সাঁতারু এবং কাদার ভিতর খেলা ধুলা করার পর এরা পরিষ্কার হওয়ার জন্য পানিতে সাঁতার কাটা পছন্দ করে। এরা অত্যান্ত উচ্ছল প্রকৃতির প্রানী এবং পানিতে ভেসে চলে ফিরতে সহযোগিতা করে। এমনটি হয় শুধুমাত্র এদের শরীরের চর্বির কারনে। এরা এত ভাল সাঁতার কাটতে পারার পিছনে কারন হল এদের ফুসফুসের শ্বাস-প্রশ্বাস ফাংশনালিটি। এরা এত বেশি সাঁতার পছন্দ করে থাকে এই কারনে এরা সহজে ঘামে যায় না।

পানির নিচে সাঁতার কাটতে
ছবিঃ বাহামা দ্বীপে শুকর

ইগুয়ানাঃ

এরা বর্নচোরা প্রানীদের মধ্যে অন্যতম। কেননা এরা নিজদের শরীরের বর্ন সহজেই পরিবর্তন করতে পারে এবং নিজেদের প্রকৃতির সাথে মিলিয়ে নিতে পারে। এই কারনে এদের বহুরুপী প্রানী বলা হয়। এরা সাঁতার কাটার জন্য নিজেদের হাত এবং পা ব্যবহার করে থাকে। এছাড়াও এদের শরীরের বিশাল বড় একটা লেজ আছে যা প্রোপেলার হিসেবে কাজ করে থাকে। এই প্রোপেলার ইগুয়ানা দ্রুত সাঁতার কাটতে  সহযোগিতা করে থাকে।

সমুদ্রের তলদেশের ছবি
ছবিঃ হাঁস পালন

ক্যাঙ্গারুঃ

অষ্ট্রেলিয়ার জাতীয় প্রানী ক্যাঙ্গারু এবং এরা লাফিয়ে বেড়ায় বেশি। এদের  পেটে থলে থাকে। এই থলের মধ্যে বাচ্চা থাকে যা তাদের সবসময় ক্যারি করতে হয়। এরা দ্রুতগতিতে লাফানোর কারনে অল্প সময়ে বেশি দুরত্ব অতিক্রম করে থাকে। এরা তখনই সাঁতার কাটার জন্য পানিতে নামে যখন কোন শিকার তাদের পিছনে দৌড়াইতে থাকে এবং তাদের পানিতে নামতে বাধ্য করে।

ক্যাঙ্গারু
ছবিঃ সমুদ্র সৈকতে ক্যাঙ্গারু

পরিশেষে, প্রানীদের পানির নিচে সাঁতার কাটাতে এবং হাটতে পারা অস্বাভাবিক নয়। বরং আজকাল মানুষ নিজদের অনেক কিছুই করতে সক্ষম হচ্ছে। কিছুদিন আগেই এক দেশে পানির নিচে রেস্টুরেণ্ট করেছে সেখানে মানুষ অনায়সে যেতে পারে। মানুষ যখন দুর অন্তরীক্ষে যেতে পারে তেমনি সাগরের গভীর তলদেশেও যেতে পারে। অন্যান্য আরও প্রানী আছে যাদের এমন ধরনের বৈশিষ্ট্য আছে। কিন্তু একই আর্টিকেলে তা তুলে ধরা সম্ভব নয়। লেখাটি পড়ে কেমন লাগল তা জানাবেন এবং অবশ্যই আপনি আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে লেখাটি শেয়ার করবেন।

Facebook Comments

YappoBD

YappoBD-হলো poshupakhi.com এর একমাত্র স্বত্তাধীকারি। এই ওয়েবসাইটের সকল প্রকার কন্টেন্ট ইয়াপ্পোবিডি কর্তৃপক্ষ দ্বারা লিখিত, পরিমার্জিত এবং এটি ইয়াপ্পোবিডি এর অঙ্গসংস্থান।