You are currently viewing শিয়াল এর হাত থেকে কিভাবে নিজেদের বাড়িকে রক্ষা করা যায়

শিয়াল এর হাত থেকে কিভাবে নিজেদের বাড়িকে রক্ষা করা যায়

শিয়াল চালাক প্রানী গুলোর মধ্যে অন্যতম। অন্য যে কোন প্রানিদের চেয়ে এদের সবচেয়ে ধূর্ত প্রানী বলা হয়। প্রানীদের মধ্যে মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত বা সৃষ্টির সেরা জীব। সৃষ্টির সেরা জীব হওয়ার কারনে মানুষের বুদ্ধিই সবচেয়ে বেশি উন্নত প্রকৃতির এবং অন্য প্রানীদের তেমন বুদ্ধি নেই। কেননা প্রানীভেদে মস্তিষ্কের আকার এবং গঠন ভিন্ন হয়ে থাকে। এই কারনে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতাও কম বেশি হয়। অন্যান্য আরও যেসব প্রানী আছে তাদের তুলনায় শিয়ালের বুদ্ধি বেশি। এই কারনে শিয়ালকে চালাক প্রানি বলা হয়

শিয়ালের গল্প
ছবিঃ জঙ্গলের মধ্যে শিয়াল

শিয়ালকে সব সময় একই জায়গায় দেখতে পাওয়া যায় না। বাড়ির আশে পাশে বন জঙ্গলে এদের দেখা মিলে। আপনার বাড়ির পাশে যদি ঝোপ ঝাঁড় থাকে এবং সেখানে শিয়াল থাকার সম্ভবনা বেশি। তাই বলে শহরে শিয়াল এর দেখা মিলবে না। কারন শহরের ব্যস্ত নগর জীবনে এবং এত গাড়ীর ভীড়ে শিয়াল টিকে থাকতে পারবে না। যে কোন সময় যে কোন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। গ্রাম অঞ্চলে বেশী শিয়ালের দেখা মিলে। এ কারনে বড় কোন জায়গা জুড়ে যদি বাগান কিংবা ঝোপ-ঝাড় থাকে সেখানে দিয়ে জমির মধ্যে দিয়ে দ্রুত তারা চলে যেতে পারে। তবে শহর অঞ্চলে শিয়ালের চেয়ে বেজি বেশি দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু বেজির শরীরে দুর্গন্ধ থাকে অনেক বেশি পরিমানে। এই দুর্গন্ধ থাকার কারনে যে দিক দিয়ে এরা যায় সে দিক দিয়ে এক প্রকার গন্ধ রয়েই যায়।

কুকুর বিলাই এর মত দেখতেঃ

এদের আকার আকৃতি এবং চলাফেরা দেখতে কুকুর বিড়াল এর মতই দেখতে। এদের উচ্চতা এবং কুকুরের উচ্চতা প্রায় কাছাকাছি। বিড়াল রাতের বেলা অনেক ভাল ভাবে দেখতে পারে। এদের চোখে বিশেষ রকম ভাবে তৈরি। একই ভাবে শিয়ালের চোখও বিড়ালের মত রাতের বেলা পরিষ্কার ভাবে দেখতে পারে। রাতের বেলায় শিয়াল মুরগি চুরি করে এবং খাদ্যের খোজে বের হয় এই কারনে শিয়ালকে নিশাচর প্রানী বলা হয়ে থাকে। এছাড়াও বিড়ালের যেমন পায়ের নখ আছে তেমনি ধারলো নখ শিয়ালেরও আরও। আবার বাহ্যিকভাবে এরা দেখতে যেমন কুকুরের মত এই কারনে শিয়ালের সাথে কুকুর বিড়াল ( বিলাই ) এর মিল আছে।

শিয়াল এর আন্ডারগ্রাউন্ডে আস্তানাঃ

এরা তার পরিবার নিয়ে আন্ডার গ্রাউন্ডে গর্তের ভিতর তার ফ্যামিলি সহ বাস করে। স্ত্রী প্রজাতির শিয়াল তার বাচ্চা সহ গর্তের মধ্যে থাকে। এদের বাচ্চা সর্বোচ্চ ১১ টি নিয়ে থাকে এবং মা শিয়াল তাদের নিয়ে গর্তে নিরাপদে বাস করে। স্ত্রী এবং পুরুষ প্রজাতির শিয়াল তার বাচ্চাদের সাথে ৭ মাস পর্যন্ত একসাথে বাস করে থাকে। খেকশিয়াল খাবার সংগ্রহ করে আনে এবং স্ত্রী প্রজাতির শিয়াল বাচ্চাদের সহ গর্তের ভিতর থাকে।

শিয়ালের ডাক
ছবিঃ নিজ আস্তনায় শিয়াল

শিয়ালের আস্তনা আন্ডারগ্রাউন্ড বা গর্তের মধ্যে হওয়ার কারনে এর শত্রুদের হাত থেকে যেন সে এবং তার ফ্যামিলি রক্ষা পায়। তার শত্রুদের তালিকায় আছে নেকড়ে বাঘ, ভাল্লুক, মানুষ এবং হায়েনা। এদের শ্রবনশক্তি  অন্য প্রানীদের চেয়ে অনেক বেশী এবং ৪০ ইয়ার্ড দূর থেকেই এরা যে কোন কিছু শুনতে পায়। এটি লাল প্রজাতির শিয়ালের ক্ষেত্রে এমনটি হয়। এই কারনে এরা অনেক দুরে অবস্থিত এদের খাদ্য তালিকায় যে সব প্রানী বা শিকারী প্রানী থাকে তাদের আইডেন্টিফাই করতে পারে। এই পৃথিবীর মাঝখান বরাবর চুম্বক আছে যা ভূ- চৌম্বক নামে পরিচিত। এই ধূর্ত প্রানীটি শিকার ধরতে গিয়ে পৃথিবীর ভূ-চৌম্বকত্ব বা চুম্বক ব্যবহার করে থাকে। আমাদের দেশে খেক শিয়াল এমন কাজ করে থাকে। অন্য দেশের শিয়াল এর চেয়ে বাংলাদেশের শিয়াল এর ছবি দেখলেই এদের মধ্যে পার্থক্য দেখতে পাওয়া যায়।

খেকশিয়াল এর হাত থেকে কিভাবে নিজেদের বাড়িকে রক্ষা করবেন?

খেকশিয়াল যতটা পারা যায় নিজেদের বাসা বাড়ি থেকে দুরে রাখা উচিত। কিন্তু নিচের বিষয়গুলো খেয়াল রাখলে আপনি নিজে পরিবারের সদস্য সহ নিরাপদে থাকবে।

১।  খেকশিয়াল গুলোকে কখনও খাবার দিতে যাওয়া যাবে না। আমরা সাধারন আমাদের চারপাশে থাকা প্রানীদের খাবার দিয়ে থাকি। কিন্তু খেকশিয়ালদের যদি আপনি তা করেন তাহলে এর লোভ পেয়ে যাবে এবং বারবার আপনার বাড়িতে আসতে থাকবে। সহজ কথায় আপনি তাদের উৎসাহিত করছেন। তারা তাদের নিজদের খাদ্য নিজেরাই সংগ্রহ করতে পারে।

২। নিজদের পোষা প্রানী গুলোকে খাবার বাড়ির বাহিরে কিংবা ভিতরে দিন। কিন্তু সেসব পোষা প্রানী ( pet animals ) খাওয়ার পর খেকশিয়াল আসার পূর্বেই ঐ খাবার গুলো সংগ্রহ করুন। এতে করে এই চালাক প্রানী  আপনার বাড়ীর পাশে আসবে না।

৩। ময়লা আবর্জনা ফেলার জায়গা এবং ময়লার পাত্র নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে একই সাথে স্টোর রুমও পরিষ্কার করতে হবে।

৪। বাড়ির পাশে অবস্থিত ফলের গাছ হতে, ফল নিচে পড়ে থাকলে সেগুলো সংগ্রহ করতে হবে অথবা পরিষ্কার করে রাখতে হবে। একই সাথে গাছের থাকা পাখির বাসা থেকে পাখির ফিডার নিচে পড়ে থাকলে তা সরিয়ে রাখতে হবে।

৫। বাদ্যযন্ত্র কিংবা মিউজিক সিস্টেমে অথবা রেডিও চালালে খেকশিয়াল বুঝতে পারে আশে পাশে মানুষ আছে। তখন তারা সেদিকে যায় না।

পরিশেষে, শিয়াল বাসা বাড়িতে ঢুকলে গৃহপালিত পশু এর পাশাপাশি বাড়ির মানুষের জন্যও ক্ষতিকর। কারন এরা সহজেই মানুষের ক্ষতি করে থাকে। তবে হাঁস মুরগির কারনে ভীষন বিপদজনক। এমন বিপদজ্জনক অবস্থায় সকলের সেফটির জন্য হলেও আমাদের উচিত উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া। শিয়ালের ডাক শুনে যে কারও মনে ভয় ঢুকে বিশেষ করে বাচ্চাদের। এমন সাউন্ড বেশি ভাগ ক্ষেত্রে রাতের বেলায় করে থাকে। বাচ্চাদের খাওয়ানোর সময় শিয়ালের গল্প বলে ভয় দেখিয়ে খাবার খাওয়ায়।

Facebook Comments

YappoBD

YappoBD-হলো poshupakhi.com এর একমাত্র স্বত্তাধীকারি। এই ওয়েবসাইটের সকল প্রকার কন্টেন্ট ইয়াপ্পোবিডি কর্তৃপক্ষ দ্বারা লিখিত, পরিমার্জিত এবং এটি ইয়াপ্পোবিডি এর অঙ্গসংস্থান।